অনলাইন ডেস্ক : ইসলামে সব বৈধ পেশা স্বীকৃত। তবে একটি পেশার কথা কোরআন ও হাদিসে যত বেশিবার উচ্চারিত হয়েছে, তা অন্য কোনো পেশার ক্ষেত্রে হয়নি। সেটা হলো ব্যবসা। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ ঈমানকে ব্যবসার সঙ্গে তুলনা করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা, আমি কি তোমাদের এমন একটি ব্যবসার সন্ধান দেব, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে মুক্তি দেবে? তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ঈমান আনবে এবং জীবন ও সম্পদ দিয়ে আল্লাহর পথে জিহাদ করবে। এটা তোমাদের জন্য কল্যাণকর, যদি তোমরা জানতে।’ (সুরা সফ, আয়াত : ১০-১১)
এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা ঈমান ও জিহাদের মতো গুরুত্বপূর্ণ আমলকে ব্যবসার সঙ্গে তুলনা করেছেন। কোরআনের এমন আয়াত পেশা হিসেবে ব্যবসার মর্যাদা প্রমাণ করে। কিন্তু এই মর্যাদা কেন এবং তা কাদের জন্য, সেটা ভেবে দেখা দরকার। আল্লাহ ব্যবসাকে মর্যাদা দিয়েছেন, কারণ এর মাধ্যমে মানবসেবা সবচেয়ে বেশি হয়। মানুষের দৈনন্দিন জীবনের চাকা সচল থাকে ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে। অর্থ ও পণ্যের বিনিময় না হলে মানুষের জীবনের চাকা থেমে যেত। যারা সত্যিকার অর্থে মানুষের কল্যাণে ব্যবসা করবে ও সততার সঙ্গে ব্যবসা করবে, রাসুলুল্লাহ (সা.) সেসব ব্যবসায়ীকে ‘নবী ও সিদ্দিক’দের কাতারভুক্ত বলেছেন। এর বিপরীতে যারা অসততার আশ্রয় নেবে, আল্লাহ কোরআনে তাদের অভিশপ্ত হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। ব্যবসা সম্মানজনক পেশা, তবে একশ্রেণির ব্যবসায়ীর জন্য ব্যবসা অসম্মানের বিষয়ে পরিণত হচ্ছে। যেমন নিন্দার্থে বলা হয়, ‘ব্যাবসায়িক’ মনোভব। এটা পরিহার করতে হবে।
রমজান মানুষকে পরিশুদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানায়। সব পেশা ও শ্রেণির মানুষের জন্য রমজানও আত্মশুদ্ধি অর্জনের মাস। সুতরাং তারা ‘ব্যাবসায়িক’ মনোভব পরিহার করে মানবসেবার নিয়ত করতে পারে। মানুষের জীবনযাত্রা বোঝায় পরিণত না করে তারা তাদের সহযোগী হতে পারে। মানবসেবার নিয়তে সততার সঙ্গে ব্যবসা করা ‘ইবাদত’। রমজানে প্রতিটি ইবাদতের মতো এ ইবাদতেরও বিনিময় আল্লাহ বাড়িয়ে দেন। সুতরাং ব্যবসায়ীরা তা থেকে বঞ্চিত না হয়।
লেখক : অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা