অনলাইন ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেছেন আগামীতে দেশের সামনে যে সংকটই আসুক না কেন আওয়ামী লীগ সরকার তা শক্তভাবে মোকাবিলা করবে।সোমবার জাতীয় সংসদে ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর ভাষণ দেওয়ার সময় এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এ সময় অধিবেশনের সভাপতিত্ব করেন।
এসময় করোনা পরিস্থিতিতে সৃষ্ট সংকট মোকাবিলায় ক্ষমতাসীন সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ ও প্রস্তাবিত বাজেটে বিভিন্ন খাতের বরাদ্দ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দেশে কোনো সংকট হতে দেবে না। আমরা বাজেট বাস্তবায়নে অতীতে ব্যর্থ হইনি, ভবিষ্যতেও ব্যর্থ হবো না। আমরা কখনও হতাশায় ভুগি না। যে বাজেট দেওয়া হয়েছে তা বাস্তবায়নে আমরা সক্ষম হবো।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ব মানদণ্ডে আমাদের শক্তিশালী অবকাঠামো আছে। চলতি জুন মাসেও আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৫ বিলিয়ন ডলারের ওপরে। তাই যত বাঁধাই আসুক, তা অতিক্রম করে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে, এগিয়ে যাচ্ছে।’
প্রস্তাবিত বাজেটকে উচ্চাভিলাষী অভিহিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতি একটি ক্রান্তিকালের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। শুধু আমরা না, সারা পৃথিবীতেই এই অবস্থা। এ পরিস্থিতির মধ্যেই আমাদের বাজেট দিতে হয়েছে। বর্তমানে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও একটা বিরূপ প্রভাব পড়েছে। কিন্তু আশা করি ২০২১ সালে বিশ্ব ধীরে ধীরে করোনার প্রভাব থেকে বেরিয়ে আসবে। আমরা আশাবাদী যে, উত্তরণ ঘটবে। এ কারণেই উচ্চাভিলাষী বাজেট দিয়েছি।
বক্তব্যকালে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় এ সরকারের বিভিন্ন প্রস্তুতির কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা করোনা মোকাবিলা করছি, ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবিলা করেছি। আগামীতে বন্যা আসবে, সেটাও মোকাবিলা করতে হবে। এর জন্য প্রস্তুত আছি। আগে থেকে প্রস্তুত থাকলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করা যায়।
করোনা পরিস্থিতিতে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে এতে মৃত্যুহার কম উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনো মৃত্যুই কাম্য নয়, গ্রহণযোগ্য নয়, আমরা এটা চাই না। আমরা চেষ্টা করছি কীভাবে মানুষকে সুরক্ষা দেওয়া যায়। মানুষও নিশ্চয়ই স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিজেদের সুরক্ষা নিশ্চিত করবে। করোনায় আমাদের মৃত্যুর হার ১.২৬ শতাংশ, যেখানে ভারতে তা ৩.০০ ও পাকিস্তানে ২.০৮ শতাংশ। যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করায় আমরা মৃত্যুর হার নিম্ন রাখতে সক্ষম হয়েছি।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, করোনা পরিস্থিতেও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবকাঠামোর তেমন ক্ষতি হয়নি, যা প্রকৃতিক দুর্যোগে হয়। আগামী অক্টোবর-নভেম্বরে হয়তো করোনার প্রতিষেধক চলে আসবে। অর্থনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। আমরা করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় ১ লাখ ৩ হাজার ১৭ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ আগামী ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ এবং ৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হবে। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই আমরা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। এ লক্ষ্য নিয়েই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের জিরো টলারেন্স নীতি অব্যাহত থাকবে। এ ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। অর্থনৈতিক অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে দুর্নীতি বিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে।