করোনাভাইরাস : কাকে মরতে দেবেন, আর কাকে বাঁচাবেন সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে ডাক্তারদের

অনলাইন ডেস্ক : ইতালির পর করোনার মৃত্যুপুরী এখন স্পেন। দেশটিতে বাড়িতে বাড়িতে পড়ে আছে লাশ। পরিস্থিতি এতটাই নাজুক যে, চিকিৎসকদের সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে কাকে মরতে দেবেন আর কাকে বাঁচাবেন! মাদ্রিদে এক নাম করা হাসপাতালের নাম লা পাজ। সেখানে কোভিড-১৯ রোগীর ভিড়ে জায়গা নেই ওয়েটিং রুমেও।

হাসপাতালের ডাক্তার ড্যানিয়েল বার্নাবিউ সম্প্রতি জানিয়েছেন তাঁর অভিজ্ঞতার কথা। রোগীর এতই ভিড় যে কোনোমতে একজনের ডেথ সার্টিফিকেটে সই করেই তিনি ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন আর একজন রোগীকে নিয়ে। কারণ তার ভয়ানক শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে গিয়েছে ততক্ষণে।

গত কয়েকদিনে স্পেনে করোনাভাইরাসে এত মানুষ মারা গেছে যে, সকলের সৎকার করা সম্ভব হয়নি। মর্গেও জায়গা নেই। আইস রিংকে অনেক দেহ রাখা আছে। হাসপাতালের ইনিটেনসিভ কেয়ারে চালু হয়েছে নতুন নিয়ম। বয়স্ক রোগীদের চেয়ে কমবয়সীদের চিকিৎসার ওপরেই গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কারণ তাদের বাঁচার সম্ভাবনা বেশি। বার্নবিউ জানিয়েছেন, অনেক বয়স্ক লোককে চিকিৎসা করলে হয়তো বেঁচে যেতেন। কিন্তু রোগীর সংখ্যা অনেকে। তাদের মধ্যে অনেকেই মরণাপন্ন।

কোভিড ১৯ এর এপিসেন্টার এখন হয়ে উঠেছে ইউরোপ। তার মধ্যে স্পেনের অবস্থা দিন দিন হয়ে উঠছে আরও খারাপ। সেদেশের জনসংখ্যা ৪ কোটি ৭০ লক্ষ। কিন্তু সেখানে চীনের চেয়েও দ্রুত বাড়ছে মৃত্যুহার। করোনায় স্পেনে ২৪ ঘন্টায় সর্বোচ্চ ৭৬৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটিত করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা এখন ৪ হাজার ৮৫৮ জন। শুক্রবার স্পেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় এই তথ্য ঘোষণা করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যাও ৫৬ হাজার১৮৮ থেকে বেড়ে ৬৪ হাজার ৫৯ জন হয়ে গেছে।

মাত্র তিন সপ্তাহ আগে প্রধানমন্ত্রী পেড্রো স্যানচেজ মানতেই চাননি যে, তাঁর দেশে করোনাভাইরাস বড় বিপদের কারণ হতে চলেছে। গত ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবসের উৎসবে অংশ নেওয়ার জন্য তিনি জনগণের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন। সেই উৎসবে ১ লক্ষ ২০ হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। সম্প্রতি তিনিই বলেছেন, সেই গৃহযুদ্ধের পরে দেশে এত কঠিন সময় আর কখনও আসেনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *