পোষা প্রানী সময় বুঝতে পারে:

ইন্টারনেট ডেস্ক: পোষা প্রাণীকে তো প্রচুর প্রশিক্ষণই দিয়েছেন আজ অবধি। কখনো ঘড়ি দেখা শিখিয়েছেন? বা চেষ্টা করেছেন যাতে আপনার প্রিয় কুকুর বা বিড়ালটি যেন সময় বলতে পারে? কি! পাগলাটে বা ক্ষ্যাপামি মনে হচ্ছে? কিন্তু নতুন গবেষণার খবর জানতে পারলে বিষয়টা হয়তো আপনি উড়িয়ে দিতে পারবেন না। বরং চমকে যেতে পারেন ব্যাপকভাবে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় জানা যায়, সময়ের দিকে শুধু মানুষই না খেয়াল রাখতে পারে আপনার পোষা প্রাণীটাও।

নর্থওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষকের গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে এমন তথ্য। আসলে প্রাণীদের পক্ষেও সময় বিবেচনা করা সম্ভব। সম্ভব না বলে তারাও সক্ষম বললেই কিঞ্চিৎ সত্য শোনাবে। কারণ এটা ঠিক প্রশিক্ষণলব্ধ নয়। প্রাণীদের মস্তিষ্কের ঘ্রাণসংবেদী অংশের এক নিউরন সেটের প্রভাবেই এমনটি ঘটে বলে বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন। কোনো কিছুর জন্য যখন একটি প্রাণী অপেক্ষারত অবস্থায় থাকে ঠিক তখনই তাদের নিউরনের এই বিশেষ অংশ একটি দেহঘড়ি বা বায়োলজিক্যাল ক্লক এর মতো চালু হয়ে যায়। যা এতদিন কেবল ধারণা করা হলেও বিজ্ঞানীদের কাছে সম্পূর্ণ অজানা ছিল।

গবেষক ড্যানিয়েল ডমব্যাক বলেন, “আপনার পোষা কুকুরটি কি জানে আপনি আজ তাকে খেতে দিতে গিয়ে গতকালের চেয়ে দ্বিগুণ দেরি করেছেন? এ প্রশ্নের জবাব এর আগে আমাদের কাছে ছিল না। এটা এ যাবৎ কালের সবচেয়ে বিশ্বস্ত গবেষণা যার মাধ্যমে বোঝা যায়, সব প্রাণীরই অপেক্ষা করার ব্যাপারে নিজের বুদ্ধিমত্তায় একটি স্পষ্ট ধারণা রয়েছে।”

“নেচার নিউরোসায়েন্স” ম্যাগাজিনে এ সপ্তাহেই প্রকাশিত হয় এই গবেষণার ফলাফল। গবেষণার প্রধান ছিলেন ড্যানিয়েল ডমব্যাক যিনি একজন নিউরোবায়োলজি অধ্যাপক। গবেষণা শুরুর আগে ডমব্যাক এবং তার পুরো দল প্রাণীদেহের “মেডিয়াল এনটরহিনাল কর্টেক্স” (গবফরধষ ঊহঃড়ৎযরহধষ ঈড়ৎঃবী) নিয়ে বিশেষ আলোকপাত করেন (ঊহঃড় = ওহঃবৎহধষ / অভ্যন্তরীণ এবং জযরহড় = ঘড়ংব/নাক)। এটি মস্তিষ্কের টেম্পোরাল লোবের একটি অংশ যা পুরো দেহের দিক নির্দেশনা এবং স্মৃতির সাথে জড়িত।

পুরো ব্যাপারটির জন্য একটি ইঁদুরকে ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে নেয়া হয়। এখানে ইঁদুরটিকে “ডোর স্টপ” নামের একটি ছোট্ট এবং সাদামাটা পরীক্ষার মাধ্যমে কয়েকবার পরিচালিত করা হয়। ইঁদুরটি একটি প্যাসেজ ধরে দরজার কাছে পৌঁছালে এর ঠিক ছয় সেকেন্ড পর দরজা খুলে দেয়া হয়। এবং তারপর ইঁদুরটি তার কাঙ্খিত খাবারের দিকে এগিয়ে যায়। পরপর কয়েকটি সেশনের পর একপর্যায়ে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি থেকে দরজা সরিয়ে নেয়া হয়।

কিন্তু বিস্ময়ের ব্যাপার হলো, ইঁদুর এবার ঠিক সে জায়গাতেই থেমে যায় যেখানে দরজা ছিল। এবং তারচেয়ে বড় বিস্ময় ইঁদুরটি সত্যি সত্যিই ছয় সেকেন্ড অপেক্ষায় ছিল!

গবেষণা দলের আরেক সদস্য হায়েস বলেন, “সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, ইঁদুরটির পক্ষে জানা সম্ভব না দরজাটা আদৌ খোলা কি বন্ধ। কারণ পুরোটাই ছিল অদৃশ্য। একমাত্র নিজের মস্তিষ্কের সময়ের ওপর নিয়ন্ত্রণ থেকেই সে এই কাজটি শেষ করতে সক্ষম হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *