অনলাইন ডেস্ক : চীনের চিকিৎসা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত কয়েকবছর ধরে জাপানে নতুন ধরনের ফ্লুর চিকিৎসায় ব্যবহৃত হতো এমন একটি ওষুধে করোনাভাইরাসের রোগীরাও সুস্থ হচ্ছেন।
বুধবার জাপানের গণমাধ্যম এই খবর দিয়েছে বলে জানিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।
চীনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ঝ্যাঙ জিনমিন বলেন, ‘ফ্যাভিপিরাভির নামের জাপানি ওই ওষুধ চীনের উহান ও শেনঝেন এর করোনা রোগীদের ওপর প্রয়োগ করার পর বেশ ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া গেছে। ওই ক্লিনিকাল ট্রায়ালে ৩৪০ জন রোগী অংশ নিয়েছিলো।’
ঝ্যাঙ জিনমিন আরো বলেন, ‘ওষুধটি খুবই নিরাপদ এবং করোনার চিকিৎসার ক্ষেত্রে স্পষ্টতই কার্যকর বলেও প্রমাণিত হয়েছে।’
শেনঝেন প্রদেশে যে করোনারোগীদের ওপর ওষুধটি প্রয়োগ করা হয়েছিলো তারা মাত্র চারদিনের মধ্যেই ভাইরাসমুক্ত হয়েছেন। আর যাদের ওপর এই ওষুধ প্রয়োগ করা হয়নি তাদের সুস্থ হতে সময় লেগেছে ১১দিন। এছাড়া ওই রোগীদের এক্সরে করে দেখা গেছে ওষুধটির প্রয়োগে তাদের ফুসফুসের অবস্থার ৯১% উন্নতি হয়েছে। অন্যদের ক্ষেত্রে উন্নতি হয়েছে ৬০%।
ফুজি ফিল্ম এর একটি সংস্থা টয়মা কেমিক্যাল এই ওষুধটি আবিষ্কার করেছিলো ২০১৪ সালে।
জাপানের ডাক্তাররাও করোনারোগীদের চিকিৎসায় এই ওষুধ ব্যবহার শুরু করেছেন।
তবে জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে যাদের অবস্থা বেশি খারাপ তাদের বেলায় ওষুধটি অতটা কাজ করছে না। ওই সূত্র জানায়, ‘আমরা ৭০ থেকে ৮০ জন করোনারোগীকে এই ওষুধ দিয়েছিলাম। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। কেননা তাদের দেহে ভাইরাসটি অনেক বেশি ছড়িয়ে পড়েছিলো। ভাইরাসের বংশবিস্তার হয়ে গিয়েছিলো অনেক বেশি।’
একই সীমাবদ্ধতা দেখা গেছে, করোনার চিকিৎসায় ব্যবহৃত এইচআইভির ‘লোপিনাভির’ এবং ‘রিটোনাভির’ ওষুধ দুটোর ক্ষেত্রেও।
২০১৬ সালে জাপানের সরকার এই ‘ফ্যাভিপিরাভির বা অ্যাভিগান’ নামের ওষুধটি ইবোলা ভাইরাসের মহামারি মোকাবিলায় আফ্রিকার গায়েনাকে দিয়েছিলো জরুরি মানবিক সহায়তা হিসেবে।
আগামী মে মাসের দিকে হয়তো এই ওষুধটি করোনারোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হতে পারে।
ওদিকে এই খবরের পর ওষুধটির আবিষ্কারক প্রতিষ্ঠান ফুজিফিল্মের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান টয়ামা কেমিক্যালের শেয়ারের দাম বেড়ে গেছে।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান