অনলাইন ডেস্ক : ব্রিটিশ আমলে অভিবক্ত উপমাহদেশে চিলাহাটি-হলদিবাড়ি হয়ে ট্রেন চলাচল করতো। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের সময় বন্ধ হয়ে যায় এ ট্রেন চলাচল। ৫৫ বছর পর আবার সেই রেলপথ যোগাযোগ স্থাপণ করা হচ্ছে। আগামী বিজয় দিবসে বাংলাদেশে-ভারত চিলাহাটি-হলদিবাড়ি হয়ে ট্রেন চলাচল উদ্বোধন করা হবে। প্রথমে মালবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হলেও যাত্রীবাহি ট্রেন চলাচল শুরু হবে ২৬ ই মার্চ ২০২১ থেকে।
চিলাহাটি থেকে হলদিবাড়ি দূরত্ব মাত্র ১০ কিমি, যার মধ্যে ভারতের অংশে তিন কিলোমিটার আর বাংলাদেশের অংশে ৭ কিমি। দুদেশের আগ্রহে এ রেলপথ পুণরায় চালুর বিষয়টি বিবেচনায় আসার পর ভারত ২০১৭ সালেই তাদের অংশের তিন কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করে ফেলে। ২০১৮ সালে একনেকে ৮০ কোটি টাকার চিলাহাটি থেকে হলদিবাড়ি পর্যন্ত বাংলাদেশের অংশের সাত কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের অনুমোদন পায়।
বর্তমানে এর কাজ শেষ পর্যায়ে আছে, এখন শুধু সীমান্তের জিরো পয়েন্টে কিছু নির্মাণ কাজ বাকি রয়েছে। একাজ শেষ হলে পণ্য পরিবহনের মাধ্যমে বিজয় দিবস ১৬ ডিসেম্বর ২০২০ এ উদ্বোধন হয়ে যাবে রেল সীমান্তটি। এরপর বাংলাদেশ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী আগামী স্বাধীনতা দিবস ২৬ মার্চ ২০২১ এ উদ্বোধন করবেন যাত্রীবাহি ট্রেন।
এ সীমান্ত দিয়ে রেলপথে চালাচল দুদেশের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ ও ভারতের পণ্য পরিবহনে সুবিধা হবে যা আমদানি রপ্তানি বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। কিন্তু সবচেয়ে বেশি সুবিধা হবে পর্যটকদের। বর্তমানে ঢাকা থেকে শিলিগুড়ি বাস সার্ভিস চালু আছে যেগুলো মূলত বুড়িমারী (ভারতের পোর্ট চেংরাবান্দা) ও বাংলাবান্দা (ভারতের পোর্ট ফুলবাড়ী) হয়ে শিলিগুড়ি যায়। এ সকল বাসে চলাচল বেশ কষ্টকর এবং সময়ও লাগে বেশি।
আমরা বুরিমারী হয়ে চলাচলকারী শ্যামলী পরিবহনে ঢাকা থেকে রাত ১০ টায় রওনা দিয়ে পরের দুপুর ২ টায় শিলিগুড়ি পৌছেছিলাম। ট্রেন চলাচল শুরু হলে ৭/৮ ঘন্টায় পৌছানো যাবে শিলিগুড়ি রেলস্টেশন। সেখান থেকে দার্জিলিং মাত্র ৪০ কিমি রাস্তা, এছাড়া সিকিমও ২-৩ ঘন্টায় পৌছানো সম্ভব। ফলে এ ট্রেন চালুর সুবিধা পর্যটকরাই বেশি পাবেন।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলা বাংলাদেশের পর্যটকদের অনেক পছন্দের। এছাড়া অনেকেই প্রথম প্রথম ট্রেকিং শুরু করার জন্য বেছে নেন সান্দাকফুকে। এদিকে সিকিম বাংলাদেশিদের জন্য উন্মুক্ত হবার পর বুড়িমারী ও বাংলাবান্দা সীমান্তের গুরুত্ব অনেক বেড়েছে। করেনার কারণে মার্চ থেকেই বন্ধ আছে ভারতের ট্যুরিস্ট ভিসা।
অতি সম্প্রতি বাকি সব ভিসা চালু থাকলেও বন্ধ রাখা হয়েছে পর্যটন ভিসা। এছাড়া ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে চলাচলকারী বাকি দুটোই ট্রেন মৈত্রী এক্সপ্রেস ও বন্ধন এক্সপ্রেসও গত মার্চ থেকে বন্ধ আছে। যদিও এ সপ্তাহে ঢাকা থেকে বাংলাদেশে বিমান, ইউএসবাংলা, ইন্ডিগো এয়ার ইন্ডিয়া বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে নিয়মিত বিমান চলাচল শুরু করেছে।ফিচার ছবি বাতাসিয়া লুপের (প্রতীকী ছবি)
সূত্র : vromonguru.com