ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক : ইরাকে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস জানিয়েছে, ইরানের সাথে উত্তেজনার কারণে দেশটির সব অস্থায়ী কর্মকর্তাদের ইরাক থেকে দেশে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে স্টেট ডিপার্টমেন্ট। এ ছাড়াও স্থানীয় সময় গত রবিবার মার্কিন দূতাবাস থেকে মার্কিন নাগরিকদের ইরাকে ভ্রমণ না করার আহ্বান জানানো হয়।
দেশ ছাড়া নির্দেশটি প্রথমে প্রকাশিত হয় দূতাবাসের ওয়েবসাইটে। এর আগে গত সপ্তাহে ওয়াশিংটন জানায়, তারা ইরান ও দেশটির মিত্রদের কাছ থেকে আমেরিকায় ও তাদের স্বার্থকে লক্ষ্য করে হামলার হুমকি পেয়েছে।
স্টেট ডিপার্টমেন্ট জানায়, ইরাকে যাওয়া বা বসবাস করা সকল সাধারণ নাগরিকের ভিসা বাতিল করা হবে। কারণ ইরাকে অবস্থান করা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের জরুরি সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। বিবৃতিতে ইরাকে আবস্থান করা নাগরিকদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাণিজ্যিক পরিবহনে ইরাক ছাড়ার কথাও বলা হয়।
গত সপ্তাহেই উপসাগরীয় অঞ্চলে যুদ্ধ জাহাজ এবং যুদ্ধ বিমান মোতায়েন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যেমের খবর অনুযায়ী, পারস্য উপসাগরে পরপর কয়েকটি জাহাজে রহস্যজনক হামলার পিছনে জড়িত ইরান। অবশ্য এ ধারণার পক্ষে কোনো তথ্যপ্রমাণ দেওয়া হয়নি। আর এরই জেরে সেখানে মোতায়েন করা হয়েছে মার্কিন নৌবাহিনী। এর ফলে ফের ঘাত প্রতিঘাতের মুখে দাঁড়িয়ে ইরান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
এই উত্তেজনার মধ্যে ইরাকের করাজধানী বাগদাদ সফর করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। ইরাকে তিনি বলেন, এই সফর ছিলো ইরাক সরকারের প্রতি মার্কিন সমর্থন বৃদ্ধি করা। সফরের সময় তিনি জানান, ইরাকে অবস্থান করা মার্কিন নাগরিকদের রক্ষা করতে সম্ভব সকল ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া দরকার।
মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন-ইরান উত্তেজনার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরিমি হান্ট। তিনি বলেন, এই ধরনের উত্তেজনায় যুক্তরাজ্যের নাগরিকরা উদ্বিগ্ন।
জেরিমি হান্ট বলেন, মার্কিন-ইরান উত্তেজনা প্রকট আকার ধারণ করছে। আমরা এই ঘটনায় খুবই উদ্বিগ্ন। তাদের উত্তেজনা কমাতে আমাদের একটা সময় দরকার।
বর্তমানে রাশিয়া সফররত মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমেরিকা চায় ইরান যেন একটি ‘স্বাভাবিক দেশের’ মতো আচরণ করে। তার দেশ ইরানের সাথে কোন যুদ্ধ চায় না।
এছাড়াও তিনি সতর্ক করে বলেন, আমেরিকার স্বার্থে আঘাত হানলে তারা সমুচিত জবাব দেবে।
রাশিয়া সফরকালে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্গেই ল্যাভরভের সাথে বৈঠক করেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। এসময় তিনি ল্যাভরভকে জানায়, নীতিগতভাবে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সাথে কোন যুদ্ধ চায় না।
ইতোমধ্যে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ আলী খামেনি যুদ্ধের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ইরান এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কোন যুদ্ধ হবে না।
দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত এক বক্তব্যে তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের সাথে যে পরমাণু চুক্তি বাতিল করেছেন সেটির বদলে ভিন্ন কোনো চুক্তির বিষয়ে আমেরিকার সাথে কোন আপোষ করবে না ইরান।
গত সোমবার ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি দেশটির ধর্মীয় নেতাদের সাথে এক বৈঠক করেছেন। সে বৈঠকে রুহানি বলেন, ইরানকে ভয় দেখানোর সাধ্য কারো নেই। ইরান এ সংকট কাটিয়ে উঠবে এবং মাথা উঁচু করে টিকে থাকবে।
সূত্র: মেট্রো, বিবিসি