পুলিশ বাহিনীকে দুর্নীতিমুক্ত করতে শুদ্ধি অভিযান চলছে : আইজিপি

অনলাইন ডেস্ক : পুলিশ বাহিনীকে দুর্নীতিমুক্ত করতে শুদ্ধি অভিযান চলছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ।

 

শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টাস অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) আয়োজিত বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, আগামীতে দেশের অর্থনীতিসহ সব দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের এ অগ্রযাত্রায় আমাদের সব ক্ষেত্রেই শুদ্ধতা দরকার। তাই আমরা নিজেদের ঘরের ভেতর থেকেই শুদ্ধি অভিযান শুরু করতে চাই। আমরা চেষ্টা করছি আগে নিজেদের ঘরকে শুদ্ধ করতে দুর্নীতি মুক্ত করতে। আমাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

 

তিনি বলেন, পুলিশ সদস্যরা যদি পুলিশের বাইরে গিয়ে দায়িত্বের ঊর্ধ্বে থেকে কোনো অপকর্ম করে, তবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে আমাদের মনোভাব অত্যন্ত কঠোর। বাংলাদেশ পুলিশের লক্ষ্য হচ্ছে অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলা ব্যত্যয়ে শূন্য সহিষ্ণুতা।

 

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মাদক প্রসঙ্গে আইজিপি ড. বেনজীর বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে আমরা কঠোরভাবে কাজ করছি। পুলিশের মধ্যে যদি কোন মাদকসেবী থাকে তাহলে তাকে বাহিনী থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছে। আমরা পুলিশ সদস্যদের ডোপ টেস্ট করছি। এর মধ্যে পুলিশের সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ডোপ টেস্ট করা হচ্ছে। আমরা আমাদের ঘর পরিচ্ছন্ন করতে চাই। এছাড়াও কেউ মাদক সেবন কারেন না কিন্তু মাদকের সঙ্গে জড়িত। এমন পুলিশ সদস্যদের চিহ্নিত করে তাদেরও চাকরিচ্যুত করা হচ্ছে। এক্ষেত্রেও আমরা শূন্য সহিষ্ণুতা বাস্তবায়ন করতে চাই।

 

আইজিপি বলেন, শুরুতে মোটিভেশনাল অ্যাক্টিভিটিস এবং ডিসিপ্লিন নিয়ে কাজ করছি। আর দ্বিতীয় হচ্ছে পুলিশ ‘ব্রুটালিটি’ বা নিষ্ঠুরতা আমরা চাই না। আমরা চাই না পত্রপত্রিকায় ও পুলিশ ব্রুটালিটি নিয়ে খবর ছাপা হোক। আমরা খবর হতে চাই না।

 

তিনি বলেন, পুলিশের কাছে অসংখ্য আইনগত ক্ষমতা রয়েছে। যেখানে আইনগত ক্ষমতা রয়েছে তাহলে কেন পেশী শক্তি ব্যবহার করতে হবে। মাথা ও বিবেকের শক্তি, আইনের শক্তি প্রয়োগ করতে হবে। কেন পেশী শক্তি…….? রাষ্ট্র অসংখ্য আইনের ক্ষমতা দিয়ে রেখেছে সুতরাং পেশী শক্তি প্রয়োগের দরকার নেই। শারীরিক ক্ষমতা সেই প্রয়োগ করে, যার মানসিক ক্ষমতা নেই, আইনগত ক্ষমতা নেই এবং বুদ্ধির ক্ষমতা নেই। পুলিশ এ থেকে বেরিয়ে আসতে চায় এবং তা নিয়ে কাজ করছে বলে।

 

তিনি আরও বলেন, ভালো কাজের উৎস্য চাই এবং যে সদস্য খারাপ কাজ করবেন তা বস্তুনিষ্ঠভাবে তুলে ধরবেন সাংবাদিকরা তাও চাই।

 

আইজিপি বলেন, গতকালও একটি প্রতিবেদন দেখেছি কিন্তু তথ্যগুলো সঠিক ছিল না। কিন্তু সমস্যা হলো এ আপনি যখন একটি জিনিস ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে দেখে ফেলেন -তখন বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ দেখেন বাংলাদেশের বাহিরে প্রচুর মানুষ দেখেন। যখন আপনি লিখেন তখন কোটি কোটি মানুষ তা পড়েন। বিচারের আগে বিচার করবেন না। অনেক সময় আমরা দেখি যে বিচারের আগেই বিচার শেষ।

 

সাংবাদিকরা কোটি কোটি মানুষকে মোটিভেটেড করতে পারে উল্লেখ করে আইজিপি আরও বলেন, আপনি ওপেনিয়ন বিল্ডার, ওপেনিয়ন বিল্ড করা অনেক কঠিন কাজ। সবাই তা করতে পারেন না। সাংবাদিকরা ওপেনিয়ন বিল্ড করেন। যেহেতু আপনারা ওপেনিয়ন বিল্ডার মুহূর্তের মধ্যে কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ে প্রবেশ করতে পারেন সেজন্য আপনাদের কলমের যে শক্তি সে শক্তি সম্পর্কে পুরোপুরি সচেতন থাকবেন এটাই আমরা প্রত্যাশা করি।

 

সভায় উপস্থিত ছিলেন র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, ক্র্যাব এর সভাপতি আবুল খায়ের, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বিকু প্রমুখ। এছাড়া সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ক্র্যাবের সদস্যরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *