ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহার,ভিশন ২০৩০-এর আলোকে

অনলাইন ডেস্ক:জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনী ইশতেহারের প্রাথমিক খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ঘোষিত ভিশন ২০৩০-এর আলোকেই তৈরি হচ্ছে এ ইশতেহার।একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রণীত ইশতেহারে সরকার, সংসদ, রাজনীতি, অর্থনীতি, শিক্ষা, কৃষি, পররাষ্ট্রনীতিসহ সরকারের প্রতিটি সেক্টরকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।সুশাসন, স্বচ্ছতা ও স্ব অবস্থান- এ তিন অঙ্গীকারের মধ্যে দিয়ে নবধারার রাজনীতি ও সরকার গঠনের প্রতিশ্রুতি থাকছে ইশতেহারে। থাকছে নতুন নতুন চমক ও অঙ্গীকার। ‘জনগণ এ রাষ্ট্রের মালিক’- এ ধারণা সুপ্রতিষ্ঠিত করার নির্দেশনা সংবলিত ইশতেহারে সব মত ও পথ নিয়ে বাংলাদেশকে একটি রেইনবো ন্যাশন বা রংধনু জাতিতে পরিণত করার বিস্তারিত ঘোষণা থাকবে। গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপরও। ১ সপ্তাহের মধ্যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এ ইশতেহার চূড়ান্ত হতে পারে।
সূত্র জানায়, ইশতেহার প্রণয়ন কমিটিতে রাজনীতিবিদ ছাড়াও রয়েছেন শিক্ষা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, কৃষিসহ গুরুত্বপূর্ণ খাতের বিশেষজ্ঞ। ইতিমধ্যে ‘দেশের মালিক জনগণ, ধানের শীষে ভোট দিন’; ‘দেশ বাঁচাতে মানুষ বাঁচাতে, আনবে পারিবর্তন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট’সহ তিনটি স্লোগানের খসড়া তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম স্লোগানটির পক্ষে অনেকে মত দিয়েছেন। তবে এখনও চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া শান্তি ও কল্যাণকর সংসদীয় গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ রাষ্ট্র তৈরির জন্য জাতির উদ্দেশে ৫ প্রতিশ্রুতি ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনী ইশতেহারের প্রাথমিক খসড়ায় রয়েছে। যা ইশতেহার প্রণয়ন কমিটিতে যুক্ত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী দিয়েছেন। প্রস্তাবিত প্রতিশ্রুতিগুলো নিয়ে আলোচনা চলছে। বাস্তবতা বিবেচনায় কিছুটা পরিবর্তন এলেও এসব প্রতিশ্রুতি প্রাধান্য পাবে ইশতেহারে।
এ বিষয়ে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী গণমাধ্যমকে জানান, নির্বাচনের জন্য আমাদের ইশতেহারের একটা ড্রাফট করা হয়েছে। ১ সপ্তাহের মধ্যে এটা চূড়ান্ত করা হবে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গণমাধ্যমকে জানান, বিএনপি দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি দল। নির্বাচনের জন্য ইশতেহার অবশ্যই দেয়া হবে। ইশতেহার তৈরির কাজ চলছে। শিগগিরই তা দেয়া হবে। আগামী দিনে দেশ ও জনগণের জন্য আমরা কী কী করতে চাই তা দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ভিশন ২০৩০-এ তা উল্লেখ করেছেন। ইতিমধ্যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টও ১১টি লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। সবগুলোর সমন্বয় করে ইশতেহার তৈরি করা হবে।
সূত্র জানায়, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহার প্রণয়নে যে কমিটি করা হয়েছে তাতে বিএনপি থেকে সিনিয়র সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ, গণফোরামের আওম শফিক উল্লাহ, জেএসডির শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের ইকবাল সিদ্দিকী, নাগরিক ঐক্যের ডা. জাহেদ উর রহমান রয়েছেন। আর এ কমিটির মূল দায়িত্বে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
মূলত এ কমিটি গঠনের অনেক আগেই ইশতেহার নিয়ে কাজ করছেন বিএনপির কয়েকজন সিনিয়র নেতাসহ শিক্ষা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, কৃষিসহ গুরুত্বপূর্ণ খাতের বিশেষজ্ঞরা। নেওয়া হয় সুশীল সমাজের মতামতও। তবে নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়া নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকায় ইশতেহার প্রণয়ন ধীরগতিতে এগোয়।
বিএনপি নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণার পর ইশতেহার প্রণয়নের কাজ প্রায় সম্পূর্ণ করা হয়েছে। পরামর্শ নেয়া হয়েছে লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানেরও।জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে গঠিত কমিটির কাছে বিএনপির এ খসড়া ইশতেহারই দেয়া হবে। যেখানে সংযোজন-বিয়োজন করে ফ্রন্ট নেতারা ইশতেহার চূড়ান্ত করবেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইশতেহার প্রণয়নে যুক্ত বিএনপির এক নেতা বলেন, একাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ইশতেহার দেবে। একই সঙ্গে বিএনপিও আলাদাভাবে নির্বাচনী ইশতেহার দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপির মধ্যে সমন্বয় থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *