‘নেগেটিভ হওয়ার এক মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বার করোনা সংক্রমণ, আতঙ্ক’

অনলাইন ডেস্ক : একই ব্যক্তির দ্বিতীয়বার কোভিড সংক্রমণের ঘটনা চীনে আগেই প্রকাশ্যে এসেছিল। এবার একই রকম ঘটনা ঘটল ভারতের জলপাইগুড়িতেও। প্রথমবার করোনা আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হওয়ার পর ফের কোভিড আক্রান্ত হলেন এক ব্যক্তি।

ভারতের স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, জলপাইগুড়ি শহরের কদমতলার বাসিন্দা ৪৫ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি ময়নাগুড়ি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মী। জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে তিনি করোনা সংক্রমিত হন। সেই সময় তিনি হাসপাতালেও ভর্তি হন এবং সুস্থ হয়ে ওঠেন। তার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। তারপর তিনি কাজেও যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু কয়েকদিন আগে ফের তার শরীরে কোভিডের উপসর্গ দেখা দেয়। প্রথমে তিনি বিষয়টি গুরুত্ব না দিলেও পরে চিকিৎসকদের পরামর্শে আবারও কোভিড পরীক্ষা করান। তার রিপোর্ট পজিটিভ আসে।
এই ঘটনার কথা ভারতের উত্তরবঙ্গের কোভিড চিকিৎসার তদারকির দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক সুশান্ত রায়ের কাছে রিপোর্ট আকারে জমা পড়েছে। প্রাথমিক রিপোর্ট জমা পড়েছে দেশটির স্বাস্থ্য দফতরেও। ফের সংক্রমণের এই খবর চিন্তায় ফেলেছে স্বাস্থ্য কর্তাদের। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, শুধু ওই ব্যক্তি নন, দ্বিতীয় সংক্রমণের আরও কয়েকটি ঘটনার হদিস পাওয়া গেছে এবং এখনও পর্যন্ত সব ক’টিই উত্তরবঙ্গে।

দ্বিতীয়বার সংক্রমণের ঘটনা অস্বাভাবিক নয় বলেই মনে করছেন চিকিৎসকদের একটি অংশ। ভারতের জনস্বাস্থ্য বিশারদ সুবর্ণ গোস্বামী এ বিষয়ে বলেন, ‘‘আমিও খবর পেয়েছি এ রকম দ্বিতীয় সংক্রমণের। এটা অস্বাভাবিক নয়। কারণ কোভিড ১৯ ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য যে অ্যান্টিবডি শরীরে তৈরি হয় তা বেশি দিন কার্যকর থাকে না। সেই প্রতিরোধ ক্ষমতা স্বল্পায়ু।”

কোভিডের টিকা প্রসঙ্গেও তিনি সংশয়ী। তার মতে, এখনও কোভিড ভাইরাসের চরিত্র অনেকটাই অজানা। ফলে টিকা নিলেও শরীরে তৈরি হওয়া রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার মেয়াদ তিন মাসের বেশি হবে না।

একই সুর কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালের কোভিড চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত সিনিয়র কনসালট্যান্ট পারমিতা ত্রিবেদীর। তিনি বলেন, ‘‘কোভিড আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হওয়ার পর মানুষের শরীরে ওই ভাইরাসকে চেনার জন্য প্রয়োজনীয় মেমোরি সেল বা কোষ তৈরি হচ্ছে না।”

তিনি জল বসন্তের উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘‘চিকেন পক্সের ক্ষেত্রে রোগীর শরীরে দীর্ঘমেয়াদি মেমোরি সেল তৈরি হয়। ফলে প্রথমবার আক্রান্ত হওয়ার অনেক দিন পরও সেই ভাইরাস শরীরে ঢোকা মাত্রই সেই মেমোরি সেল চিনে নেয় ভাইরাসকে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধী শক্তিকে সক্রিয় করে তোলে। তখন এক সঙ্গে কোষগুলো ঝাঁপিয়ে পড়ে ভাইরাসের হামলা ঠেকিয়ে দেয়।”

ভারতের স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, দ্বিতীয়বার সংক্রমিত রোগীর প্রয়োজনীয় বিভিন্ন রকম শারীরিক পরীক্ষা করা হচ্ছে। সংক্রমণের মাত্রা আগের থেকে বেশি না কম দেখা হচ্ছে। সেই সঙ্গে ভাইরাস চরিত্র পরিবর্তন করেছে কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সূত্র: আনন্দবাজার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *