মানবিক সঙ্কট চরমে যে দেশে !

অনলাইন ডেস্ক: চলমান গৃহযুদ্ধে কয়েক হাজার লোক মারা গেছে। দেশটিতে বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক সঙ্কট চলছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।

হুতি বিদ্রোহী ও সরকার সমর্থক সৈন্যদের মধ্যে এই গৃহযুদ্ধ চলছে। ২০১৫ সালের মার্চ থেকে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে হামলা শুরু করলে যুদ্ধের তীব্রতা বেড়ে যায়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানায়, এই যুদ্ধে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনীর যোগদানের পর থেকে ইয়েমেনে প্রায় ১০ হাজার লোক নিহত ও ৬০ হাজারের বেশি আহত হয়েছে। হতাহতদের অধিকাংশই বেসামরিক লোক। 
তবে নিহতের সঠিক সংখ্যা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।নিহতের সংখ্যা এর চেয়ে আরো অনেক বেশি হতে পারে বলে আন্তর্জাতিক ত্রাণ সহায়তাকারী সংস্থাগুলো আশঙ্কা করছে।  

আন্তর্জাতিক সংস্থা অ্যাকশন এগনেইস্ট হাঙ্গার জানিয়েছে, এই যুদ্ধে ৫৭ হাজারেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে। 
ফরাসী ত্রাণ সহায়তাকারী সংস্থা অ্যাকশন কন্ট্রা লা ফেইম জানিয়েছে, ইয়েমেনে এই গৃহযুদ্ধের কারণে ৩৩ লাখ লোক বাস্তুচ্যূত হয়েছে।

ডব্লিউএইচও জানায়, দেশটিতে কলেরার প্রাদুর্ভাবও দেখা দিয়েছে। এখানে ২০১৭ এপ্রিল মাস থেকে প্রাণঘাতী এই মহামারীতে ২ হাজার ৫০০ বেশি লোক প্রাণ হারিয়েছে। প্রায় ১২ লাখ লোক এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ বরাবরই শিশুদের ওপর যুদ্ধের বিরূপ প্রভাবের বিষয়টি তুলে ধরছে। 
২০১৮ সালে এক প্রতিবেদনে ইউনিসেফ জানায়, ‘ইয়েমেন শিশুদের জন্য জাহান্নাম হয়ে গেছে। ’
এতে আরো বলা হয়, দেশটিতে ৫ বছরের কম বয়সী ১৮ লাখ শিশু চরম অপুষ্টিতে ভুগছে।

আন্তর্জাতিক সংস্থা সেভ দ্য চিল্ড্রেন জানায়, ইয়েমেনে ২০১৫ সালের এপ্রিল ও ২০১৮ সালের অক্টোবরের মধ্যে চরম অপুষ্টিতে ভুগে অথবা অপুষ্টিজনিত রোগে প্রায় ৮৫ হাজার শিশু সম্ভবত মারা গেছে। অন্যরা যুদ্ধে মারা গেছে। 
জাতিসংঘের মতে, ইয়েমেনে স্কুলে যাওয়ার উপযুক্ত ৭০ লাখ শিশুর মধ্যে ২০ লাখ শিশু শিক্ষা থেকে বঞ্চিত।

দেশটিতে ২ হাজার ৫শ’র বেশি স্কুল পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। এগুলোর দুই তৃতীয়াংশ হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২৭ শতাংশ স্কুল বন্ধ। সাত শতাংশ স্কুল সামরিক বাহিনীর সদস্যরা ব্যবহার করে অথবা সেগুলোতে বাস্তুচ্যূত মানুষের আশ্রকেন্দ্র বানানো হয়েছে।

ইউনিসেফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পরিবারের অভাবের কারণে প্রতি পাঁচজন মেয়ের মধ্যে দুজনের বাল্য বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। ১৫ বছরের আগেই তাদের বিয়ে দিয়ে দেয়া হয়। হাজার হাজার ছেলে শিশুকে যোদ্ধা হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *