অনলাইন ডেস্ক : করোনাভাইরাস রোগীদের শরীরে কিভাবে কাজ করে সেই ‘মেকানিজম’ ধরে ফেলেছেন বলে দাবি করেছেন একজন ইতালিয়ান বিজ্ঞানী। বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, কভিড -১৯ রোগীদের শরীরে হিমোগ্লোবিনকে ক্ষতিগ্রস্থ করে, রক্তে অক্সিজেন পরিবহনের জন্য লোহিত রক্তকণিকার ক্ষমতাকে ক্ষুণ্ন করে এবং ফুসফুসকে ক্ষতিগ্রস্থ করে ফলে তীব্র শ্বাসকষ্টের লক্ষণ দেখা দেয়।
তার এই গবেষণা যদি সঠিক হয়, তবে এটি করোনভাইরাস সম্পর্কে অনেক অজানা প্রশ্নের সমাধান করবে। যেমন- পুরুষদের বৃহত্তর দুর্বলতা – বিশেষত পুরুষ ডায়াবেটিস রোগীদের নভেল করোনাভাইরাসে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার কারণ এবং গর্ভবতী মহিলা এবং শিশুদের কেন কম হারে সংক্রমণ ঘটছে সেটা জানা যাবে। তদুপরি, এই প্রক্রিয়াটি বোঝার ফলে ভাইরাসটির চিকিৎসার জন্য সবচেয়ে কার্যকর ওষুধগুলো দ্রুত আবিষ্কারের দিকে যেতে পারে।
গবেষণা প্রবন্ধটির লেখক চিউসোলো, ইতালির পেরুগিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসি অনুষদের স্নাতক এবং ইউরোপীয় দেশটিতে ফার্মাসিস্ট হিসাবে কাজ করেন। তার তত্ত্বটি ইতালিয় দৈনিক ইল টেম্পো এবং ইল জিওরনাল-সহ দেশের শীর্ষস্থানীয় কয়েকটি সংবাদপত্র প্রকাশ করেছে।
তিনি জেরুজালেম পোস্টকে বলেছিলেন যে, সার্স-কোভি-২ যেটার আনুষ্ঠানিক নাম নভেল করনাভাইরাস। এটার বেঁচে থাকা এবং বংশ বৃদ্ধির জন্য সম্ভবত পোরফায়ারিনের প্রয়োজন আছে, যেটা হিমোগ্লোবিনে থাকে। তাই এটি হিমোগ্লোবিনকে আক্রমণ করে। হিমোগ্লোবিন রক্তে অক্সিজেন বহনকারী প্রোটিন। ভাইরাস আক্রমণ করলে এটা কম অক্সিজেন সরবরাহ করে। ফলে দেহে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যায়। ফুসফুসের কোষগুলো সাইটোকাইন ক্যাসকেডের স্থানে পরিণত হয়, এটি ভাইরাসটিকে আটকানোর জন্য প্রচুর পরিমাণে প্রতিরোধ ক্ষমতা ব্যয় করে, যা তীব্র ফুসফুস প্রদাহের জন্য দায়ী। ফলে রোগীর শ্বাসকষ্ট হয়।
তিনি বলেছিলেন, রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা সার্স-কোভি -২ সংক্রমণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পরামিতি হতে পারে। মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের শরীরে স্বাভাবিকভাবেই হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বেশি হয়। এটি মহিলাদের চেয়ে পুরুষদের বেশি কভিড -১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার কারণ হতে পারে। একই কারণে শিশুদের এবং গর্ভবতী মহিলাদের কম আক্রমণ করে। গর্ভবতী মহিলাদের অধিক আয়রনের প্রয়োজন হয়, ফলে তাদের শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যায়। ফলে ভাইরাসটির জন্য কম পুষ্টি থাকে।সূত্র- জেরুজালেম পোস্ট।