বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা নিয়েই

অনলাইন ডেস্ক : পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে স্নাতক পর্যায়ে শিক্ষার্থী ভর্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে উপাচার্যদের সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদ। তবে কোন পদ্ধতিতে কিভাবে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে, সে বিষয়ে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

শনিবার সন্ধ্যায় উপাচার্য পরিষদের ভার্চুয়াল বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সভা সূত্রে জানা গেছে, এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা বাতিলের পর জিপিএর ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির যে দাবি উঠেছিল সেটি নাকচ করে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় সশরীরে পরীক্ষা না নিয়ে অনলাইনে নেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। এ ক্ষেত্রে অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের প্রক্রিয়া নির্ধারণ নিয়ে কাজ শুরু করেছেন তাঁরা। তবে বেশির ভাগ উপাচার্যই সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার ব্যাপারে মত দিয়েছেন।

উপাচার্য পরিষদের সভাপতি এবং চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা ভর্তি পরীক্ষার ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। ডিসেম্বরে এইচএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশের পর উপাচার্যরা বসে ভর্তি পরীক্ষার পদ্ধতি ও সময় ঠিক করবেন।’

জানা যায়, সভায় অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুনাজ নূরের উদ্ভাবিত সফটওয়্যার ‘প্রটেক্টেড রিমোট এক্সামিনেশন’ ব্যবহারের প্রস্তাব এসেছে। এই সফটওয়্যারের কার্যকারিতা উপাচার্যদের কাছে উপস্থাপন করা হয়।
প্রাথমিকভাবে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের বাকি থাকা পরীক্ষা এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে নেওয়ার ব্যাপারেও আলোচনা হয়। সেখানে সফল হলে ভর্তি পরীক্ষায় এটি ব্যবহার করা হবে।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশীদ বলেন, ‘আমরা নীতিগতভাবে ভর্তি পরীক্ষার ব্যাপারে সম্মত হয়েছি। আর বর্তমান পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে অনলাইনে এই পরীক্ষা হতে পারে। বঙ্গবন্ধু ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য উদ্ভাবিত সফটওয়্যারটির কার্যকারিতা নিয়ে ইউজিসির সঙ্গেও আমরা বসব। অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষা হলে এমসিকিউ পদ্ধতিতেই হবে। বেশির ভাগ উপাচার্যই সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার ব্যাপারে একমত হয়েছেন। এতে শিক্ষার্থীদের একটি গুচ্ছের জন্য একটি পরীক্ষা দিলেই চলবে।’

জানা যায়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এত দিন এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ প্রাপ্তির ভিত্তিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করত। কারণ তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোতে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। এবার সব শিক্ষার্থীই এইচএসসি পাস করার সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় কলেজগুলোতে শিক্ষার্থী আরো বাড়বে।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আরো বলেন, ‘এবার আমরা কী পদ্ধতিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করব সেটা আরো পরে সিদ্ধান্ত নেব। আমাদের যেহেতু বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী, তাই ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হলে আগের পদ্ধতিতেও ভর্তি করতে পারি।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য মীজানুর রহমান বলেন, চলমান পরিস্থিতি বিবেচনায় অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষে বেশির ভাগ উপাচার্য মত দিয়েছেন।

জানা যায়, শিক্ষার্থীদের দুর্দশা লাঘবে দীর্ঘদিন ধরেই সমন্বিত বা গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার ব্যাপারে আলোচনা চলছে। গত বছর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গুচ্ছ পদ্ধতিতে সফলভাবে ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন করে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে তিনটি গুচ্ছে ভাগ করে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের প্রস্তাব রয়েছে ইউজিসির। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) সমন্বিত বা গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার ব্যাপারে এখনো একমত হতে পারেনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *