অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় ১৩ আসামির পক্ষে তাদের আইনজীবীরা অভিযোগ গঠন শুনানি শেষ করেছে। তবে বাকি ৯ আসামির পক্ষে শুনানি শেষ না হওয়ায় আদালত ৯ সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠনের জন্য নতুন দিন ধার্য করেছেন। বুধবার ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এ দিন ধার্য করেন।
এর আগে কারাগারে থাকা ২২ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর রাষ্ট্রপক্ষের অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেন কাজল, এহেসানুল হক সমাজী ও অ্যাডভোকেট মো. আবু আব্দুল্লাহ ভূঁইয়া অভিযোগ গঠনের পক্ষে শুনানি করেন।
শুনানিতে মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, ‘তারা যে ঘটনাটি ঘটিয়েছে তা খুবই দুঃখজনক। আবরারকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদের নামে তাকে পরিকল্পিতভাবে পিটিয়ে হত্যা করে। পানি চাইলে সেটাও দেয়নি। এটা সুকর্ম ছিল না। আবরারের বাবা-মা, এ দেশের জনগণ বিচারের অপেক্ষা করছে। দোষীরা শাস্তির আওতায় আসুক।’
এহেসানুল হক সমাজী বলেন, ‘আসামিরা নির্মমভাবে পরিকল্পিতভাবে আবরারকে হত্যা করে। এটা নৃশংস নয়, জঘন্য অপরাধ। আমাদের প্রত্যাশা যেন ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়। মামলাটিতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করার যথেষ্ঠ উপাদান রয়েছে।’
তারপর আসামি পক্ষের আইনজীবীরা অভিযোগ গঠন শুনানি শুরু করেন। তারপর ১৩ আসামির পক্ষে তাদের আইনজীবী শুনানি শেষ করেন। বাকি আসামিদের পক্ষে শুনানি শেষ না হওয়ায় আদালত অভিযোগ গঠনের নতুন এ দিন ধার্য করেন।
এদিকে, গত ২২ মার্চ একই আদালত অভিযোগ গঠন শুনানির তারিখ ৬ এপ্রিল ঠিক করেন। কিন্তু করোনার কারণে শুনানি হয়নি। গত ৯ আগস্ট আদালত গঠন শুনানির নতুন তারিখ ধার্য করেন।
গত ১৩ নভেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক ওয়াহিদুজ্জামান ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। অভিযোগপত্রে ২৫ আসামিকে অভিযুক্ত করেন। এছাড়া ৬০ জনকে সাক্ষী করা হয়।
এ মামলার আসামিরা হলেন, ছাত্রলীগের বুয়েট শাখার বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুহতামিম ফুয়াদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার ওরফে অপু, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন ওরফে শান্ত, আইনবিষয়ক উপ-সম্পাদক অমিত সাহা, উপ-সমাজসেবাবিষয়ক সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, গ্রন্থ ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক ইশতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, কর্মী মুনতাসির আল জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর, মুজাহিদুর রহমান, মনিরুজ্জামান মনির, আকাশ হোসেন, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মাজেদুর রহমান মাজেদ, শামীম বিল্লাহ, মুয়াজ ওরফে আবু হুরায়রা, এএসএম নাজমুস সাদাত, আবরারের রুমমেট মিজানুর রহমান, শামসুল আরেফিন রাফাত, মোর্শেদ অমত্য ইসলাম, এস এম মাহমুদ সেতু, মুহাম্মদ মোর্শেদ-উজ-জামান মন্ডল ওরফে জিসান, এহতেশামুল রাব্বি ওরফে তানিম ও মুজতবা রাফিদ।
আসামিদের মধ্যে তিনজন পলাতক। এছাড়া তাদের মধ্যে আট জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরে বাংলা হলের দ্বিতীয় তলার সিঁড়ি থেকে অচেতন অবস্থায় আবরার ফাহাদকে উদ্ধার করা হয়। পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় চকবাজার থানায় হত্যা মামলা করেন আবরারের বাবা বরকতুল্লাহ।