অনলাইন ডেস্ক : করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে বিপর্যস্ত গোটা বিশ্ব। এর বিষাক্ত ছোবলে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে বিশ্বের ২১০টি দেশ ও অঞ্চল।
প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে বিশ্বব্যাপী সংক্রমিত হয়েছে ২৩ লাখ ৩১ হাজার ৯৫৬ জন। এতে মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ৬০ হাজার ৭৬৭ জন। প্রতি মুহূর্তে বাড়ছে এই সংখ্যা।
এখনও পর্যন্ত এই ভাইরাসের কোনও প্রতিষেধক আবিষ্কার করতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। ফলে চিকিৎসার ক্ষেত্রে এর নেই কোনও সুনির্দিষ্ট ওষুধ।
তবে বিপজ্জনক এই ভাইরাস বেঁচে থাকতে বেশকিছু খাবার বর্জনের পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসা বিজ্ঞানী ও পুষ্টিবিদরা। তারা সতর্ক করে বলছেন, অতিরিক্ত মিষ্টিজাতীয় ও প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়া যাবে না এবং ধূমপানও ছেড়ে দিতে হবে। তাদের মতে, এসব খাবারে শারীরিক জটিলতা বাড়বে, যা কভিড-১৯ এ মৃত্যুর কারণ হতে পারে।
ইউরোপিয়ান সায়েন্টিস্ট ম্যাগাজিনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাজ্যে হাসপাতালগুলোর আইসিইউতে প্রথম যে কয়েকহাজার রোগী ভর্তি হয় তাদের মধ্যে তিনভাগেরই ছিল অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা। এছাড়া যাদের টাইপ-টু ডায়বেটিস ও বিপাকীয় সিন্ড্রম রয়েছে তারা করোনায় আক্রান্ত হলে মৃত্যুর ঝুঁকি ১০ গুণ বেড়ে যায়। এ গবেষণাটি পরিচালনা করেন যুক্তরাজ্যের এনএইচএস এর কার্ডিওলোজিস্ট আসিম মালহোত্রা।
তিনি বলেন, ‘পরিসংখ্যান থেকে এটি স্পষ্ট যে কভিড-১৯ এ মৃত্যুর একটি শীর্ষ কারণ বিপাকীয় সমস্যা। আমরা যে কথাগুলো আগে থেকে বলে আসছি তা হচ্ছে- টাইপ-২ ডায়বেটিস, হৃদরোগ এবং উচ্চ রক্তচাপের রোগীরা সুস্থ বয়স্কদের চেয়ে অনেক বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। কিন্তু যে বিষয়টি বলা হচ্ছে না, তা হচ্ছে- কম পুষ্টিসম্পন্ন খাবার এবং স্থুলতাও কভিড-১৯ এ মৃত্যুর অন্যতম কারণ।’
তিনি বলেন, ‘আপনি প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়া বন্ধ করে দিন, দেখবেন কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এর সুফল পাচ্ছেন। আপনার দেহে করোনাভাইরাসের ঝুঁকি কমে আসবে।’
এইউটির সিনিয়র লেকচারার এবং পুষ্টিবিদ ক্যারিন জিন বলেন, ‘মালহোত্রা যা বলেছেন একেবারে সঠিক বলেছেন। এগুলো সবার মেনে চলা উচিত।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যদি করোনাভাইরাস থেকে বেঁচে থাকতে চাই তাহলে আমাদের শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে হবে এবং বিপাকীয় সুস্থতা নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য অবশ্যই অপক্রিয়াজাত খাবার আমাদের খেতে হবে। এতে দেহে সুগারের মাত্রা স্বাভাবিক থাকবে। এর পাশাপাশি পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে, নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে, মানসিক চিন্তা কমাতে হবে এবং পরিবারের সঙ্গে সুন্দর সময় কাটাতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘উদ্বিগ্ন থাকার সময় অনেকেই খাবারের ঝামেলা এড়াতে প্যাকেটজাত খাবার খায়। অথচ এ মূহুর্তে এটি একটি নিকৃষ্ট পছন্দ। প্রক্রিয়াজাত খাবারে খুব একটা পুষ্টি নেই অথচ ওজন বাড়ায় ও স্থূলতা তৈরি করে। যা করোনায় মৃত্যুর কারণ হয়।’
এর পাশাপাশি ধূমপান বর্জনেরও পরামর্শ দিচ্ছেন ডাক্তাররা। তাদের মতে, ধূমপান ফুসফুসকে আগে থেকেই দূর্বল করে দেয়, ফলে কভিড-১৯ এ যে কেউ সহজে মারা যায়। সূত্র: নিউজহাব