করোনাভাইরাসের আগ্রাসন থামছেই না, মৃতের সংখ্যা দুই হাজার ছাড়াল

অনলাইন ডেস্ক : করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চীনে নতুনভাবে আরো একশ ৩৬ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে সে দেশে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল দুই হাজার পাঁচজন। জানা গেছে, আজ বুধবার পর্যন্ত নতুনভাবে এক হাজার সাতশ ৪৯ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এতে করে চীনে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৭৪ হাজার একশ ৮৫ জনে ঠেকেছে।

চীনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশনের বরাত দিয়ে আজ বুধবার বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, হুবেই প্রদেশে মৃত্যুর হার বেশি। গত বছরের ডিসেম্বরের শেষের দিকে সেখানকার উহান শহরে করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয়। সেখান থেকেই ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে।

২৫ টির বেশি দেশে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়েছে; তার মধ্যে ফিলিপাইন, হংকং, জাপান, ফ্রান্স ও তাইওয়ানে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।

২৪ ঘণ্টায় নিহত এবং আক্রান্তের সংখ্যা বিবেচনা করে চীনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশনের প্রত্যাশা, শিগগিরই করোনাভাইরাস আগ্রাসন থামাবে। কারণ, এরই মধ্যে কোভিড-১৯ নামক এই ভাইরাসের চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কার হয়েছে।

চীনের উহান শহরের চিকিৎসকরা সম্প্রতি জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস থেকে সেরে ওঠা ব্যক্তিদের শরীর থেকে ব্লাড প্লাজমা নিয়ে তা আক্রান্তের শরীরে দেওয়ার পর ভালো ফল পাওয়া যাচ্ছে। প্লাজমা দেওয়ার ১২ থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই গুরুতর রোগীও উঠে দাঁড়াতে পারছে। তবে এটা কেবলই চিকিৎসা পদ্ধতি, করোনাভাইরাস প্রতিরোধী ভ্যাকসিন এখনো আবিস্কার হয়নি। ম্যালেরিয়া প্রতিরোধী ভ্যাকসিন ব্যবহার করেও ভালো ফল লাভের কথা জানিয়েছেন চীনের চিকিৎসকরা। গুরুতর অবস্থায় থাকা রোগীদের শরীরে ভ্যাকসিনটি দিয়ে কোনো ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়াই ভালো ফল পাওয়া যাচ্ছে। চিকিৎসকদের প্রত্যাশা, ম্যালেরিয়ার ওই ভ্যাকসিন পরিমার্জন-পরিবর্ধন করে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিস্কার করা যেতে পারে।

জানা গেছে, হাসপাতালের বাইরে ক্যাম্প করে যেসব স্থানে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিহ্নিতের কাজ চলছে, সেসব স্থানে মোট ৫৬ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। যা গত এক সপ্তাহের মধ্যে সবচেয়ে কম সংখ্যক।

চীন সরকার এরই মধ্যে করোনাভাইরাসের ব্যাপারে পর্যবেক্ষণের ফল প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, আক্রান্তদের মধ্যে দুই দশমিক তিন শতাংশ পুরুষ মারা যাচ্ছে এবং নারীদের মধ্যে মৃত্যুর এই হার এক দশমিক সাত শতাংশ। তবে পাঁচ শতাংশের বেশি গুরুতর অবস্থায় কখনোই পড়েনি। অন্যরা নিউমোনিয়া, সর্দি, জ্বর ও কাশিতে ভুগেছে।

এদিকে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন গতকাল মঙ্গলবার। তিনি জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস মোকাবিলার ব্যাপারে চীন দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে পেরেছে।

যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দাবি, এই ভাইরাস ঠিক কোথায় গিয়ে থামতে পারে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *