‘ভাতে’ মারতে চায় ইরানকে, যুক্তরাষ্ট্র!

অনলাইন ডেস্ক: ইরানের ওপর ফের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র—এটি পুরোনো খবর। নতুন তথ্য হচ্ছে, ইরানে ব্যবসা করা থেকে মার্কিন কোম্পানিগুলোকে বিরত রাখার পাশাপাশি ইউরোপীয় অঞ্চলের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপরও পরোক্ষভাবে চাপ সৃষ্টি করছে যুক্তরাষ্ট্র। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য থেকে ইরানকে স্রেফ মুছে ফেলার চেষ্টা চলছে। এভাবে অর্থনৈতিক সংকটে ফেলে ইরানকে নতজানু করাই ডোনাল্ড ট্রাম্পের লক্ষ্য। তাতে ইরানের সাধারণ মানুষ যত ক্ষতিগ্রস্তই হোক না কেন, কিচ্ছু যায়–আসে না!
৫ নভেম্বর ইরানের ওপর পুনরায় নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। মুখে বলা হচ্ছে, ইরানের পরমাণু অস্ত্র তৈরির অভিলাষ সমূলে উচ্ছেদ করাই এর কারণ। স্বাভাবিকভাবেই হিসাব এত সরল নয়। এর সঙ্গে জড়িত ভূরাজনীতি। আছে আদর্শগত জটিল অঙ্ক ও ক্ষমতা বিস্তারের মার্কিন উচ্চাকাঙ্ক্ষা। আরব বিশ্বে নিজেদের একাধিপত্য নিশ্চিত করতে ইরানকে ভাতে মারার বিকল্প নেই যুক্তরাষ্ট্রের।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, বিশ্বে তেলের সবচেয়ে বড় রপ্তানিকারক দেশগুলোর মধ্যে ইরান অন্যতম। নিউজউইক জানাচ্ছে, বিশ্বের বৃহৎ রপ্তানিকারক অর্থনীতির দেশের তালিকায় ৪৯তম ইরান। পরিশোধিত ও অপরিশোধিত—দুই ধরনের তেলই রপ্তানি করে দেশটি। গাড়ি উৎপাদন ও গাড়ির যন্ত্রাংশ তৈরির শিল্পেও এগিয়ে হাসান রুহানির দেশ। এই শিল্প খাতে কয়েক শ কোটি ডলারের বিনিয়োগ আছে। ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির হিসাব অনুযায়ী, দেশটি বহির্বিশ্বে সোনা ও অলংকার রপ্তানি করে থাকে। এ খাতে বছরে ১০০ কোটি ডলারেরও বেশি আয় করে ইরান। নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এরই মধ্যে হুংকার দিয়েছেন। টুইট বার্তায় তিনি সাফ বলে দিয়েছেন, ইরানের সঙ্গে যে ব্যবসা করবে, সে যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসা করতে পারবে না। বিশ্লেষকেরা ধারণা করছেন, যেসব বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান এই নির্দেশ অমান্য করবে, তাদের ওপর পরোক্ষ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে যুক্তরাষ্ট্র। শাস্তি দেওয়া হবে তাদের। কেউ কেউ অবশ্য ভাবছেন, এসব হুমকি-ধমকি স্রেফ ভয় দেখানো! তবে অতীত ঘটনা কিন্তু তার ইঙ্গিত দেয় না। এর আগে ২০১৫ সালে, ইরানসহ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ব্যবসা করায় ফরাসি ব্যাংক ‘বিএনপি পারিবাস’-কে নয় বিলিয়ন ডলার জরিমানা করেছিল
ইরানের পরমাণু কর্মসূচি যেন অস্ত্র তৈরির দিকে না যায় এবং এই কর্মসূচি সীমিত করার বিনিময়ে দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। তখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ছিলেন বারাক ওবামা। তাঁর আমলের অন্যতম কূটনৈতিক সফলতা হিসেবে ইরানের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তিকে বিবেচনা করা হয়। অথচ ক্ষমতায় আসার আগে থেকেই এই চুক্তিকে ডাস্টবিনে ছুড়ে ফেলার হুমকি দিয়ে আসছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। শেষতক সেটিই করে দেখান তিনি। চুক্তি থেকে সরে এসে ইরানের ওপর পুরোমাত্রায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। অথচ পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) বলছে, ইরানের কাজকর্মে চুক্তি ভঙ্গের মতো কিছুই ছিল না!
ব্রিটিশ সাময়িকী ইকোনমিস্ট বলছে, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ইউরোপীয় বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর সরাসরি প্রযোজ্য নয়। কিন্তু পরোক্ষভাবে হুমকি সৃষ্টি করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, যারা ইরানের সঙ্গে ব্যবসা করবে, তারা যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসা করতে পারবে না, আর্থিক জরিমানাও করা হতে পারে। ইউরোপীয় বহুজাতিক কোম্পানিগুলো ইরানের পাশাপাশি মার্কিন বাজারেও পণ্য আমদানি-রপ্তানি করে থাকে। এখন ইরানের সঙ্গে ব্যবসা করায় যদি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ঢোকা না যায়, তবে বড় ধরনের লোকসানের মুখোমুখি হতে হবে প্রতিষ্ঠানগুলোকে। এই ভয় থেকেই অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে ইরান থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছে। যেমন: ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ ও এয়ার ফ্রান্স তেহরানে ফ্লাইট আনা-নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। ফরাসি জ্বালানি কোম্পানি টোটাল ও জার্মান প্রকৌশল প্রতিষ্ঠান সিমেন্স বলে দিয়েছে, ইরানে আর প্রকল্প নয়।বড় সমস্যায় পড়েছে ইরানের আমদানি-রপ্তানি খাত। দেশটির ব্যাংক খাতেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। ফলে, আন্তর্জাতিক লেনদেনের ব্যবস্থা থেকে বিযুক্ত হয়ে গেছে ইরান। আমদানি-রপ্তানির জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক লেনদেন আর করা যাচ্ছে না। ওয়াশিংটন পোস্ট জানাচ্ছে, মানবিক সাহায্য, জীবন রক্ষাকারী ওষুধ ও বিভিন্ন ওষুধ তৈরির কাঁচামাল আমদানিতেও বেকায়দায় পড়েছে ইরান। যদিও যুক্তরাষ্ট্র মুখে বলছে, এসব আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা নেই; কিন্তু প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নিয়মকানুনে তার প্রতিফলন নেই। ফলে, ওষুধ রপ্তানি করলেও অনেক ইউরোপীয় প্রতিষ্ঠানকে শাস্তি দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের আইনজীবী হিসেবে কাজ করেন অ্যালান এন্সলেন। ওয়াশিংটন পোস্টকে তিনি বলেন, ‘আপনি জানেন না, কখন আপনাকে লক্ষ্যে পরিণত করা হবে। গতকাল যেটি সত্যি ছিল, আজ তা মিথ্যে হয়ে যাচ্ছে।’ তাঁর মতে, যুক্তরাষ্ট্রের এমনতর হুমকির মুখে ব্যাপক ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে বহুজাতিক কোম্পানি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে।
অর্থনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, গত কয়েক দিনের মধ্যেই অনেক বিদেশি ব্যাংক ইরানের সঙ্গে লেনদেনে আপত্তির কথা জানিয়ে দিয়েছে। পর্যবেক্ষকদের মতে, এতে করে ভয়ংকর বিপদে পড়বেন ইরানের আমদানিকারকেরা। দেশটির ওষুধ, খাদ্যসহ বিভিন্ন খাতে তীব্র সংকট তৈরি হতে পারে। দেখা দিতে পারে মানবিক বিপর্যয়। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানাচ্ছে, এরই মধ্যে ইরানে জীবন রক্ষাকারী ওষুধের দাম কয়েকগুণ বেড়ে গেছে।অন্ধকার নেমে এসেছে ইরানের অটোমোবাইল শিল্পেও। বিবিসি জানিয়েছে, জার্মানির ফক্সওয়াগন ও ফ্রান্সের রেঁনো দেশটি থেকে নিজেদের গুটিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। ওদিকে যুক্তরাষ্ট্র স্পষ্ট করেই বলে দিয়েছে, ইরানের তেল রপ্তানির সব পথ বন্ধ করে দিতে চায় তারা। ভারতীয় কোম্পানি রিলায়েন্সের তেল শোধনাগার আছে এবং তাতে এত দিন ইরানের অপরিশোধিত তেলই ব্যবহার করা হতো। কিন্তু মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রভাবে এখন আর রিলায়েন্স ইরান থেকে তেল নিচ্ছে না। ওদিকে তেল-গ্যাস সম্পর্কিত অবকাঠামো তৈরি করতে জেনারেল ইলেকট্রিক দেশটির সঙ্গে যে চুক্তি করেছিল, সেটিও বাতিলের পথে। আর উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং বলছে, চাইলেও ইরান পাবে না কোনো বিমান।
বিজনেস ইনসাইডার বলছে, সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞায় সবচেয়ে বড় ঝামেলায় পড়বে ইরানের তরুণেরা। এখনই দেশটিতে বেকারত্বের হার প্রায় ১২ দশমিক ১ শতাংশ, মোট ৩০ লাখ ইরানি বেকার। তরুণদের মধ্যে বেকারত্বের হার প্রায় ২৫ শতাংশ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিষেধাজ্ঞার কারণে দেশি-বিদেশি কর্মক্ষেত্র আরও সংকুচিত হবে। ফলে বেকারত্বের হার আরও বাড়বে। গত সেপ্টেম্বরে ইরানের পার্লামেন্টের এক প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলা হয়েছে, ক্রমবর্ধমান বেকারত্বের হার দেশটির স্থিতাবস্থাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে। কারণ, বেকারত্ব নিয়ে তরুণদের মধ্যে বিপুল ক্ষোভ জমা হয়ে আছে। ধারণা করা হচ্ছে, বর্তমান পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে বেকারত্বের হার ২৬ শতাংশে পৌঁছাতে পারে।
ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক কখনোই মধুর ছিল না। বরাবরই সাপে-নেউলে সম্পর্ক দুই দেশের। এবার তা জটিল রূপ নিয়েছে। অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ইরানকে সর্বোচ্চ চাপে রাখতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র। এভাবে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির কর্মসূচি থেকে ইরানকে সরিয়ে আনতে চায় ট্রাম্প প্রশাসন। গাজায় হামাস ও লেবাননের হিজবুল্লাহর মতো গোষ্ঠীকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে হাসান রুহানির সরকার। এটি একেবারেই পছন্দ নয় সৌদি আরব তথা যুক্তরাষ্ট্রের।
যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, ইরানের কিছু ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান সন্দেহজনক লেনদেনে জড়িত। এসব প্রতিষ্ঠান সন্ত্রাসে মদদ দিচ্ছে এবং বিধ্বংসী অস্ত্র তৈরিতে অর্থায়ন করছে। এগুলো বন্ধের জন্যও নিষেধাজ্ঞা প্রয়োজন। বিশ্লেষকেরা বলছেন, মূলত আরব বিশ্বের রাজনীতিতে একাধিপত্য বিস্তার করতেই এত অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্রের। সৌদি আরবের মাধ্যমে আরব বিশ্বে ছড়ি ঘোরানোর জন্যই ইরানকে দুর্বল করতে চায় ট্রাম্প প্রশাসন।
ইরানের পাশে দাঁড়াবে ইউরোপ?
ইরানের জন্য আশার কথা হচ্ছে, ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করার চিন্তা করছে ইউরোপ। ইকোনমিস্ট বলছে, নতুন নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী ইরান থেকে কোনো পরিমাণ অর্থ বিশ্ববাজারে ঢুকতে বা বের হতে পারছে না। এই বিষয়টি মাথায় রেখেই নতুন কৌশল অবলম্বনের চেষ্টা করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। সংস্থাটি এক বিবৃতিতে বলেছে, ইরানের সঙ্গে বৈধ বাণিজ্য অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে ইউরোপের প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বাধীনতা রক্ষায় তারা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
ইইউ বলছে, ইরানের সঙ্গে বাণিজ্য অব্যাহত রাখার জন্য স্পেশাল পারপাস ভেহিকল (এসপিভি) নামের একটি ব্যবস্থা চালু করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এই পদ্ধতিতে এসপিভি একটি ব্যাংকের মতো ভূমিকা রাখবে। ইরানের সঙ্গে সরাসরি আর্থিক লেনদেন এড়িয়ে করা হবে পরোক্ষ লেনদেন। সে ক্ষেত্রে যখন কোনো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ইরানের লেনদেনের প্রয়োজন হবে, তখন তা হবে এসপিভির মাধ্যমে। এটি একদিকে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর অর্থ পরিশোধ করবে, অন্যদিকে ইরানের পাওনা অর্থও গ্রহণ করবে। ফলে অর্থ লেনদেনের জন্য মার্কিন ব্যবস্থা ব্যবহারের প্রয়োজনই হবে না। আবার কোনো ইউরোপীয় প্রতিষ্ঠান যদি মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, থাকবে তা পূরণের ব্যবস্থাও।সমস্যা হলো—প্রায় ছয় মাস আগে আমেরিকা নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিলেও এসপিভি এখনো পরিকল্পনার পর্যায়েই আছে। মার্কিন হুমকির সামনে সাহস করে কোনো দেশই এসপিভি চালু করার ঝুঁকি নিচ্ছে না। সুতরাং এর বাস্তবায়ন নিয়ে ধোঁয়াশা কাটছে না।
এমন বহুমাত্রিক মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মুখে কত দিন ইরান টিকে থাকতে পারবে—সেটি একটি বড় প্রশ্ন। নিন্দুকেরা বলছেন, অর্থনৈতিক চাপে ফেলে ইরানে অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করাই যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্য। এভাবেই ইরানকে কোণঠাসা করে নতজানু দেশে পরিণত করতে চায় মার্কিন সরকার।
ওদিকে ইরানও চুপ নেই। দেশটির প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি এরই মধ্যে আরব অঞ্চলের জনগণকে মার্কিনবিরোধী হতে আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘এতে কোনো সন্দেহ নেই যে ইরানের বিরুদ্ধে নতুন চক্রান্তে যুক্তরাষ্ট্র সফল হতে পারবে না। কারণ তারা ধীরে ধীরে পশ্চাদপসরণ করছে।’ইউরোপ বাদে ইরানের বড় সহায় কারা? উত্তর: চীন ও রাশিয়া। নিউজউইকের হিসাব অনুযায়ী, ইরানের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার হলো চীন। রাজনৈতিক মেরুকরণের কারণে রাশিয়াও দেশটির প্রতি সহানুভূতিশীল। বিশ্লেষকেরদের মতে, বাণিজ্য ঘাটতি পূরণে এখন সি চিন পিং ও ভ্লাদিমির পুতিনের দিকে তাকিয়ে থাকা ছাড়া ইরানের সত্যিই কোনো গতি নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *