অনলাইন ডেস্ক: অভিনয়শিল্পীদের সংগঠিত করা, একে অপরের সাহায্য সহযোগিতায় এগিয়ে আসা সর্বোপরি অভিনয় শিল্পের মাধ্যমে দেশের কল্যাণে কাজ করার উদ্দেশ্য নিয়ে আবারও অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে অভিনয় শিল্পী সংঘের নির্বাচন।
দ্বিবার্ষিক এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে চলতি বছরের মার্চে। এর আগে ২০১৭ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি দেশীয় টেলিভিশন অভিনয়শিল্পীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছিল এই নির্বাচন। ১৫ ফেব্রুয়ারি হয়েছিল শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান। এতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন শহীদুল আলম সাচ্চু ও আহসান হাবিব নাসিম। চলতি মাসে দুই বছর মেয়াদি ২১ সদস্যের এই কমিটির মেয়াদ শেষ হবে।
আসন্ন নির্বাচন সম্পর্কে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব নাসিম বলেন, সাংগঠনিকভাবে নতুন কমিটি নির্বাচনের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। ২২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে আমাদের বার্ষিক সাধারণ সভা। সকাল নয়টায় আমাদের কার্যক্রম শুরু হবে। প্রতিবেদন দাখিল ও আলোচনা করা হবে। সাধারণ সভার উদ্বোধন করবেন তথ্যমন্ত্রী। সাধারণ সভায় নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে। নির্বাচন কমিশন একটা তারিখ নির্ধারণ করবেন। ৪৫ দিনের মধ্যে নির্বাচন হবে। ওই দিন বিকেলে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার কথা রয়েছে।
চলতি কমিটির সফল কিছু কার্যক্রমের কথা উল্লেখ করে সাধারণ সম্পাদক জানান, সংগঠনের নিবন্ধন করা হয়েছে। অভিনয়শিল্পীদের সংকটগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো সরকারের কাছে উপস্থাপন করেছি। সেবামূলক কাজ হিসেবে ২০ জন অভিনয়শিল্পীকে ৫ হাজার টাকা করে প্রতি মাসে একলক্ষ টাকার বাজার সহায়তা দিচ্ছি। আর্থিকভাবে অসচ্ছল শিল্পীদের ইদ খরচ সহায়তা প্রদান বাবদ দুই ইদে দুই লাখ টাকা সহায়তা দিয়েছি। চিকিৎসা সহায়তা বাবদ এ পর্যন্ত ৬ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া একজন শিল্পীর পরিবারকে ২ লাখ টাকা এবং তার ছেলের একটি চাকরি দেয়া হয়েছে। অভিনয়শিল্পীর পেশার স্বীকৃতি দেয়ার জন্য তথ্য মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে আবেদন করেছি।
অভিনয়শিল্পীদের কর্মপরিধি ছোট হয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে আহসান হাবিব নাসিম জানান, এখন নায়ক-নায়িকা নির্ভর নাটক হচ্ছে। পরিবারের অন্যান্য সদস্যর চরিত্রগুলো নাটক থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। সামাজিক চরিত্রগুলোও নাটক থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। এতে করে নাটকের গল্পের পরিসর ছোট হয়ে যাচ্ছে। আমরা এটাকে চিহ্নিত করে দেখেছি আমাদের অধিকাংশ অভিনয়শিল্পীদের কাজের পরিধি কমে যাচ্ছে। কেননা আমাদের ৯০০ শিল্পী থাকলে তার মধ্যে মাত্র ৫০ জন মূল ভূমিকায় অভিনয় করে। বাকিদের হাতে কাজ থাকছে না। এজন্য আমরা বিজ্ঞানসম্মত আধুনিক টিআরপি পদ্ধতি চালু করার প্রস্তাব করেছি। এছাড়া পে চ্যানেল করারও প্রস্তাব করছি যাতে করে দর্শকের টাকা সরাসরি যেন চ্যানেল পায়। সকলের স্বার্থ যেন অক্ষুণ্ণ থাকে এজন্য আমরা এ ধরণের কিছু প্রস্তাব সরকারের কাছে দিয়েছি।
এছাড়া কিছু হাসপাতালের সঙ্গে আমরা চুক্তি করেছি। নির্দিষ্ট অঞ্চলে বসবাসরত শিল্পীদের দ্রুত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে আমাদের এই বিশেষ চুক্তি। যোগ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, অসচ্ছল শিল্পীদের সন্তানদের পড়ালেখার ব্যবস্থা করতে আমরা একটি পরিকল্পনা করছি। ইতোমধ্যে অ্যাক্টরস ওয়েলফেয়ার ফাণ্ডের নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে, অর্থ সংগ্রহ চলছে। এর মাধ্যমে অসুস্থ ও মৃত শিল্পীর পরিবারকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করা হবে।
শিল্পীদের ডাটাবেজ তৈরি করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের একটি অফিস নেয়া হয়েছে। নিজেদের কার্যক্রম প্রচারের জন্য অনলাইন প্রচারমাধ্যম আছে। শিল্পীদের তালিকা করেছি। নাটক ও শিল্পীদের নিরাপত্তার স্বার্থে আমাদের বেশ কিছু চলমান কাজ রয়েছে।
তবে নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে পরবর্তী কমিটি হিসেবে যারা আসবেন তারাও শিল্পীদের কল্যাণমূলক এই পথ অনুসরণ করে কাজ করবেন বলে জানান তিনি।