কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপারকে ‘কথায় নয় কাজে দক্ষ হতে’ বলেছেন হাইকোর্ট

অনলাইন ডেস্ক :

সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে ‘দুর্ব্যবহারের’ ঘটনায় কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপারকে ‘কথায় নয়, কাজে দক্ষ হতে’ বলেছেন হাইকোর্ট। সোমবার (২৫ জানুয়ারি) সকালে নিজের ব্যাখ্যা দিতে সশরীরে হাইকোর্টে উপস্থিত হলে এসপি এস এম তানভীর আরাফাতকে আদালত এ কথা বলেন। হাইকোর্টের বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এসপির ব্যাখ্যার শুনানি করেন।

 এ সময় আদালত বলেন, মানুষ যেন পুলিশি রাষ্ট্র মনে না করে সেটি মাথায় নিয়ে দায়িত্ব পালন করবেন। আপনাকে কাজে দক্ষ হতে হবে কথায় নয়। আপনারা মানুষের নিরাপত্তা দেবেন। কেউ যেন পুলিশের কাছে অনিরাপদ বোধ না করে। পুলিশকে কথায় নয়, কাজে পটু হতে হবে। পুলিশ যাতে মানুষের বন্ধু হয় সেটা করতে হবে। কে কোন দল, আদর্শ সেটা বিবেচনা করার দায়িত্ব পুলিশের নয়। সমাজকে শান্তিপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে যেতে হবে। আইনের শাসন, বিচার ব্যবস্থা একা পূর্ণাঙ্গতা পায় না। রাষ্ট্রের সব অঙ্গ এক সঙ্গে কাজ করতে হবে। জুডিশিয়ালির মর্যাদা রক্ষা করা সবার দায়িত্ব বলেও মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।

সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এসপি এস এম তানভীর আরাফাত হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে এসে উপস্থিত হন। সকাল ১০ টা ৫০ মিনিটে আদালতে শুনানি শুরু হয়। এতে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হন এসপি তানভীরের পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী মুনসুরুল হক চৌধুরী।

গতকাল রবিবার (২৪ জানুয়ারি) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আইনজীবীর মাধ্যমে দুর্ব্যবহারে অভিযোগের বিষয়ে অনুতপ্ত হয়ে আদালতের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন করেন কুষ্টিয়ার এসপি এসএম তানভীর আরাফাত।

আবেদনে তিনি বলেছেন, তিনি ম্যাজিস্ট্রেটকে চিনতে পারেননি। তাই এমন অনিচ্ছাকৃত ভুল হয়েছে। ভবিষ্যতে তিনি দায়িত্ব পালনে আরও সতর্ক হবেন। এ ধরনের ভুল আর কখনো হবে না।

আবেদনে তিনি আরও বলেন, বিচার বিভাগের জন্য আমার মনে সর্বোচ্চ সম্মান রয়েছে। কোনো অবস্থাতেই বিন্দুমাত্র অসম্মান দেখানোর কথা দূরে থাক, বরং বিচার বিভাগের দেয়া কাজে নিয়োজিত হতে পারলে নিজেকে সম্মানিত বোধ করি। এ ঘটনায় আমি মনের গভীর থেকে অনুতপ্ত। এ জন্য আদালতের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করছি।

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা পৌরসভা নির্বাচনে দায়িত্বরত এক জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে ‘দুর্ব্যবহারের’ ঘটনায় এসপি তানভীরকে তলব করেছিলেন হাইকোর্ট। এছাড়া আদালত অবমাননার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *