‘নতুন সাফল্য, কাশির শব্দেই শনাক্ত হবে করোনাভাইরাস’

অনলাইন ডেস্ক : প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে গোটা বিশ্ব যখন বেসামাল, তখন এই ভাইরাস শনাক্তে নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার হল।

গবেষকেরা সম্প্রতি সহজে বহনযোগ্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাযুক্ত যন্ত্র উদ্ভাবন করেছেন, যা কাশির শব্দ ও ভিড়ের আকার রিয়েল টাইমে শনাক্ত করতে সক্ষম।

ওই যন্ত্রে ধারণ করা শব্দ বিশ্লেষণ করে সরাসরি করোনাভাইরাস বা ফ্লুর মতো রোগ পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ম্যাসাচুসেটস আমহার্স্টের গবেষকেরা ওই যন্ত্রের নাম দিয়েছেন ‘ফ্লুসেন্স’।

গবেষকেরা বলছেন, আধুনিক প্রযুক্তির কম্পিউটিং প্ল্যাটফর্ম স্বাস্থ্য নজরদারির ক্ষেত্রেও প্রয়োজনীয় টুল হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে মৌসুমি ফ্লু বা অন্যান্য ভাইরাসজনিত শ্বাসযন্ত্রের সমস্যার পূর্বাভাস দিতে পারে। এর মাধ্যমে কোভিড-১৯ মহামারি বা সার্সের মতো ভাইরাস রোগের পূর্বাভাসও দেয়া যায়।

ভাইরাসজনিত মহামারীতে জনস্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণের সরাসরি তথ্য পাওয়া এসব মডেল জীবন রক্ষাকারী হিসেবে কাজে লাগতে পারে বলে মনে করছেন তারা। এই তথ্য উৎসগুলো ফ্লু ভ্যাকসিন প্রচারের সময় নির্ধারণ, সম্ভাব্য ভ্রমণের বিধিনিষেধ, চিকিৎসা সরবরাহের বরাদ্দ নির্ধারণে সহায়তা করতে পারে।

গবেষণাসংক্রান্ত নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে ‘প্রসিডিংস অব দ্য এসিএম অন ইন্টারঅ্যাকটিভ, মোবাইল, ওয়্যারেবল অ্যান্ড ইউবিকশাস টেকনোলজিস’ সাময়িকীতে।

গবেষণা প্রবন্ধের সহযোগী লেখক তৌহিদুর রহমান জানান, নতুন উদ্ভাবিত পদ্ধতিতে ফ্লুর ট্রেন্ডের নিখুঁত পূর্বাভাস দেয়া যায়। ফ্লুসেন্স প্ল্যাটফর্মে সাশ্রয়ী দামের মাইক্রোফোন অ্যারে ও থার্মাল ইমেজিং ডেটা রাস্পবেরি পাই ও নিউরাল কম্পিউটিং ইঞ্জিনের মাধ্যমে প্রক্রিয়াজাত করা হয়। এতে অবশ্য কোনও ব্যক্তি শনাক্তকরণ তথ্য শনাক্ত করা হয় না।

গবেষকেরা প্রথমে পরীক্ষাগারে একটি কাশির মডেল তৈরি করেন। এরপর তারা অ্যালগরিদমকে প্রশিক্ষণ দিয়ে মানুষের থার্মাল ছবি তৈরির প্রক্রিয়া শেখান। এরপর তা গোনার জন্য বলেন।

গবেষকেরা তাদের তৈরি ফ্লুসেন্স ডিভাইসটি অভিধানের আকারের আয়ত ক্ষেত্রাকার বাক্সে রেখে তা চারটি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের অপেক্ষাগারে বসান। ২০১৮ সালে ডিসেম্বর থেকে গত বছরের জুলাই মাস পর্যন্ত ফ্লুসেন্স সাড়ে তিন লাখ থার্মাল ইমেজ বিশ্লেষণ করে ও ২ কোটি ১০ লাখ অডিও নমুনা বিশ্লেষণ করে।

গবেষকেরা দেখেন, তাদের তৈরি যন্ত্রটি নিখুঁতভাবে দৈনন্দিন অসুস্থ হওয়ার হার পূর্বাভাস দিতে পারছে।
তথ্য: পিটিআই

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *