অনলাইন ডেস্ক : মারাত্মক ছোঁয়াচে কোভিড-১৯ ভাইরাসটি নিছক সাধারণ কোন ফ্লু ভাইরাস নয়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, জিনের গঠন বদলে প্রতিনিয়ত এই ভাইরাস নিজের চরিত্রই বদলে ফেলছে এবং আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে। এর কোন কার্যকর প্রতিষেধক এখনও আবিষ্কৃত হয়নি। মারণ এই ভাইরাসের উৎপত্তি কিভাবে হয়েছে সেটা নিয়ে নানা তথ্য ছড়িয়েছে বিশ্বজুড়ে। কয়েকদিন আগেই বলা হয়েছিল জৈব অস্ত্র বানাতেই উহানের ল্যাবে কৃত্রিমভাবে এই ভাইরাস তৈরি করেছে চীন। আবার নাসার একজন বিজ্ঞানী দাবি করেছিলেন মহাকাশ থেকে ধুমকেতুর মাধ্যমে পৃথিবীতে এসেছে করোনাভাইরাস। তবে এইসব জল্পনায় জল ঢেলেছে নতুন এক গবেষণা।
করোনাভাইরাস নিয়ে নতুন এই গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়েছে নেচার মেডিসিন পত্রিকায়। নোভেল করোনা ভাইরাস সার্স-কো ভি-২ বা কোভিড-১৯ ও তার সম্পর্কীত ভাইরাসগুলির জিনের গঠন সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন গবেষকরা। এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন আমেরিকার স্ক্রিপস রিসার্চ ইনস্টিটিউট সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীরা।
নোভেল করোনা ভাইরাস কৃত্রিমভাবে তৈরির হয়েছে বলে গবেষণায় কোনও প্রমাণ মেলেনি। গবেষণাপত্রটির অন্যতম লেখক স্ক্রিপস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী ক্রিস্টিয়ান অ্যান্ডারসেন বলেন, ‘পরিচিত করোনা ভাইরাসের স্ট্রেইনগুলির তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে আমরা নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, সার্স-কো ভি-২ বা কোভিড-১৯ স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় সৃষ্টি হয়েছে।’
গবেষকদের বক্তব্য, চীনা কর্তৃপক্ষ খুব দ্রুত এই মহামারী শনাক্ত করেছেন। একজনের থেকে অন্যজনের শরীরে সংক্রমণের জেরেই কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা বাড়ছে। হাতে আসা এই সব তথ্য বিশ্লেষণ করেই সার্স-কো ভি-২ ভাইরাসের উৎপত্তি কীভাবে, তা জানতে পেরেছেন গবেষকদের এই দলটি। বিজ্ঞানীদের দাবি, স্বাভাবিক বিবর্তনের ফলেই এগুলি তৈরি হয়েছে। কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়নি।
উল্লেখ্য, চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস ক্রমেই মহামারির আকার নিচ্ছে। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃত ও আক্রান্তের সংখ্যা। আক্রান্ত হতে বাদ নেই ইউরোপ, আমেরিকাও। বিমানযাত্রীদের মাধ্যমে ছড়াচ্ছে ভাইরাস। আতঙ্ক ছড়িয়েছে সুদূর অস্ট্রেলিয়া থেকে দক্ষিণ আফ্রিকাতেও। এই ঘটনায় ‘রেসিডেন্ট ইভিল’ সিনেমার ভয়ানক প্রতিফলনই দেখতে পাচ্ছেন অনেকে।
ইজরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ সন্দেহ করেছে, রহস্যময় ‘নোভেল করোনা ভাইরাস’ চাষ করেছে চীনের গোপন সামরিক গবেষণাগার। দ্বিতীয়, মার্কিন পত্রিকা ওয়াশিংটন পোস্ট মোসাদের এই দাবিকেই সমর্থন করেছে। তবে নতুন গবেষণার ফল প্রকাশ্যে আসায় এবার সেই জল্পনা ও বিতর্ক কিছুটা থামবে বলেই মনে করা হচ্ছে।