Site icon দেশের পত্রিকা – দেশের পত্রিকা দেশের কথা বলে

করোনাভাইরাসে ৫ লাখ মানুষ আক্রান্ত, কোটি ছাড়িয়ে যাবে

অনলাইন ডেস্ক : চীনে মহামারি আকার ধারণ করা প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের উদ্ভব হয় দেশটির হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান শহর থেকে। ১ কোটি ১ লাখ জনসংখ্যার এই শহরটি বর্তমানে গোটা দুনিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন আছে। সরকারি হিসেবে এখানে আক্রান্তের সংখ্যা ৪০ হাজার এবং মারা গেছে প্রায় ৯০০ জন।

কিন্তু তাদের এই তথ্য বাস্তবের প্রতিচ্ছবি নয় বলে দাবি করেছে যুক্তরাজ্যের বিখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিন। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, উহান শহরে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাস্তবে কমপক্ষে পাঁচ লাখ হবে।

প্রতিষ্ঠানটি বলছে, মহামারী-সংক্রান্ত বিদ্যার গাণিতিক মডেলের ওপর ভিত্তি করে বলা যায়, সেই সংখ্যা আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বিশাল আকার ধারণ করতে পারে। ফলে আগামী দিনগুলোতে উহানে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা এক কোটি ছাড়িয়ে যেতে পারে।

লন্ডন স্কুলের সংক্রামক ব্যাধি মহামারী বিষয়ের সহযোগী অধ্যাপক অ্যাডাম কুচারস্কি বলেছেন, এই সংক্রমণ যখন মহামারী আকার ধারণ করলো, প্রতি ২০ জন মানুষের মধ্যে একজন নতুন করে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তবে সামনের দিনগুলোতে সংক্রমিত হওয়ার ধরণ বদলে যেতে পারে।

গবেষকরা বলছেন, নতুন এই করোনাভাইরাসের প্রাণকেন্দ্র উহানের অনেক বাসিন্দা সংক্রমিত হলেও তারা জানেন না। ফলে আগামী দিনগুলোতে উহানে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা এক কোটি ছাড়িয়ে যেতে পারে।

লন্ডন স্কুলের সংক্রামক ব্যাধি মহামারি বিষয়ের সহযোগী অধ্যাপক অ্যাডাম কুচারস্কি বলেছেন, বর্তমান প্রবণতা ধরে নিয়ে আমরা ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে শেষের দিকে উহানে কতসংখ্যক মানুষ করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন; সে ব্যাপারে একটি প্রতিবেদন তৈরিতে এখনও কাজ করছি।

তিনি বলেন, এই সংক্রমণ যখন মহামারি আকার ধারণ করলে, প্রত্যেক ২০ জন মানুষের মধ্যে একজন নতুন করে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তবে সামনের দিনগুলোতে সংক্রমিত হওয়ার ধরণ বদলে যেতে পারে বলেও সতর্ক করে দিয়েছেন লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের এই অধ্যাপক।

বিশ্বের সর্ববৃহৎ কোয়ারেন্টাইন পয়েন্ট উহান এবং ৬ কোটি মানুষের হুবেই প্রদেশের অন্যান্য শহরে এই ভাইরাসের বিস্তারের লাগাম টানতে যেসব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে সেসবের ফলাফল জানতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।

অধ্যাপক অ্যাডাম কুচারস্কি ও তার সহকর্মীরা গবেষণা সংক্রামক ব্যাধির গতিশীলতা নিয়ে কাজ করেন। তারা করোনাভাইরাস সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের অনুমানের ওপর ভিত্তি করে একটি মডেল দাঁড় করিয়েছেন।

এতে বলা হয়েছে, এই ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার পর রোগীর ইনকিউবেশন সময়কাল ৫ দশমিক ২ দিন এবং সংক্রমণ নিশ্চিত হওয়ার জন্য সময় লাগবে আরও ৬ দশমিক ১ একদিন। তারা বলছেন, করোনাভাইরাসের উৎসস্থল উহানের প্রায় ১ কোটি মানুষ প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছেন।

এই গবেষকরা তাদের গবেষণা মডেলের ওপর ভিত্তি করে বলেছেন, সেই হিসেবে উহানের প্রায় ৫ লাখ মানুষ ইতোমধ্যে সংক্রমিত হয়েছেন। যদিও রবিবার মধ্যরাতে উহান স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ বলছে, উহানে এখন পর্যন্ত ১৬ হাজার ৯০২ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।

চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন আজ সকালে বলেছে, রবিবার মধ্যরাত পর্যন্ত চীনে নতুন করে ৩ হাজার ৬২ জন করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৪০ হাজার ১৭১ জনে। এদের মধ্যে ৬ হাজার ৫০০ জনের অবস্থা গুরুতর। এছাড়া এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রাণহানি ঘটেছে এখন পর্যন্ত ৯১০ জনের।

এর আগে চীনের টেনসেন্ট নামের বৃহত্তম একটি কম্পানির তথ্যে ফাঁস হওয়া তথ্যে বলা হয়েছে, মৃত্যুর সংখ্যা ২৪ হাজার। আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় দেড় লাখ।

তবে টেনসেন্ট পরে জানায় তারা ভুলবশত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কতজন মারা গেছেন তার একটি হিসাব প্রকাশ করেছে। শনিবার প্রতিষ্ঠানটি তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এপিডেমিক সিচুয়েশন ট্যাকারে প্রথম যে তথ্য প্রকাশ করে সেখানে দেখা যায়, এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত ২৪ হাজার ৫৮৯ মানুষের প্রাণ গেছে। আর এতে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৫৪ হাজার ২৩ জন।

তবে প্রকাশের অল্প কিছু সময়ের মধ্যেই লেখাটি আপডেট করা হয়। আপডেটের পরে দেখা যায় চীনা সরকারের দেয়া সংখ্যা আর তাদের সংখ্যাই কোনো পার্থক্য নেই। তাইওয়ান নিউজের প্রতিবেদনে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

Exit mobile version