অনলাইন ডেস্ক: দিল্লিতে ক্রিকেট আর বিদঘুটে ঘটনা, যত দিন যাচ্ছে যেন সমার্থক হয়ে যাচ্ছে। বছর দেড়েক আগে দিল্লিতেই রঞ্জি ট্রফি ম্যাচ চলাকালীন এক ব্যক্তি গাড়ি চালিয়ে মাঠে ঢুকে পড়েছিলেন! পিচে উঠে চক্কর দিতে শুরু করেছিলেন। তীব্র আতঙ্কে ক্রিকেটাররা সে দিন প্রশ্ন তুলেছিলেন নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে। কে জানত, বছর দেড়েকের মধ্যে দিল্লি ক্রিকেটার-কোচদের নিরাপত্তা সত্যি সত্যি চরম সঙ্কটে পড়ে যাবে?
দিল্লির সিনিয়র নির্বাচক কমিটি প্রধান তথা ভারতের প্রাক্তন পেসার অমিত ভান্ডারিকে সোমবার মাঠেই বেধড়ক পিটিয়ে চলে গেল গুণ্ডারা! শুধু তাই নয়, নীতীশ রানা-ধ্রুব শোরের মতো দিল্লি রঞ্জি ক্রিকেটাররা প্রতিবাদ করতে গেলে তাদেরকেও হুমকি দেওয়া হল, চুপচাপ সরে না গেলে গুলি চালানো হবে!পুরো ঘটনাটা কী? নয়াদিল্লির সেন্ট স্টিফেনসের মাঠে এ দিন আসন্ন সৈয়দ মুস্তাক আলি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের জন্য প্রস্তুতি চলছিল। প্রাথমিক টিমটা ট্রায়াল ম্যাচ খেলছিল নিজেদের মধ্যে। দিল্লির নির্বাচক প্রধান অমিত ভান্ডারিও ছিলেন সেখানে। আচমকাই অনুজ দেড়া নামের দিল্লির এক অনূর্ধ্ব ২৩ ক্রিকেটার এসে নির্বাচক প্রধানের কাছে উষ্মা দেখিয়ে জানতে চান, কোন যুক্তিতে তাকে অনূর্ধ্ব ২৩ টিম থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে? জুনিয়র ক্রিকেটারের ঔদ্ধত্য দেখে মেজাজ হারান অমিত। কিন্তু, অনুজ নামক সেই ক্রিকেটার তাতে তো চুপ থাকেননি, উলটো হুমকি দেন তিনি কিছুক্ষণের মধ্যেই শোধ নেবেন! এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই পনেরো জনের মতো ছেলে নিয়ে ফের মাঠে উপস্থিত হন অনুজ। প্রত্যেকের হাতেই লাঠিসোঁটা থেকে হকিস্টিক সবই ছিল। পুরো হিন্দি সিনেমার কায়দায় নির্বাচক প্রধানকে পেটানোর তোড়জোড় শুরু হয়ে যায়। অমিত ভান্ডারির অবস্থা দেখে তাকে বাঁচাতে ছুটে আসেন নীতিশ রানারা। শোনা গেল, তারাও পাল্টা ব্যাট, উইকেট নিয়ে দল বেধে দাঁড়িয়ে যান! কিন্তু অনুজের সঙ্গে থাকা গুণ্ডাবাহিনী থেকে শাসানো হয়, ক্রিকেটাররা সরে না গেলে তাদের কপালে প্রচণ্ড দুঃখ আছে। প্রয়োজনে গুলি চালানোর ব্যাপারে দু’বার ভাবা হবে না!
প্রাণভয়ে ভীত ক্রিকেটাররা এরপর পিছু হঠে যান এবং গুণ্ডাবাহিনী প্রবল উদ্যমে তাড়া করে অমিতকে। জানা গেছে, তার হাঁটু ও মাথায় হকি স্টিক দিয়ে প্রচণ্ড জোরে আঘাত করা হয়। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মাথায় চারটি সেলাই করতে হয় তার। পুরো ঘটনায় প্রবল কেঁপে উঠেছে দিল্লির ক্রিকেটমহল। প্রাক্তন ভারত তথা দিল্লি ক্রিকেটার গৌতম গম্ভীর অপরাধী ক্রিকেটারের আজীবনের নির্বাসন চেয়েছেন।
‘ভাবতেই পারছি না, দেশের রাজধানীতে এমন কাণ্ড ঘটেছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে দেখব, যাতে এটা ধামাচাপা না পড়ে। যে ক্রিকেটার এই কাণ্ড ঘটিয়েছে, গুণ্ডা নিয়ে এসেছে তার আজীবন নির্বাসন হওয়া দরকার,’ টুইট করেছেন গম্ভীর।
পুরো ঘটনার তদন্তে নেমে পড়েছে দিল্লি পুলিশও। দিল্লির ডেপুটি কমিশনার অব পুলিশ (উত্তর) নুপুর প্রসাদ এরই মধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন, “আহতের সঙ্গে কথা বলে অভিযোগ জমা করা হবে।” দিল্লি ক্রিকেট সংস্থা (ডিডিসিএ) থেকেও এফআইআর করা হচ্ছে অভিযুক্ত ক্রিকেটার অনুজের বিরুদ্ধে। এতে তার গ্রেফতার হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে