ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করায় অপরাধ কমবে : আইনমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক : আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ধর্ষণের সাজার বিষয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের সংশ্লিষ্ট ধারার সংশোধনী মন্ত্রিসভায় অনুমোদন করা হয়েছে। সংশোধনী অনুযায়ী ধর্ষণের শাস্তি হবে মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। সাজা যাবজ্জীবন থেকে মৃত্যুদণ্ড করায় ধর্ষণের অপরাধ কমে আসবে বলে বিশ্বাস করি।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণের সাজা সংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট ধারাগুলো মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর  সোমবার গুলশানে নিজ বাসায় এক প্রেসব্রিফিং-এ এসব কথা বলেন আইনমন্ত্রী।

তিনি বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) ধারায় ধর্ষণের জন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান ছিল। মন্ত্রিসভার আজকের বৈঠকে উক্ত আইনের ৯(১) ধারায় সংশোধনীর প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। সংশোধনী অনুযায়ী ধর্ষণের শাস্তি হবে মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। ধারা ৯(১) এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকায় ৯(৪) ধারাতেও সংশোধন আনা হয়েছে।

তিনি বলেন, কিছুদিন আগে হাইকোর্ট বিভাগের একটি দ্বৈত বেঞ্চ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১(গ) ধারা সংশোধন করে সাধারণ জখমের জন্য আপোষের বিধান রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সে অনুযায়ী ১১(গ) ধারা সংশোধন করে আপোষের বিধান রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ২০১৩ সালের শিশু আইনের একটি সংশোধনী আনা হয়েছে।

আইনমন্ত্রী বলেন, মন্ত্রিসভার বৈঠকে উল্লেখিত সংশোধনীগুলি ভেটিং সাপেক্ষে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে সংসদ অধিবেশন চলমান না থাকায় এটা অধ্যাদেশ আকারে জারি করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং আগামীকাল রাষ্ট্রপতির আদেশ বলে এটাকে অধ্যাদেশ হিসেবে জারি করার প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার।

তিনি বলেন, বিশ্বে মৃত্যুদণ্ডের ব্যাপারে অনেক বিতর্ক আছে। তারপরও বর্তমান পরিস্থিতির কারণে এই সাজা বাড়ানো উচিত বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনে করেন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে মৃত্যুদণ্ডের ব্যাপারে সংশোধনী আনা হয়েছে। এর পাশাপাশি পুরাতন ধর্ষণ মামলাগুলি আগে এবং নতুন মামলাগুলি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সরকার আইনে বিশ্বাস করে উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী বলেন, আইনি প্রক্রিয়ায় যতটুকু সময় লাগে সেই সময়ের মধ্যে ধর্ষণ মামলাগুলি সম্পন্ন করার ব্যবস্থা ও চেষ্টা সরকার করবে।

তিনি আরো বলেন, বিচার বিভাগ স্বাধীন। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা অবশ্যই রক্ষা করা হবে। প্রধান বিচারপতিকে অনুরোধ করা হবে, তিনি যেন একটি প্রাকটিস ডাইরেকশন দেন যাতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের মামলাগুলি দ্রুত নিষ্পত্তি করার জন্য সংশ্লিষ্ট বিচারকগণ যথাযথ পদক্ষেপ নেন। অপরদিকে আইন মন্ত্রণালয় থেকেও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পিপিদেরকে নিদের্শনা দেওয়া হবে, যাতে তারা ধর্ষণ মামলাগুলো নিষ্পত্তি করার ব্যাপারে ইমিডিয়েট পদক্ষেপ নেন।

মন্ত্রী বলেন, আগে স্বাক্ষীদের আদালতে আসার ব্যাপারে কিছু সমস্যা ছিল। এখন সরকার ডিজিটাইজেশনের সাহায্যে স্বাক্ষীদেরকে মোবাইলের মাধ্যমে মেসেজ দেওয়ার একটি পদ্ধতি অবলম্বন করছে। এসব নতুন পদ্ধতি অবলম্বন করে ধর্ষণ মামলাসহ অন্যান্য মামলাগুলি দ্রুত নিষ্পত্তির গতি বাড়বে। তিনি বলেন, স্বাক্ষী সুরক্ষা আইন নিয়েও সরকার কাজ করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *