ভ্যাট গোয়েন্দা দল রাজধানীর গুলশানে আবাসিক ফ্ল্যাটে অবস্থিত বিদেশি পণ্যের অনলাইন শপিং প্লাটফর্ম ‘আরাজ’ এ অভিযান চালিয়েছে। এতে ভ্যাট আইন পরিপালন না করে ব্যবসা পরিচালনা করার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
ভ্যাট গোয়েন্দার অনুসন্ধানে গোয়েন্দারা দেখতে পান, ভ্যাট নিবন্ধন ছাড়াই রাজধানীর গুলশানে অবস্থিত আরাজ অনলাইনে বিদেশি পণ্যের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। স্থানীয় গুলশান ভ্যাট সার্কেলে এই অনলাইন ব্যবসার ভ্যাট জমার কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।
এক ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে ভ্যাট গোয়েন্দার দল ২৭ ডিসেম্বর অভিযানটি করে। সংস্থার উপ-পরিচালক নাজমুন নাহার কায়সার এতে নেতৃত্ব দেন। প্রতিষ্ঠানটি হলো মেসার্স আরাজ ট্রেডিং। ঠিকানাঃ হাউস-১২, রোড-৩০, গুলশান-১, ঢাকা। এর মালিকের নাম সাজ্জাদ আলী শরীফ।
অভিযোগকারী ঐ ব্যক্তি জানান, ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে কতিপয় ব্যবসায়ী অনলাইনে পণ্য বিক্রি করায় শোরুমের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি আরো জানান, এতে প্রতিযোগিতামূলক ব্যবসার পরিবেশ ক্ষুন্ন হচ্ছে। অভিযানে ঐ আবাসিক ঠিকানায় গোয়েন্দারা তাদের ভ্যাট নিবন্ধন দেখতে পায়নি। সংশ্লিষ্ট ভ্যাট সার্কেলে যাচাই করে দেখা যায়, ঐ সার্কেলে বিগত মাসগুলোতে প্রতিষ্ঠানটি কর্তৃক কোন রিটার্ন জমা হয়নি।
প্রতিষ্ঠানটি বিগত ৩ বছর ধরে অনলাইনে অলংকার, মহিলাদের পোশাক ও অন্যান্য পণ্যের ব্যবসা পরিচালনা করছে। প্রতিষ্ঠানটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে থাকে। বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে এই অনলাইন ব্যবসার উপস্থিতি লক্ষ্যণীয়।অভিজাত এলাকার বাসায় তারা দীর্ঘদিন ধরে দামি ও এক্সক্লুসিভ বিদেশি পণ্য বিক্রি করছে।
অনুসন্ধানে আরো দেখা যায়, আরাজ এর অধিকাংশ পণ্যই পাকিস্তানের তৈরি। ব্যাগেজ ও পার্সেলে এসব পণ্য এনে বাসায় বসে তারা অনলাইনে বিক্রি করছে। তবে ভ্যাট আইন অনুযায়ী, নিবন্ধন না নিয়ে এবং কোন মাসিক রিটার্ন জমা না দিয়ে এই ব্যবসা পরিচালনা করা সম্পূর্ণভাবে অবৈধ। বিদেশ থেকে আনীত এসব পণ্যের তারা যথাযথ শুল্ককর দিয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখবে ভ্যাট গোয়েন্দার দল।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি ২টি ব্যাংক এ্যাকাউন্টের মাধ্যমে পণ্য বিক্রির লেনদেন সম্পন্ন করছে। ইতোমধ্যে ভ্যাট গোয়েন্দা সংশ্লিষ্ট ঐ ২টি ব্যাংক কর্তৃপক্ষের নিকট ব্যাংক হিসাব তলব করেছে। এই হিসাব আমলে নিয়ে পরবর্তীতে ভ্যাট ফাঁকির পরিমাণ নির্ধারণ করা হবে।
অন্যদিকে, গোপন অনুসন্ধানে জানা যায়, এ জাতীয় আরও অনেক প্রতিষ্ঠান অনলাইনে ব্যবসা করছে যারা ভ্যাটের আওতায় নেই। এ পর্যন্ত এরকম ১৬ টি প্রতিষ্ঠানের সন্ধান পেয়েছে গোয়েন্দারা। ভ্যাট আইন অনুসারে এসব প্রতিষ্ঠানর বিরুদ্ধে ভ্যাট গোয়েন্দা কঠোর পদক্ষেপ নিবে।
এসব প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে আরও তথ্য সংগ্রহ করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।