পাট ও পাট পণ্যের উৎপাদন ও ভ্যন্তরীন ব্যবহার বৃদ্ধি এবং পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন-২০১০ প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন জোরদার করণ উপলক্ষে কুষ্টিয়ায় উদ্বুদ্ধকরণ সভা

স্টাফ রিপোর্টার : গতকাল ডিসি কোর্ট সম্মেলন কক্ষে সকাল ১১:০০ টার সময়  পাট ও পাট পণ্যের উৎপাদন ও ভ্যন্তরীন ব্যবহার বৃদ্ধি এবং পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন-২০১০ প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন জোরদার করণ উপলক্ষে কুষ্টিয়ায় উদ্বুদ্ধকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় সভপতি করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট লুৎফুন নাহার, পরিচালনা করেন মুখ পরিদর্শক সোহরাব উদ্দিন বিশ^াস। এ সময় বিভিন্ন পাট ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।

 সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে প্রাকৃতিক তন্তুর প্রতি সচেতনতা বৃদ্ধি, সিনথেটিকের পরিবর্তে প্রাকৃতিক তন্তুর পণ্যসামগ্রী ব্যবহারে উদ্বুদ্ধকরণে বিশ্বব্যাপী প্রচারণা বাংলাদেশের সোনালি আঁশ পাটের বহুমুখী ব্যবহারের সম্ভাবনাকে নতুনভাবে আশার আলো দেখায়। এভাবেই স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলার পাট প্রাকৃতিক তন্তু হিসেবে শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ রাখতে সক্ষম হয়। এর ধারাবাহিকতায় বর্তমানে জেডিপিসির নিবন্ধিত ৭০০ জন উদ্যোক্তা এখন ২৮০ ধরনের বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদন করে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাজারে বিপণনের মাধ্যমে পাট খাতে এক নতুন মাত্রা সংযোজন করেছেন। তাদের উৎপাদিত বহুমুখী পাটপণ্যের স্থানীয় বাজার যেমন ব্যাপক, তেমনি আন্তর্জাতিক বাজারে এ দেশের বহুমুখী পাটপণ্যের চাহিদা ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে বহুমুখী পাটপণ্যের অভ্যন্তরীণ বাজারের বিষয়ে আলোকপাত করলে দেখা যায়, ছয়-সাত বছর আগেও অভ্যন্তরীণ বাজারে পাটের তৈরি চালের বস্তা ও সুতলি ছাড়া তেমন কোনো বহুমুখী পাটপণ্যের বাজার গড়ে ওঠেনি। গত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় প্রায় ১০০ কোটি টাকার বহুমুখী পাটপণ্যের বাজার সৃষ্টি হয়েছে।  

পাটপণ্যের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের নান্দনিক ব্যাগ, সেমিনার ফাইল ও প্রমোশনাল পণ্য, নানা ধরনের গৃহস্থালি, বাহারি সাজসজ্জায় ব্যবহূত পণ্যসামগ্রী অন্যতম। উল্লেখ্য, গত পাঁচ-ছয় বছরে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে অর্থনৈতিক মন্দা, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও যুদ্ধ-বিগ্রহের বিরূপ প্রভাবে প্রচলিত পাটপণ্যের ব্যবহার সংকুচিত ও স্থবির হলেও ধারাবাহিকভাবে বছরে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ বহুমুখী পাটপণ্যের বাজার সম্প্রসারণের মাধ্যমে গত বছর প্রায় ৭০০ কোটি টাকার বহুমুখী পাটপণ্য রফতানি হয়েছে। দৈনন্দিন জীবনের ব্যবহূত পণ্যসামগ্রী, যেমন বিভিন্ন প্রকার ব্যাগ (ল্যাপটপ, স্কুল, লেডিস স্পোর্টস, ওয়াটারক্যারি, মোবাইল, পাসপোর্ট, ভ্যানিটি, শপিং, গ্রোসারি, সোল্ডার, ট্রাভেল, সুটকেস, ব্রিফকেস, হ্যান্ড ও মানিব্যাগ), হোম টেক্সটাইল (বেড কভার, কুশন কভার, সোফা কভার, কম্বল, পর্দা, টেবিল রানার, টেবিল ম্যাট, কার্পেট, ডোর ম্যাট, শতরঞ্জি), পরিধেয় বস্ত্র (ব্লেজার, ফতুয়া, কটি, শাড়ি) ছাড়াও সরকারি ও বেসরকারি সংস্থায় অফিস অ্যাকসেসরিজ হিসেবে ফাইল ফোল্ডার, পেনহোল্ডার, কার্ডহোল্ডার, টিস্যুবক্স, টেলিফোন ইনডেক্স, ডায়েরি, প্যাড, ভিজিটিং কার্ড ইত্যাদির চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং এর অধীন দপ্তর/সংস্থায় অফিস ব্যবহার্য হিসেবে পাটের তৈরি পণ্য ব্যবহার হচ্ছে, যা সবার জন্য একটা অনুসরণীয় উদাহরণ হয়ে উঠেছে। সরকারের অন্যান্য দপ্তর/সংস্থাও এ উদাহরণ অনুসরণ করতে শুরু করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *