অনলাইন ডেস্ক : প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস নিয়ে গুজব ও সরকারবিরোধী বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগে ২৫টি ফেসবুক আইডি, পেজ বন্ধ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এ ছাড়া এসব কর্মকাণ্ডে জড়িত আরো ৭০টি ফেসবুক আইডি, পেজ ও ইউটিউব চ্যানেল শনাক্ত করা হয়েছে বলে ঢাকা মহানগর পুলিশের সাইবার ইউনিট সূত্রে জানা গেছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট এবং সিআইডি ও র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সবগুলো সংস্থা গুজব বন্ধে কাজ করছে।
সিটিটিসির সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, গুজব বন্ধে বিভাগটি সাইবার পেট্রোলিং করছে। গুজব ছড়ানোর অভিযোগে এ পর্যন্ত ২৫টি ফেসবুক আইডি ও পেজ বন্ধসহ ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বিভাগটির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, করোনাভাইরাসকে (কোভিড-১৯) কেন্দ্র করে অনেকে নানাভাবে গুজব ছড়াচ্ছে। এতর সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। তাদের শনাক্তে আমরা প্রথম থেকেই কাজ করছিলাম। এরই অংশ হিসেবে অভিযুক্ত আইডিগুলো বন্ধ করা হয়েছে। গুজব বন্ধে সাইবার পেট্রোলিং অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরো বলেন, অনেকেই না বুঝে এগুলো শেয়ার করে গুজবটাকে বিস্তৃত করছেন। আমরা সবাইকে কোনো পোস্ট নিশ্চিত না হয়ে শেয়ার করা থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করছি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি করোনাভাইরাস নিয়ে ৪টি ইস্যুতে গুজব সৃষ্টি করা আরো ৭০টি ফেসবুক আইডি, পেজ ও ইউটিউব চ্যানেল শনাক্ত করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে অধিকাংশই ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ও পেজ। এসব অ্যাকাউন্ট ও পেজ থেকে দক্ষিণ এশিয়ার একটি রাষ্ট্রের মুসলিমবিরোধী কার্যক্রমসহ বাংলাদেশের সরকার ও সরকারের নানা কাজের ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অধিকাংশই অশিক্ষিত ও অল্পশিক্ষিত ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের বিভ্রান্ত করার জন্য ও সরকারবিরোধী ক্ষোভ সৃষ্টির জন্য গুজবগুলো ছড়ানো হচ্ছে। এসব কাজের জন্য সারা দেশ থেকে মোট ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া গুজবের পোস্ট শেয়ার করে বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্য ৭ জনকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, না বুঝে এগুলো শেয়ার করেন তারা। তাই এই ৭ জনকে পরবর্তীতে এসব না করার মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী গতকাল রবিবার গুজব প্রসঙ্গে বলেন, করোনাকে কেন্দ্র করে পৃথিবীব্যাপী ফেক নিউজ ও গুজব ভয়ঙ্কর রূপে দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। আমরা গুজব ও ফেক নিউজের বিরুদ্ধে প্রচারণা ও ব্যবস্থা নিচ্ছি। গোয়েন্দা সংস্থা, র্যাব ও পুলিশের সাইবার টিম কাজ করে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে কয়েকজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং গুজব ছড়ানো আইডি বন্ধ করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, এ ধরনের অস্বাভাবিক বা গুজবের পোস্ট পাওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রথমে এগুলোর সত্যতা খোঁজে। সত্যতা না পেলে পোস্টদাতাকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের কাজ শুরু করেন। পাশাপাশি ফেসবুক-ইউটিউব কর্তৃপক্ষকে সেসব আইডির বিরুদ্ধে রিপোর্ট করে এগুলো বন্ধের অনুরোধ জানান।
পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-মিডিয়া) মো. সোহেল রানা বলেন, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমের বিশাল জগত মনিটরিং সহজ নয়। তবুও আমাদের চেষ্টা অব্যাহত আছে। গুজব রটনাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মানুষকেও সচেতন করছি গুজবে কান দিতে।