কুষ্টিয়া প্রতিবেদক : করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে কুষ্টিয়ায় বিদেশ ফেরতদের শনাক্ত করে তাদের বাড়ির সামনে লাল নিশানা ঝুলিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বাড়ির ফটকের সামনে তাদের দেশে আসার তারিখও লিখে স্টিকার সেঁটে দেওয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে প্রবাসীর হাতে সিল লাগানো হয়েছে।
গত শনিবার (২১ মার্চ) সকাল থেকে রোববার (২৩ মার্চ) মধ্যরাত পর্যন্ত ৭১৩ জন প্রবাসী বাড়ি শনাক্ত করেছে পুলিশ।
জানা গেছে, জেলার ছয়টি উপজেলায় গত ১ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত ১ এক হাজার ১৩৯ জন প্রবাসী দেশে ফিরেছেন। এদের মধ্যে ৭ মার্চ থেকে ১৯ মার্চ পর্যন্ত আসা ৭১৩ জনকে শনাক্ত করে তাদেরকে বাড়িতে সঙ্গরোধে থাকার নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ বলছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাঠানো তালিকা জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় প্রত্যেক থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) স্থানীয় চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের নিয়ে কাজ করেছেন। সকাল থেকে গভির রাত পর্যন্ত প্রত্যেকের বাড়ি শনাক্ত করা হয়। পুলিশ সূত্র জানায়, জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রবাসী এসেছে দৌলতপুর উপজেলায় ৩৯৮ জন ও ভেড়ামারা উপজেলায় ২৭০ জন। এর মধ্যে ইতালি, সিঙ্গাপুর, দুবাই, সৌদি আরব ও দক্ষিণ কোরিয়া প্রবাসী বেশি। তারা বাড়ি আসার পর সঙ্গরোধ আইন না মেনে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াতে থাকেন। তালিকা পাবার পর পুলিশ মাঠে জোরালো অভিযান চালায়। গ্রামে গ্রামে গিয়ে বাড়ি চিহ্নিত করা হয়। চিহ্নিত বাড়ির প্রবাসীকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। ওই প্রবাসীর প্রতিবেশীদের মাধ্যমে তাদের গতিবিধি নজরে রাখা হচ্ছে। এছাড়া এলাকাবাসীদের নজরে রাখার জন্য বলা হয়েছে। কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাত বলেন, ‘প্রবাসীদের কড়া নজরে রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, তাদের বাড়ির সামনে লাল নিশানা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাড়ির ফটকের সামনে প্রবাসীর দেশে আসার তারিখও লিখে স্টিকার সেটে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া প্রবাসীর হাতে সিল লাগানো হয়েছে। তারা যাতে ঘরের বাইরে ১৪ দিন বের না হতে পারে, সে ব্যাপারে পুলিশ সজাগ রয়েছে।
এদিকে কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে পৌরসভার তেবাড়ীয়া গ্রামের ৭নং ওয়ার্ডের বাহারাইন প্রবাসী মোজাহার হাজী একাধিকবার হোম কোয়ারান্টাইন না মানায় বাড়ি লক ডাউন করা হয়েছে।
জানা যায়, গত ১৬/০৩/২০২০ তারিখে তিনি বাংলাদেশে এসে হোম কোয়ারান্টাইনে না থেকে স্বাভাবিক ভাবে জনগণের মাঝে চলাফেরা করেন। সংবাদ পেয়ে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজিবুল ইসলাম খান ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় ২০ হাজার টাকা অর্থ দন্ড প্রদান করেন কিন্তু মোজাহার হাজী সরকারী নির্দেশনা অমান্য করে পুনরায় হোম কোয়ারান্টাইন ভঙ্গ করায় গতকাল বিকেলে তার বাড়ি লক ডাউন করে দুজন আনছার সদস্যকে বাড়ির সামনে মোতায়েন করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘তবে এখন পর্যন্ত সবাই সুস্থ আছে। সিভিল সার্জনের সঙ্গে যোগাযোগ করে ১৪ দিন হয়ে গেলে পর্যায়ক্রমে তাদের স্বাভাবিক জীবনে চলার অনুমতি দেওয়া হবে।