ইসলামী ডেস্ক : দীর্ঘ ১১ মাস পর আবারও অফুরন্ত রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের বার্তা নিয়ে হাজির হয়েছে মহিমান্বিত মাস রমজানুল মোবারক। মহান আল্লাহ এই মাসকে অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ করেছেন। বছরের অন্য মাসগুলোয় আমলে যে ত্রুটি-বিচ্যুতি হয় তা পুষিয়ে নিতে পারে মুমিন। কেননা রমজানে আল্লাহ প্রতিটি কাজের প্রতিদান বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি এই মাসে একটি নফল কাজ করবে, সে যেন অন্য মাসের একটি ফরজ আদায় করল। আর যে ব্যক্তি এ মাসে একটি ফরজ আদায় করবে, সে যেন অন্য মাসের ৭০টি ফরজ সম্পাদন করল।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস ১৯৬৫)
শুধু তা-ই নয়, রোজার মাধ্যমে মহান আল্লাহ তাঁর প্রিয় বান্দাদের পাপমুক্ত করেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে নেকির প্রত্যাশায় রমজানে রোজা পালন করবে, তার অতীতের গুনাহগুলো মাফ করে দেওয়া হয়।’ (বুখারি, হাদিস ৩৮)
এ ছাড়া রোজার পুরস্কার মহান আল্লাহ নিজ হাতে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন, যা রমজান মাস ও রোজার মর্যাদা প্রমাণ করে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তাআলা বলেন, আদমসন্তানের প্রত্যেক নেক কাজ তারই। (কেননা নেক কাজের প্রতিদান তাকে দিয়ে দেওয়া হয়)। কিন্তু সাওম (রোজা) একমাত্র আমারই জন্য এবং আমিই নিজে তার প্রতিদান দেব। আর সাওম ঢালস্বরূপ। তোমাদের মধ্যে কেউ যখন সাওম পালন করে, তখন সে যেন অশ্লীল বাক্য ব্যবহার না করে এবং উচ্চৈঃস্বরে কথা না বলে ও কারো ওপর রাগান্বিত না হয়। যদি কেউ তাকে গালি দেয় বা গায়ে পড়ে ঝগড়া করতে আসে, তখন সে যেন বলে, ‘আমি সাওম পালন করছি।’ ওই সত্তার শপথ! যার পবিত্র হাতে মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবন, আল্লাহ তাআলার কাছে সাওম পালনকারীর (ক্ষুধাজনিত কারণে নির্গত) মুখের দুর্গন্ধ কস্তুরির সুগন্ধি থেকেও অধিক পছন্দনীয়। (সুনানে নাসায়ি, হাদিস ২২১৭)
প্রিয় নবী (সা.) আরো বলেছেন, ‘জান্নাতের একটি দরজাকে বলা হয় রাইয়ান। কিয়ামতের দিন এই দরজা দিয়ে শুধু রোজাদাররা প্রবেশ করবে। তারা ছাড়া এই দরজা দিয়ে অন্য কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। বলা হবে, রোজাদাররা কোথায়? তখন রোজাদাররা দাঁড়াবে। তাদের প্রবেশ করতে আদেশ দেওয়া হবে। তারা প্রবেশ করার পর দরজাটি বন্ধ করে দেওয়া হবে। এরপর এই দরজা দিয়ে অন্য কেউ প্রবেশ করতে পারবে না।’ (বুখারি, হাদিস ১৮৯৬)
তাই সবার উচিত রমজানের পবিত্রতা রক্ষা করা। রমজানের প্রতিটি মুহূর্ত মহান আল্লাহর ইবাদতে কাটানোর চেষ্টা করা। নামাজের প্রতি অধিক গুরুত্ব দেওয়া, জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায়ের চেষ্টা করা। বেশি বেশি কোরআন তিলাওয়াত করা, প্রতিদিন তাহাজ্জুদ পড়ে মহান আল্লাহর দরবারে তাওবা করা, আশ্রয় চাওয়া। যাতে তিনি দয়া করে চলমান সংকট ও মহামারি থেকে গোটা বিশ্ববাসীকে উদ্ধার করেন। আমিন।