‘বিদেশগামীদের করোনা পরীক্ষা বাধ্যতামূলক, কিন্তু স্পষ্ট কোনো নির্দেশনা নেই’

অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, ঢাকা থেকে বিদেশগামী আন্তর্জাতিক যাত্রীরা কোথায় কীভাবে করোনা পরীক্ষা করাবেন সেটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার আলোকে তারা নির্ধারণ করবেন।তবে এখনো এ সম্পর্কিত কোনো গাইডলাইন মন্ত্রণালয় তাদের দেয়নি।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের সহকারী পরিচালক ডা: আয়েশা আক্তার বলেন, মন্ত্রণালয় যেভাবে নির্দেশনা দিবে আমরা সেভাবেই পদক্ষেপ নিবো। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্য থেকে তারা কোনো একটি প্রতিষ্ঠান নির্ধারণও করে দিতে পারে আবার আমাদেরকে বললে আমরাও সেটি করতে পারবো।

এর আগে রবিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, প্লেনে বিদেশগামী সব যাত্রীকে করোনাভাইরাস নেগেটিভ সার্টিফিকেট সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বাস্থ্য মন্ত্রী ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রীর উপস্থিতিতে এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

এর আগে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া যাত্রীদের মধ্যে করোনা পজিটিভ ব্যক্তি পাওয়ায় ঢাকার সাথে বিমান চলাচল স্থগিত করেছে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন ও ইতালি।

কর্মকর্তারা বলছেন, সরকারের আপাতত সিদ্ধান্ত হলো সরকার অনুমোদিত কোনো টেস্টিং সেন্টার থেকেই পরীক্ষা করিয়ে সার্টিফিকেট নিতে হবে।

বাংলাদেশে এখন যে ৭৭টি পরীক্ষা কেন্দ্রে করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে তার মধ্যে ৪৫টিই সরকারি।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সরকার অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান থেকে করোনা পরীক্ষা করিয়ে সার্টিফিকেট নিয়ে ভ্রমণ করতে হবে।

আর ইমেগ্রশন কর্তৃপক্ষ যাতে তা যাচাই করতে পারে সেজন্য রিপোর্ট, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে তার ওয়েবসাইটে দেয়ার জন্য সুপারিশ করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

অন্যদিকে যারা কর্মসংস্থানের জন্য বিদেশে যাবে তাদের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি পরীক্ষা কেন্দ্রে এ পরীক্ষা করিয়ে রিপোর্ট নিতে হবে।

তবে সরকারি সব কেন্দ্রের মধ্য থেকে শুধু বিদেশগামীদের নমুনা পরীক্ষার জন্য কোনো কেন্দ্র নির্ধারণ করে দেয়া হবে কি-না তা এখনো ঠিক হয়নি বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা ডা: আয়েশা আক্তার।

জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক মো: শামছুল আলম বলছেন, “আমরা চাই না বিদেশে আমাদের সুনাম ক্ষুণ্ণ হোক। তাই টেস্টিং করানো দরকার আগেই। সেক্ষেত্রে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে থেকে যে কোনো প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে হতে পারে। মন্ত্রণালয় থেকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসলে আমরা সেভাবে কাজ করবো।”

তবে উভয় ক্ষেত্রেই একটি নির্ধারিত ফি’র বিনিময়ে এ টেস্ট করানো হতে পারে বলেও কর্মকর্তারা বলছেন।

তারা আরও বলছেন, এছাড়া হজ যাত্রীদের যেমন সৌদি দূতাবাসের তালিকাভুক্ত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হয়, তেমনি করেও কোনো প্রতিষ্ঠান নির্ধারণ করা যায়।

গত ১৬ই জুন থেকে সীমিত পরিসরে বিমান চলাচল শুরুর পর পাঁচটির মতো এয়ারলাইন্স বিমান চালনা করছে ঢাকা থেকে।

বাংলাদেশ বিমান ও কাতার এয়ারওয়েজসহ কয়েকটি এয়ারলাইন্স বলছে, এখনো তাদের যাত্রীদের করোনা নেগেটিভ সনদ নিতেই হবে, এমন কোনো নির্দেশনা তারা পাননি।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মোকাব্বির হোসেন বলছেন, যাত্রীদের করোনা সনদের বিষয়ে নতুন নির্দেশনা আসার পর তারা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন।

“আমাদের কোনো যাত্রীদের নিয়ে এখনো কোনো সমস্যা হয়নি। তবে এটা বিশেষ পরিস্থিতি। যেভাবে নির্দেশনা আসবে আমরা সেভাবেই ব্যবস্থা নিবো”।

অন্যদিকে কাতার এয়ারওয়েজের একজন কর্মকর্তা (নাম প্রকাশ করতে চাননি) বলছেন তারাও এমন কোনো নির্দেশনা পাননি।

“আমাদের যাত্রীদের অনেক প্রশ্নের উত্তর দিতে হচ্ছে। ১৪ জুলাই কয়েকটি গন্তব্যে ফ্লাইট যাবে। তাদের ক্ষেত্রে কী হবে আমরা এখনো জানি না। তবে এখন পর্যন্ত এমন কোনো নির্দেশনা বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ আমাদের দেয়নি যে যাত্রীদের করোনা নেগেটিভ সনদ সাথে রাখতেই হবে,” বলছিলেন তিনি।

যেসব দেশের সাথে ঢাকার বিমান যোগাযোগ চালু আছে তাদের মধ্যেও কয়েকটি দেশ তাদের দেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করতে শুরু করেছে।

আরব আমিরাত দেশটির কোনো বিমানবন্দরেই করোনা নেগেটিভ সনদ ছাড়া কোনো যাত্রীকে গ্রহণ করবে না বলে জানিয়েছে।

অন্যদিকে লেবানন কর্তৃপক্ষ বিমান সংস্থাগুলোকে জানিয়েছে যে বৈরুতে যেসব ফ্লাইট যাবে, তাদের যাত্রীদের বৈরুত বিমানবন্দরেই করোনা পরীক্ষা করবে তারা।

এ জন্য যাত্রীদের টিকেটের সাথে অতিরিক্ত ৫০ ডলার ফি যোগ করার কথা জানিয়ে দিয়েছে তারা।

“অর্থাৎ কেউ ঢাকায় কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা করিয়ে নেগেটিভ সনদ নিয়ে গেলেও বৈরুতে তার আবার পরীক্ষা হবে এবং সে অর্থ যাত্রীকেই দিতে হবে,” বলছেন একটি আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তা।সূত্র: বিবিসি বাংলা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *