‘করোনাভাইরাস বাতাসে ভেসে যেতে পারে বহু দূর’

ন্যাশনাল ডেস্ক : চীনে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ছে করোনাভাইরাস। মোকাবিলা পদ্ধতি নিয়ে হিমসিম অবস্থায় পড়েছে চীন। ক্রমশ এর ব্যাপকতা বিস্তার লাভ করছে। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃত ও আক্রান্তের সংখ্যা। এমন পরিস্থিতিতে বলা হচ্ছে, বাতাসে ভাসমান জলকণার সঙ্গে করোনাভাইরাস মিশতে পারে। তারপর ভাইরাস মিশ্রিত এই এরোসল ভেসে যেতে পারে বহু দূর। সেই সঙ্গে অনেক ব্যক্তির শরীরেরও ছড়িয়ে পড়তে পারে।

প্রকৃতপক্ষে বৈজ্ঞানিকভাবে এরোসল বলতে বোঝানো হয় কঠিন বা তরল পদার্থের এমন সব কণা যেগুলো খালি চোখে আমরা সাধারণত দেখতে পাই না এবং কণাগুলো নিয়মিতভাবেই বায়ুমণ্ডলে ভ্রমণ করে ধীর গতিতে আমাদের পৃথিবীপৃষ্ঠে পড়ছে। তাই বোঝা যায়, করোনাভাইরাস চোখকে ফাঁকি দিয়ে এরোসল তৈরি করে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এই কারণে করোনাভাইরাসের মোকাবিলা ও প্রতিরোধ করতে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

গতকাল বুধবার রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা পরিকল্পনার সর্বশেষ সংস্করণে এই তথ্য জানায় চীনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশন অ্যান্ড ন্যাশনাল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব ট্রেডিশনাল চাইনিজ মেডিসিন। সুস্থ হওয়া রোগীদের সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে ১৪ দিন ধরে বাড়িতে থাকার এবং অন্য মানুষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ এড়ানোর পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার চীনের পিকিং ইউনিভার্সিটি ফার্স্ট হাসপাতালের সংক্রামক রোগ বিভাগের পরিচালক ডা. ওয়াং গুয়াইকিয়াং বলেন, এরোসল ট্রান্সমিশন হয় শর্তসাপেক্ষে। পরিকল্পনার সর্বশেষ সংস্করণে বলা হয়, শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে জলকণা শরীরের মধ্যে প্রবেশ করে সংক্রমণ বাধায় করোনাভাইরাস। তবে সংস্পর্শের মাধ্যমেও এই ভাইরাস ছড়ায়। চীনের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ইনফ্লুয়েঞ্জার মতোই ছড়িয়ে পড়ে কারোভাইরাস। এর আগে যেমনটা ভাবা হয়েছিল তার থেকেও সহজেই ছড়িয়ে পড়ে করোনাভাইরাস।

চীনের এক গবেষণায় বিজ্ঞানীরা দেখতে পান, এক ব্যক্তির শরীরের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার কোনো লক্ষণ নেই। তবে তার শরীরের পরীক্ষ-নিরীক্ষা করে দেখা যায়, তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। বিজ্ঞানীরা জানান, যার শরীরের করোনাভাইরাস আছে কিন্তু কোনো লক্ষণ নেই; তিনিও অন্যের শরীরে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে দিতে পারেন।

চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান শহরে করোনাভাইরাস এখন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এই ভাইরাস সংক্রমণে এখন পর্যন্ত দুই হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যুর খবর মিলেছে। মারণ ক্ষমতার দিক দিয়ে করোনাভাইরাস সার্স ভাইরাসকে ছাড়িয়ে গেছে।সূত্র: সিনহুয়ানেট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *