অবশেষে মোবাইলের টাওয়ার শেয়ারিং শুরু হচ্ছে ডিসেম্বরে

অনলাইন ডেস্ক : নিয়ন্ত্রক সংস্থার চাপে অবশেষে টাওয়ার শেয়ারিং নিয়ে জটিলতার অবসান হচ্ছে। বিটিআরসি বলছে, আগামী ডিসেম্বরেই সারাদেশে কার্যক্রম শুরু করবে চার অপারেটররের উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন শতাধিক টাওয়ার।

বৃহস্পতিবার বিটিআরসির কার্যালয়ে এক বৈঠকে এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন টাওয়ার নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। প্রতিশ্রুতির বরখেলাপ হলে মোটা অঙ্কের জরিমানাসহ কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিটিআরসি।
পরিবেশের সুরক্ষায় উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি টাওয়ার দিয়েই মুঠোফোন সেবা দিতে ২০১৮ সালের নভেম্বরে চার প্রতিষ্ঠানকে টাওয়ার শেয়ারিং লাইসেন্স দেয় বিটিআরসি। লাইসেন্স পাওয়ার এক বছরের মধ্যে বিভাগীয় পর্যায়ে নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ’সহ শর্ত দেয়া হয় ৫টি।

তবে বিপত্তি বাধে টাওয়ারের ভাড়া নিয়ে। ৩০শতাংশ বাড়তি খরচের কারণে নেটওয়ার্ক ভাড়া নিতে রাজি হয়নি মুঠোফোন অপারেটররা। ফলে দুই বছর বন্ধ থাকে নতুন টাওয়ার স্থাপনের কাজ। নানা দেনদরবার করে সেবা সংক্রান্ত চুক্তি নির্ধারণ করে দেয় বিটিআরসি। তারপরও টাওয়ার নির্মাণে গতি না আসায় লাইসেন্স বাতিলের হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।

সবশেষ বৃহস্পতিবার বিটিআরসি কার্যালয়ে বৈঠকে টাওয়ার নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের কাছে কার্যক্রম শুরুর সুনির্দিষ্ট সময় জানতে চায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

সামিট কমিউনিকেশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফ আল ইসলাম বলেন, তাঁরা বাংলালিংক এর সাথে সার্ভিস লেভেল এগ্রিমেন্ট সম্পন্ন সাপেক্ষে ২৫৯ টি টাওয়ার নির্মাণে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। ২০২০ এর ডিসেম্বর এর মধ্যে ১৫০টি এবং ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাকি ১০৯টি টাওয়ার নির্মাণ করবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

ইডটকো বাংলাদেশ লিমিটেডের পরিচালক (প্রকৌশল) সাব্বির আহমেদ জানান, তার প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে টাওয়ার নির্মাণ কার্যক্রম চালু রেখেছে। তবে অপারেশনাল কার্যক্রম পরিচালনায় কিছু প্রতিবন্ধকতার কথা তিনি তুলে ধরেন। কমিশন থেকে যে কোন ইস্যু স্বল্পতম সময়ে সমাধানের প্রতিশ্রুতি প্রধান করা হয়, তবে বাজার প্রতিযোগিতায় আইন ও বিধানের বাইরে কাজ করলে তার বিষয়ে কঠোর রেগুলেটরি হস্তক্ষেপের বিষয়ে স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়।

কীর্তনখোলা টাওয়ার বাংলাদেশ লিমিটেডের ইনফ্রাস্ট্রাকচার সার্ভিসেসের প্রধান আনিস আহমেদ বলেন, তারা বিভিন্ন অপারেটরের সঙ্গে বাণিজ্যিক আলাপ আলোচনায় প্রায় শেষের দিকে রয়েছেন। আশা করা যাচ্ছে শিগগিরই দেশের বিভিন্ন স্থানে টাওয়ার নির্মাণ শুরু করতে পারবেন।

এবি হাইটেক কনসোর্টিয়াম লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হোসেন মঞ্জুরুল হাসান বলেন, তাদের আগামী তিন মাসে তিনশত টাওয়ার নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি আর ও জানান তারা মোবাইল অপারেটর রবি এর সাথে ১০০ টাওয়ার নির্মাণে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন এবং ইতোমধ্যে ৪৭ টি টাওয়ার নির্মাণ করে রবি কে বুঝিয়ে দিয়েছেন। আশা করছেন বাকি ৫৩ টির কার্যক্রম এই মাসেই শেষ করবেন।

বিটিআরসির চেয়ারম্যান জহুরুল হক বলেন, নিয়ম না মানলে ২০০ কোটি টাকা জরিমানা করার সুযোগও বিটিআরসির রয়েছে। বর্তমানে যত্রতত্র ভবনের ছাদে কিংবা গায়ে স্থাপন করা ছোট-বড় প্রায় ৩৭ হাজার টাওয়ারের মাধ্যমে প্রায় ১৬ কোটি গ্রাহককে সেবা দিচ্ছে চার মুঠোফোন অপারেটর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *