অস্ত্র নিয়ে কীভাবে উঠল মাহাদি?

অনলাইন ডেস্ক: দুই দফা নিরাপত্তা তল্লাশি। এরপরই বিমানবন্দর থেকে উড়োজাহাজে ঢুকতে হয় যাত্রীকে। কিন্তু নিশ্ছিদ্র ও নিখুঁত নিরাপত্তার চোখ ফাঁকি দিয়ে এক ব্যক্তি আজ রোববার বিকেলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের উড়োজাহাজ ময়ূরপঙ্খীতে বসে পড়লেন। উড্ডয়নের পর অস্ত্র বের করে বিমানটি ছিনতাইয়েও চেষ্টা করেন ওই ব্যক্তি। কিন্তু কীভাবে বিমানবন্দর দিয়ে উড়োজাহাজে ঢুকে পড়লেন লোকটি? এমন প্রশ্ন করছেন যাত্রী, বিমানের ফ্লাইট পরিচালনা থেকে শুরু করে নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা।

তাঁদের মতে, যদি সত্যিকারের অস্ত্র নিয়ে তিনি ঢুকে যান বিমানে, তাহলে এটা পুরো নিরাপত্তা ব্যবস্থার বড় ঘাটতির কারণেই হয়েছে।

শাহজালাল বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক দুই ধরনের যাত্রী নিয়েই আজ বিকেলে বিমানটি ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে রওনা হয়। এভাবে বিমান ছাড়াও দেশের অন্যান্য বেসরকারি বিমান সংস্থাও যাত্রী বহন করে থাকে। আন্তর্জাতিক রুটের যাত্রীরা ইন্টারন্যাশনাল টার্মিনাল দিয়ে দুই দফা তল্লাশির পর বোর্ডিং ব্রিজ দিয়ে উড়োজাহাজে ঢুকতে পারেন। অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রীদের এক দফা তল্লাশি করা হয়। শাহজালাল বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ টার্মিনাল দিয়ে ঢুকে তল্লাশির পর উড়োজাহাজে যেতে হয়। বাংলাদেশে পুরো তল্লাশির কাজটি করে থাকে এভসেক। আগে যাত্রীদের তল্লাশির কাজটি করত সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে এভসেক রয়েছে বিমানবাহিনীর তত্ত্বাবধানে।

সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এম নাইম হাসান সাংবাদিকদদের বলেন, ‘আমরা তদন্ত করলে সবই চলে আসবে। আমরা তদন্ত করব। সিসিটিভি আছে, সেটি চেক করব। আমাদের মেশিনে সিসিটিভি আছে, সবগুলো চেক করব। কারণ, এই মেশিনের ভেতর দিয়ে যদি নেইল কাটার, খেলনা পিস্তল, ছুরি ধরা পড়তে পারে, তাহলে এগুলো ধরা হবে না—জিনিসটা খুব বিশ্বাসযোগ্য মনে হয় না। তদন্ত হোক তাহলে দেখা যাবে।’

সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক রুটের যাত্রীদের টার্মিনাল দিয়ে বিমানবন্দরে প্রবেশের সময় লাগেজ ও শরীর তল্লাশি করা হয়। ইমিগ্রেশনের কাজ সম্পন্ন করে সব শেষে আরও এক দফা তল্লাশি করা হয়। দ্বিতীয় দফা তল্লাশিটি নিখুঁতভাবে করানো হয়।

বাংলাদেশ বিমানের এক সূত্র জানায়, শাহজালাল বিমানবন্দরসহ চট্টগ্রামের শাহ আমানত ও সিলেটে ওসমানী বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক রুটের যাত্রীদের যথেষ্ট গুরুত্ব নিয়ে নিখুঁতভাবে তল্লাশি করানো হয়। কিন্তু অভ্যন্তরীণ টার্মিনালে তল্লাশির কাজটির তুলনামূলক ঢিলেঢালাভাবে চলে। আজ যে ব্যক্তি বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেছিলেন, তিনি অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রী হিসেবে ময়ূরপঙ্খী উড়োজাহাজে করে চট্টগ্রামে যাচ্ছিলেন।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক এয়ার কমোডর (অব.) ইশফাক ইলাহী চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, অনেক সময় ছিনতাইকারী খেলনার পিস্তল জাতীয় অস্ত্র নিয়ে ভয় দেখায়। অনেক সময় প্যাকেট দেখায়। আজ চট্টগ্রামে যে ঘটনা ঘটেছে, তাতে ওই ব্যক্তির অস্ত্র আছে কি না, এখনো পর্যন্ত বোঝা যাচ্ছে না। অস্ত্রটি পরীক্ষা করা প্রয়োজন। যদি অস্ত্র নিয়ে বিমানের ভেতরে ঢুকে থাকে তাহলে নিরাপত্তার মারাত্মক ঘাটতি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *