কুষ্টিয়া জেলার ভেজাল আইসক্রীম কারখানা কত গুলো ?

কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি : কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং এলাকায় অবস্থিত রুচি সুপার আইসক্রীম। কুষ্টিয়া সদর উপজেলার দূর্বাচারা বটতলা সিমা আইসক্রীম ফ্যাক্টরী, ভাদালিয়া বাজারের পাশে অবস্থিত লাকি আইসক্রিম ও কুমারখালী উপজেলার বাঁশগ্রাম বাজারের জনতা ব্যাংকের পাশে সাগরিকা আইসক্রীম ফ্যাক্টরি,সেরকান্দী নিউ রুচি আইসক্রীম ফ্যাক্টরী । বড়বাজার এলাকায় নাম বিহীন আইসক্রীম , কুমারখালী আমতলা এলাকায় প্রাণ আইসক্রিম ফ্যাক্টরী ও আশা আইসক্রিম ফ্যাক্টরী,লালন আইসক্রীম, কয়া ইউনিয়নে একটি সহ অজানা আরো অনেক আইসক্রীম কারখানা কুষ্টিয়া জেলায় রাতারাতি তৈরী হয়েছে। তাই এযুগের সাধারন মানুষের কাছে একটাই প্রশ্ন কুষ্টিয়া জেলার আদী ব্যবসা কি , ভেজাল আইসক্রীম ফ্যাক্টরী ব্যবসা ?


আইসক্রীম ফ্যাক্টরি গুলোর কোনটিরও বিএসটিআই এর অনুমোদন নেই। নেই কোন পরিবেশ ছাড়পত্র ও ফায়ার সার্ভিসের ছাড়পত্র। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরী করা হচ্ছে আইসক্রীম ।নোংড়া ও দুর্গন্ধ পরিবেশে তৈরী করা হচ্ছে নামে বেনামে বিভিন্ন আইসক্রীম। আইসক্রীমে ব্যবহার করা হচ্ছে ক্ষতিকর কেমিক্যাল ও রং। যা মানব দেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। আইসক্রীমের ব্যানার লাগানো কয়েকটি অবৈধ গাড়ীতে কুষ্টিয়ার বিভিন্ন এলাকায় এই আইসক্রীম বিক্রি করা হচ্ছে। এই বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তরের কুষ্টিয়া সহকারী পরিচালক সেলিমুজ্জামান বলেন , নিয়মিত ভেজাল বিরোধী অভিযান করছি এবং আইসক্রিম ধ্বংশ সহ বিভিন্ন অংকের জরিমানা আদায় করা হচ্ছে। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।


আইসক্রীম সম্পর্কে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ তাপস কুমার সরকার বলেন, এই আইসক্রীম খেলে শিশুদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের উপসর্গ দেখা যায়। মানবদেহে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে যেমন লিবার সিরোসিশ ,ডাইরিয়া,আমাশয়,জ্বর,শিশুদের নিউমোনিয়ার মত ভয়াবহ রোগ হতে পারে । 
প্রতিষ্ঠান গুলোর তৈরীকৃত আইসক্রীম তৈরীতে গরুর দুধসহ কিছু পুষ্টি উপাদানের কথা বলা হলেও কারখানায় এসবের কোন অস্থিতই মিলেনি।

প্রশাসনের ভুমিকা: ঈদের আগে প্রাণ আইসক্রিম ফ্যাক্টরী ও আশা আইসক্রিম ফ্যাক্টরীতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে। এ সময় প্রাণ আইসক্রিম ফ্যাক্টরীর মালিক পালিয়ে যাওয়ায় ফ্যাক্টরীটি সীলগালা করে বন্ধ করা দেওয়া হয় এবং আইসক্রিম তৈরীতে টেক্সটাইল কালার, অনুমোদিত ও মানবস্বাস্থ্যের জন্য ঝুকিপুর্ণ ক্যামিকেল ব্যবহার করায় এসিল্যান্ড মোহাম্মদ নূর-এ-আলম মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে আশা আইসক্রিম ফ্যাক্টরীকে ২০,০০০/- (বিশ) হাজার টাকা অর্থদন্ড প্রদান করেন। এ সময় কারখানার সকল আইসক্রিম, কাঁচামাল, এবং অন্যান্য পন্য এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে ধ্বংস করা হয়। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর কুষ্টিয়ার সহকারী পরিচালক মো.সেলিমুজ্জামান সদর উপজেলার ভাদালিয়া বাজারের পাশে অবস্থিত লাকি আইসক্রিমের মালিককে নোংরা পরিবেশ ও কেমিক্যাল রঙ দিয়ে ও আইসক্রিম তৈরি করার অপরাধে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯-এর ৪৩ এবং ৫০ ধারা মোতাবেক ৪০ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হয়েছে।কুষ্টিয়ায় বি,এস,টি,আই, অনুমোদন না নিয়ে ও অস্বাস্থ্যকর নোংরা পরিবেশে ফ্যাক্টরিতে আইসক্রিম তৈরি করে বাজারজাত করার অভিযোগে রুচি সুপার আইসক্রীম প্রতিষ্ঠানকে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা ও বিপুল পরিমান আইসক্রীম ধ্বংস করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তর।


বিএসটিআই এর পরীক্ষায় ৫২ টি পণ্যের মান নিম্নমানের হওয়ায় মহামান্য হাইকোটের নিদের্শনার প্রেক্ষিতে প্রশাসনের সকল দপ্তর যেখানে নিরলস কাজ করছে সেখানে কোন অর্থদন্ড ,শাস্তি বা বাধা মানছেন না এসকল ভেজাল আইসক্রিম ফ্যাক্টরী মালিকরা । বর্তমানে যে সকল ভেজাল খাদ্য দ্রব্য বাজারে বিক্রি হয় তার মূল ক্রেতা আমাদের শিশু বা সন্তান । আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ তাই ভেজাল মানে ভবিষ্যৎ ধংস করা । বর্তমানে মানুষ জিম্মি এদের কাছে, তাই প্রশাসনের কাছে দেশ ও জাতীর আকুল আবেদন ,এ সকল ভেজাল আইসক্রীম,ভেজাল খাবার প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *