‘তামাক খাতে ১১ হাজার কোটি টাকা বাড়তি রাজস্ব চান এমপিরা’

অনলাইন ডেস্ক : করোনা মোকাবেলায় আসন্ন বাজেটে তামাকের কর বৃদ্ধি করে তামাক খাত থেকে অতিরিক্ত ১১ হাজার কোটি টাকা বাড়তি রাজস্ব পেতে চান এমপিরা।রবিবার তামাকমুক্ত বাংলাদেশ মঞ্চ আয়োজিত ‘আসন্ন বাজেট : জনস্বাস্থ্য ও তামাক কর, রাজস্ব বৃদ্ধি ও আমাদের প্রত্যাশা’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে তারা এ মনোভাব ব্যক্ত করেন। ওয়েবিনারে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক উপস্থিত ছিলেন। তামাকমুক্ত বাংলাদেশ মঞ্চের সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি ওয়েবিনারটি সমন্বয় করেন।

এমপিরা বলেন, আসন্ন ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে তামাকজাত দ্রব্যের কর বৃদ্ধি এবং করোনা মোকাবেলায় অতিরিক্ত শতকরা ৩ ভাগ সারচার্জ আরোপ করা হলে সরকার অতিরিক্ত ১১ হাজার কোটি টাকা বাড়তি রাজস্ব পেতে পারে। এই টাকা করোনা মহামারী মোকাবেলায় কাজে লাগানো যেতে পারে বলে মত ব্যক্ত করেন তারা।  সেই লক্ষ্যে তারা অর্থমন্ত্রীকে তামাকের কর বৃদ্ধির অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেবেন। চলতি অর্থ বছরে এক লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব ঘাটতির আশঙ্কা করেন এমপিগণ এবং আগামী অর্থ বছর এ চাপ আরও বাড়বে। এক্ষেত্রে তামাক খাতে বাড়তি ১১ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আহরণ ঘাটতি মেটাতে সহায়ক হতে পারে বলে তারা মনে করেন।
ওয়েবিনারে এমপিদের মধ্যে রাশেদ খান মেনন, আব্দুল মতিন খসরু, হাসানুল হক ইনু, অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাত, বেগম ওয়াসিকা আয়শা খান, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, আশেক উল্লাহ রফিক, খাদিজাতুল আনোয়ার, অধ্যাপক মাসুদা এম. রশীদ চৌধুরী ও অপরাজিতা হক উপস্থিত ছিলেন। অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালিকসহ বিভিন্ন তামাকবিরোধী সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ।
ওয়েবিনারের শুরুতে তামাকে কর বৃদ্ধির বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে পাঠানো সুপারিশের আলোকে ‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ মঞ্চ’-এর পক্ষ থেকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয় এবং তামাক-কর ও মূল্য বৃদ্ধি প্রসঙ্গে প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। প্রস্তাবে বলা হয়, সিগারেটের চারটি মূল্যস্তরের পরিবর্তে ২টি মূল্যস্তর এবং সবধরনের তামাকজাত দ্রব্যে সম্পূরক শুল্কের পাশাপাশি সুনির্দিষ্ট শুল্ক আরোপ করতে হবে। এটি বাস্তবায়ন করা হলে সম্পূরক শুল্ক এবং ভ্যাট বাবদ প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত রাজস্ব অর্জিত হবে।
অন্যদিকে, তামাক ব্যবহার করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই তামাকজাত দ্রব্যের ওপর অতিরিক্ত ৩ শতাংশ সারচার্জ আরোপ করা যেতে পারে। যা থেকে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা বাড়তি রাজস্ব আয় করা সম্ভব হবে। ওয়েবিনারে অংশ নেওয়া এমপিগণ তামাক কর বৃদ্ধির বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে সমর্থন জানান। তামাক কর বৃদ্ধির পাশাপাশি তারা কৃষকদের তামাক চাষের পরিবর্তে অন্যান্য খাদ্যশস্য ও অর্থকরী ফসল চাষে উৎসাহ ও প্রণোদনা দেওয়া এবং তামাক শিল্পের সাথে জড়িত শ্রমিকদের পুনর্বাসনের জন্য অর্থ বরাদ্দের বিষয়ে মত ব্যক্ত করেন। এছাড়া তামাকের ক্ষতিকর বিষয়ে জনসচেতনতা গড়ে তোলার জন্য কার্যকর তামাকবিরোধী প্রচারণা এবং ই-সিগারেট নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়েও এমপিগণ জোরালো দাবি জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *