

অনলাইন ডেস্ক: ভারতের ভেজাল মদ পানে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৭২ জনে দাঁড়িয়েছে। মদে বিষাক্ত মিথানল থাকায় দেশটির উত্তর প্রদেশ ও উত্তরাখন্ডে গত তিনদিনে এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন।
আজ রোববার এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর প্রদেশ এবং প্রতিবেশি রাজ্য উত্তরাখণ্ডে এই ঘটনাগুলো ঘটার পর তা নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। উত্তর প্রদেশের সাহারানপুরে মৃত্যু হয়েছে ৩৬ জনের ও কুশিনগরে মারা গেছে আটজন। উত্তরাখণ্ডে মৃত্যুর খবর শোনা যায় ২৮ জনের। এখনও প্রায় ৩০ জন আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি রয়েছে হাসপাতালে।
জেষ্ঠ্য পুলিশ কর্মকর্তা অশোক কুমার জানিয়েছেন, ভুক্তভোগীরা গত বৃহস্পতিবার রাতে দুটি স্থানীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মদ্যপান করেন। লাশের ময়নাতদন্ত ও প্রাথমিক ফরেনসিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, মদে রাসায়নিক দ্রব্য মিথানল ছিল।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে। সাহারানপুরের ঘটনা নিয়ে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের অভিযোগ, সাহারানপুরের গ্রামের কয়েকজন প্রতিবেশি রাজ্য উত্তরাখণ্ডে গিয়েছিল একটি অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নিতে। সেখান থেকেই তারা চোলাই মদ নিয়ে আসে নিজেদের গ্রামে। কুশিনগরের ক্ষেত্রে আবার প্রশাসনের বক্তব্য চোলাই মদ এসেছে বিহার থেকে। যেখানে আদতে মদ নিষিদ্ধ।
সাহারানপুরের জেলাশাসক এ কে পান্ডে বলেন, ‘খুব তাড়াতাড়ি চিকিৎসা শুরু করা গেলে মৃত্যুসংখ্যা অনেকটাই কমতে পারতো। আরেকটি কথা হল, পিন্টু নামে একজন ৩০টি পাউচ বিক্রি করেছিল। ওই পাউচগুলো থেকে একটা বা দুটি পাউচ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। ওই পাউচগুলো থেকে যারাই মদ খেয়েছে তারা হয় হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে, নয় ইতিমধ্যেই মারা গেছেন।’
এ ঘটনায় সন্দেহভাজন আট বেআইনি মদ ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে প্রাদেশিক সরকার ১২ পুলিশ সদস্যসহ ৩৫ কর্মকর্তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে।
উত্তর প্রদেশে ২০১১ সাল থেকে এ পর্যন্ত ভেজাল মদপানে ১৭৫ জনের বেশি লোকের মৃত্যু হয়েছে। অবৈধ চোলাই মদ খেয়ে ভারতে প্রায়ই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। নিম্নবিত্ত পরিবারগুলো নিবন্ধিত ব্র্যান্ডের মদ কিনতে না পেরে চোলাই মদ পান করে থাকে। এ সকল পানীয়তে কীটনাশকের মতো রাসায়নিক ব্যবহার করা হয় বলেই মৃত্যুর ঘটনাগুলো ঘটে।