‘রক্তের-এ-গ্রুপে করোনা বেশি ভয়াবহ-ও-গ্রুপে কম’

অনলাইন ডেস্ক : প্রতিদিনই করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। তবে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস রক্তের ‌‘এ’ গ্রুপে বেশি ভয়াবহ, আর ‘ও’ গ্রুপে কম আকার ধারণ করে। সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় এমন তথ্যই জানানো হয়েছে। গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক চিকিৎসা-জার্নাল ‘নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিন’-এ। খবর আনন্দবাজারের।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গবেষণা চালানো হয়েছে ইউরোপের দুটি দেশ স্পেন ও ইতালিতে। করোনা সংক্রমণের হার ও মৃতের সংখ্যায় যে দুটি দেশই রয়েছে সামনের সারিতে। গবেষণাটি নির্দিষ্ট জিন ও ক্রোমোজোমের সঙ্গে রোগীদের দেহে করোনা সংক্রমণ ভয়াবহ হয়ে ওঠার একটি সম্পর্ক (কোরিলেশনস বা অ্যাসোসিয়েশন) খুঁজে পেয়েছে।
গবেষকরা দাবি করছেন, ‘এ’ গ্রুপের (পজিটিভ ও নেগেটিভ) রক্তবাহকদের শরীরে কোভিড-১৯ ভাইরাস বেশি ভয়াবহ হয়ে উঠছে। অন্যান্য গ্রুপের রক্তবাহকদের থেকে অন্তত ৪৫ শতাংশ বেশি। কিন্তু ‘ও’ গ্রুপের (পজিটিভ ও নেগেটিভ) রক্তবাহকদের শরীরে কোভিড-১৯ ভাইরাস ততটা ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারছে না। অন্যান্য গ্রুপের মতোই ‘ও’ গ্রুপের অন্তত ৬৫ শতাংশ রক্তবাহকের দেহে করোনা সংক্রমণ ঘটছে।

তাদের দাবি, ‘এবি’ এবং ‘বি’ গ্রুপের (পজিটিভ ও নেগেটিভ) রক্তবাহকদের শরীরেও কোভিড-১৯ ভাইরাস ‘এ’ গ্রুপের রক্তবাহক রোগীদের মতো ততটা ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারছে না। তবে আমাদের শরীরে কোভিডের দ্রুত ভয়াবহ ওঠা ঠেকাতে ‘ও’ গ্রুপের মতো ততটা কার্যকরী নয় ‘এবি’ এবং ‘বি’ গ্রুপের রক্ত। ‘এবি’ গ্রুপের ক্ষমতা ‘ও’ গ্রুপের চেয়ে কম। ‘বি’ গ্রুপের ক্ষমতা ‘এবি’ গ্রুপের চেয়েও কম।

স্পেন ও ইতালির করোনায় চরম সঙ্কটাপন্ন ৮ লাখেরও বেশি মানুষের জিনোম পরীক্ষা করেছেন বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। তাদের সঙ্গে তুলনা করেছেন আরও বহু মানুষকে, যারা করোনায় আক্রান্ত হননি।

ম্যাসাচুসেট্‌স জেনারেল হাসপাতালেল অধ্যাপক চিকিৎসক অনহিতা দুয়া বলেছেন, ‘এটা নিশ্চিতভাবে বলা যাবে না, করোনা সংক্রমণ আমাদের দেহে ভয়াবহ হয়ে ওঠার ক্ষ‌েত্রে শুধু রক্তের নির্দিষ্ট কোনও গ্রুপেরই ভূমিকা রয়েছে। একটা ‘কোরিলেশন’ বা ‘অ্যাসোসিয়েশন’ (পারস্পরিক সম্পর্ক) খুঁজে পাওয়া গেছে মাত্র। শুধুমাত্র জিন-স্তরে। আরও অনেক কারণ থাকতে পারে। তবে এটাও অন্যতম কারণ হয়ে উঠতে পারে। তাই বলব, ‘এ’ গ্রুপের রক্তবাহকদের অযথা আতঙ্কিত হয়ে ওঠার কারণ নেই। আবার এটাও বলব না, ‘ও’ গ্রুপের রক্তবাহকরা খুব স্বস্তিতে থাকতে পারেন। এটা একটা হাইপোথিসিস। কোনও থিয়োরি নয়। কোনও মডেলও নয়।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *