অনলাইন ডেস্ক : বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে ফাইনালে শ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ে গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামকে ৫ রানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের খুলনা। শিরোপা জয়ে ফাইনালে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন খুলনা অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।
শুক্রবার মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টের ফাইনালে মাহমুদুল্লাহদের দেওয়া ১৫৬ রানের জবাবে ১৫০ রানেই থামে চট্টগ্রামের ইনিংস।
এর আগে ১৫৬ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে ৩.৩ ওভারে দলীয় ২৬ রানে ফেরেন ওপেনার সৌম্য সরকার। ইমরুল কায়েসের হাতে ক্যাচ দিয়ে নতুন জীবন পেয়েও এক বলের ব্যবধানে শুভাগত হোমের বলে এলবিডব্লিউ হন চট্টগ্রামের এই তারকা ওপেনার।
ওয়ান ডাউনে খেলতে নেমে সুবিধা করতে পারেননি অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন। আগের দুই ম্যাচে ৫৩ ও ৩৪ রান করা এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান এদিন ফেরেন মাত্র ৭ রানে। টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ ৩৯৩ রান করা ওপেনার লিটন এদিন ফেরেন ২৩ বলে ২৩ রান করে।
৫১ রানে সৌম্য, মিঠুন ও লিটনের উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে যাওয়া দলকে খেলায় ফেরাতে চেষ্টা করেন সৈকত আলী ও শামসুর রহমান শুভ। এ জুটিতে ৪৫ রান করে আউট হন শামসুর রহমান। সাজঘরে ফেরার আগে ২১ বলে ২৩ রান করেন জাতীয় দলে অনিয়মিত হয়ে যাওয়া এই তারকা ক্রিকেটার।
৯৬ রানে চার উইকেট পতনের পর মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে সঙ্গে নিয়ে লড়াই চালিয়ে যান সৈকত আলী।
জয়ের জন্য শেষদিকে ৩০ বলে চট্টগ্রামের প্রয়োজন ছিল ৫৭ রান। ১৬তম ওভারে মাশরাফি বিন মুর্তজাকে এক ছক্কা হাঁকিয়ে ১০ রান আদায় করে নেন সৈকত। ১৭তম ওভারে আল আমিন খরচ করেন মাত্র ৭ রান।
১৮ বলে প্রয়োজন ছিল ৪০ রান। শহীদুলের করা ওভারে ১১ রান নেন সৈকত আলী। জয়ের জন্য শেষ ১২ বলে প্রয়োজন ছিল ২৯ রান। ১৯তম ওভারের প্রথম পাঁচ বলে ৭ রান নেন মোসাদ্দেক-সৈকত আলী।
জয়ের জন্য ৭ বলে প্রয়োজন ছিল ২২ রান। ওই ওভারের শেষ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ব্যবধান কমান মোসাদ্দেক। জয়ের জন্য শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৬ রান। শহিদুলের প্রথম বলে সিঙ্গেল নেন সৈকত আলী। দ্বিতীয় বলে ডাবল রান নেন মোসাদ্দেক হোসেন। তৃতীয় বলে ক্যাচ তুলে দেন মোসাদ্দেক হোসেন।
জয়ের জন্য শেষ তিন বলে প্রয়োজন ১৩ রান। চতুর্থ বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন সৈকত আলী। অথচ তার ব্যাটে ভর করে জয় দেখেছিল চট্টগ্রাম। জয় থেকে মাত্র ১৩ রান দূরে থাকতে আউট হয়ে ফেরেন তিনি। তার আগে ৪৫ বলে ৫৩ রান করেন সৈকত আলী। তার বিদায়ের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামের পরাজয় নিশ্চিত হয়ে যায়। শেষ দুই বলে প্রয়োজন ছিল ১৩ রান। পঞ্চম বলে সিঙ্গেল নেন নাদিফ। শেষ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে পরাজয়ের ব্যবধান কমান নাহিদুল ইসলাম।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের প্রথম বলেই জহরুল ইসলাম অমির উইকেট হারায় খুলনা। এরপর জাকির হাসান (২৫) ও ইমরুল কায়েসও (৮) খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি। তবে সেখান থেকেই আরিফুল হক ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ দলের রানের চাকা সচল রাখতে সচেষ্ট হন। যদিও আরিফুল (২১) ইনিংস দীর্ঘ করতে পারেননি।
তবে শেষদিকে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ব্যাট চালিয়ে রান তোলার চেষ্টা করেন। তবে অন্যপ্রান্তের ব্যাটসম্যানরা যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেননি। শুভাগত হোম (১৫), শামিম হোসেন (০), মাশরাফি বিন মর্তুজা (৫) ব্যর্থ হলে অল্প রানেই থামার শঙ্কা ভর করে খুলনা শিবিরে। তবে ওই অবস্থায়ও ৩৯ বলে অর্ধশতক তুলে নেন মাহমুদুল্লাহ। শেষ পর্যন্ত রিয়াদ ৪৮ বলে ৮টি চার ও ২টি ছক্কায় ৭০ রান করে অপরাজিত থাকেন।
চট্টগ্রামের নাহিদুল ইসলাম ও শরিফুল ইসলাম ২টি, মোসাদ্দেক হোসেন ও মুস্তাফিজুর রহমান ১টি করে উইকেট নেন।