কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : টানা দশদিন মৃত্যু যন্ত্রনায় ছটফট করে না ফেরার দেশে চলে গেলেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা নেওয়া অগ্নিদগ্ধ অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ জুলেখা খাতুন (৩৫)।
ঢামেক হাসপাতালে সূত্রে জানা যায়, গত ২৯ এপ্রিল সন্ধ্যায় দেহের ৮০ শতাংশ দগ্ধাবস্থায় কুষ্টিয়ার জুলেখা খাতুন ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তার অবস্থার উন্নতি না হলেও স্থিতিশীল ছিলো। কিন্তু হঠাৎ করে বৃহস্পতিবার (৭ মে) রোগীর স্বজনরা ছাড়পত্র নিয়ে কুষ্টিয়াতে চলে যান।
কুষ্টিয়াতে গিয়ে রোগীর অবস্থার অবনতি হলে বৃহস্পতিবার রাতে তাকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার (৮ মে) তার মৃত্যু হয়।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. তাপস কুমার সরকার বাংলানিউজকে জানান, রোগীর দেহের প্রায় ৮০ শতাংশ দগ্ধ ছিলো। রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিলো। এ জাতীয় দগ্ধ রোগীর প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম ও সাপোর্ট আমাদের এখানে নেই।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা বলেন, গত ২৯ এপ্রিল সকালে কুষ্টিয়া শহরের কমলাপুর এলাকায় বাড়ি মালিকের ছেলের ছুড়ে দেওয়া পেট্টোল ও আগুনে ভাড়াটিয়া গৃহবধূ জুলেখা খাতুন অগ্নিদগ্ধ হন।
খবর পেয়ে গুরুতর আহতাবস্থায় জুলেখা খাতুনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশ। সেই সঙ্গে জড়িত সন্দেহে বাড়িওয়ালা বজলুল হকের ছেলে মাদকাসক্ত রোকনুজ্জামান রনিকে (৩৫) আটক করা হয়।
এ ঘটনায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে করা মামলার একমাত্র আসামি রনিকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাথমিকভাবে জানা যায়, মাদক কেনার টাকা না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে রনি।
আর্থিকভাবে অসচ্ছল হওয়ায় অগ্নিদগ্ধ জুলেখার চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছিলো কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশ। কিন্তু হঠাৎ করে কী কারণে ঢাকা মেডিক্যাল থেকে রোগীকে পরিবারের লোকজন নিয়ে এলে তা খতিয়ে দেখা হবে বলেও জানান ওসি।
নিহত জুলেখা খাতুন মিরপুর উপজেলার বহলবাড়ীয়া গ্রামের মেহেদী হাসানের স্ত্রী। তারা বজলুল হকের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। তিনি ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।
এ বিষয়ে নিহতের স্বামী মেহেদী হাসানের মোবাইলে কল করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।