যুক্তরাষ্ট্রে ২২ দিনে করোনায় আক্রান্ত ৩০ লাখ, মৃত্যু ২৫ হাজার

অনলাইন ডেস্ক : নভেম্বরের ১ থেকে ২২ তারিখ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৩০ লাখ মানুষ এবং প্রাণ গেছে ২৫ হাজারের অধিক। করোনার প্রকোপ শুরুর পর একক কোনমাসেও এত মানুষ সংক্রমিত কিংবা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েনি।

জন্স হপকিন্স ইউনিভার্সিটি সূত্রে উদ্বেগজনক এ তথ্য জানিয়ে বলা হয়েছে, টেস্টিং বেড়েছে, তবে সংক্রমণের হার কমেনি। এ যাবত যত আমেরিকান করোনায় আক্রান্ত হয়েছে তার ২৫% গত ২২ দিনে হলো। গত সপ্তাহে আগের সপ্তাহের চেয়ে ২৫% বেড়েছে সংক্রমণের হার। অর্থাৎ করোনার দ্বিতীয় ঢেউ কঠিন এক পরিস্থিতিতে নিপতিত করছে সারা আমেরিকার জনজীবনকে।
সিডিসি কর্তৃক করোনা পজিটিভ টেস্টের সর্বোচ্চ হার ৫% নির্ধারণ করা হয়েছে। সেটি অতিক্রম করলেই মনে করতে হবে যে তা মহামারিতে পর্যবসিত হয়েছে। কভিড ট্র্যাকিং প্রজেক্টের তথ্য অনুযায়ী ৫০ স্টেটের ৪৪টিতেই সে হার অতিক্রান্ত হয়েছে। ৩ নভেম্বরের নির্বাচনে ট্রাম্পের কারণে অনেকেই মাস্ক ব্যবহার করেননি। অনুসরণ করেননি সামাজিক দূরত্ব। যার পরিণতী ভোগ করতে হচ্ছে আক্রান্ত হয়ে।

রবিবার পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী মোট এক কোটি ২২ লাখ আমেরিকান করোনায় সংক্রমিত হয়েছে। এরমধ্যে মারা গেছে ২ লাখ ৫৬ হাজার ৬৩৮ জন।

জন্স হপকিন্স ইউনিভার্সিটির গবেষকরা উল্লেখ করেছেন, টেস্টে সাধারণত: তারাই অংশ নিচ্ছেন যাদের মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হবার আলামত পরিলক্ষিত হচ্ছে। এরবাইরে আরো অনেক মানুষ আছেন যারা সংক্রমিত হলেও আলামত অনুধাবনে সক্ষম হচ্ছেন গুরুতর আকার ধারণ করলে। অর্থাৎ টেস্টেও রেজাল্টই সত্যিকারের কোন সংখ্যা নয়। এজন্যে সিডিসি (সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এ্যান্ড প্রিভেনশন)’র পক্ষ থেকে সর্বসাধারণের প্রতি উদাত্ত আহবান জানানো হয়েছে, থ্যাঙ্কসগীভিং ডে (২৬ নভেম্বর বৃহস্পতিবার) উপলক্ষে কেউ যেন কোন অনুষ্ঠানের আয়োজন না করেন।

আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবের বাড়িতে বেড়াতে যেতেও মানা করা হয়েছে। এমনকি কলেজ/ভার্সিটির ছাত্র-ছাত্রীরাও যেন বাসায় ফেরার আগে করোনা টেস্ট এবং প্রয়োজন হলে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনের প্রস্তুতি নেয়।

এমন অবস্থায় আরো উদ্বেগজনক তথ্য প্রকাশ করেছে নিউইয়র্ক টাইমস। রবিবার এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে তারা উল্লেখ করেছে, করোনায় গুরুতরভাবে অসুস্থদের শ্বাস-প্রশ্বাসে সহায়তার জন্যে অতি প্রয়োজনীয় এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে তৈরী ভেন্টিলেটরের সংকট না থাকলেও সেগুলো যথাযথভাবে ব্যবহারের জন্যে অপারেটরের সংকট চলছে। করোনাভাইরাসের প্রকোপ দেখা দেয়ার পর জুন পর্যন্ত এই বিশেষ যন্ত্রটির সংকট নিয়ে তোলপাড় হয় সারা আমেরিকা তথা গোটাবিশ্বে।

ভেন্টিলেটর থাকলে মৃত্যুর সংখ্যা ৬৫% কমানো যেত বলেও অভিমত পোষণ করেন চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা। আর এখন ঘটছে উল্টো। বিপুল পরিমাণের ভেন্টিলেটর তৈরী করা হয়েছে। তবে সেগুলো ব্যবহারের জন্যে প্রশিক্ষিত অপারেটর পাওয়া যাচ্ছে না।
প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত এপ্রিল থেকে এ যাবত দুই লাখের বেশী ভেন্টিলেটর তৈরী করা হয়েছে এবং সেগুলো বিভিন্ন স্থানের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অর্থাৎ সিট অনুযায়ী ভেন্টিলেটর রয়েছে আক্রান্ত প্রায় প্রতিটি এলাকার হাসপাতালেই। তবে অপারেটরের অভাবে সেগুলো ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না। এ অবস্থায় চিকিৎসকরা বিকল্পভাবে রোগীর শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়ার চেষ্টা করছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *