সোনা চুরি সাড়ে ১৯ কেজি : রাজস্ব কর্মকর্তা গ্রেপ্তার

বেনাপোল প্রতিনিধি :

যশোরের বেনাপোল কাস্টম হাউজের গোডাউনের ভোল্ট থেকে সাড়ে ১৯ কেজি সোনা চুরির মামলায় আরো একজন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তাকে আটক করেছে সিআইডি পুলিশ। আরশাদ হোসেন নামে ওই কর্মকর্তাকে গত শনিবার সন্ধ্যায় সর্বশেষ কর্মস্থল মুন্সীগঞ্জ এলাকা থেকে আটক করা হয়।

ইতোপূর্বে তিনি বেনাপোল কাস্টম হাউজের গোডাউন ইনচার্জের দায়িত্বে ছিলেন। আটক আরশাদ হোসেন বরিশাল জেলার মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার অশ্বিকাপুর গ্রামের আজিজুল হকের ছেলে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশ যশোরের পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম জানান, সোনা চুরির মামলায় ইতোপূর্বে বেনাপোল কাস্টম হাউজের গোডাউনে বিভিন্ন সময় কর্মরত চারজন ইনচার্জকে (সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা) আটক করা হয়েছে। তাদের আদালতে দেওয়া জবানবন্দির তথ্যের ভিত্তিতে আরশাদ হোসেনকে আটক করা হয়। রবিবার তাকে যশোরের আদালতে সোপর্দ করা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।

সিআইডির দাবি, ঘটনার আগে আটক আরশাদ হোসেন ওই ভোল্টের ইনচার্জ ছিলেন। ওই সময় তার কাছেই চাবি থাকত। এ ছাড়া সোনা চুরি হওয়ার পরও লকারের তালা অক্ষত থাকায় আরশাদ ঘটনার সাথে জড়িত থাকতে পারে বলে সন্দেহ হয়।

মামলার সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ৭ নভেম্বর রাত ৮টা থেকে ১১ নভেম্বর সকাল ৮টার মধ্যে যেকোনো সময় বেনাপোল কাস্টম হাউজের পুরাতন ভবনের দ্বিতীয় তলার গোডাউনের তালা ভেঙে ভেতরে ঢোকে চোরেরা। এরপর গোডাউনের ভেতরে থাকা ভোল্ট চাবি দিয়ে খুলে চোরেরা ১৯ কেজি ৩১৮ দশমিক ৩ গ্রাম সোনা চুরি করে নিয়ে যায়। যার মূল্য ১০ কোটি ৪৩ লাখ ১৭ হাজার ৩৬২ টাকা। এই ভোল্টের চাবি থাকতো সর্বশেষ ইনচার্জ সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা শাহিবুলের কাছে।

এছাড়া গোডাউনের বিভিন্ন লকারে সোনাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র ছিল। সেগুলো ছিল অক্ষত। ঘটনার সময় সিসি ক্যামেরা বন্ধ ছিল রহস্যজনক কারণে।

বিষয়টি জানাজানি হলে কাস্টম হাউজের রাজস্ব কর্মকর্তা এমদাদুল হক অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে বেনাপোল পোর্ট থানায় মামলা করেন। একই সাথে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ গোডাউন ইনচার্জ শাহিবুলকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। পরে পুলিশ বরখাস্ত গোডাউন ইনচার্জ শাহিবুলকে সোনা চুরির মামলায় আটক করে। পরবর্তীতে সাবেক গোডাউন ইনচার্জ বিশ্বনাথ কুন্ডুসহ আরো তিন কর্মকর্তাকে আটক করে তদন্ত সংস্থা সিআইডি পুলিশ।

সর্বশেষ গত শনিবার সন্ধ্যায় আটক করা হয় সাবেক গোডাউন ইনচার্জ সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা আরশাদ হোসেনকে। এনিয়ে গোডাউনে বিভিন্ন সময় দায়িত্বে থাকা পাঁচ কর্মকর্তাকে আটক করা হলো। তাকেও রিমান্ডে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *