‘স্বর্ণের নদী মহাকাশ থেকে তোলা ছবি প্রকাশ করলো নাসা’

অনলাইন ডেস্ক :

 

এল ডোরাডো। কাল্পনিক এই সোনার শহরকে নিয়ে তৈরি হয়েছে কত লোককথা। কিন্তু স্বর্ণের নদী? এ কথা কে কবে শুনেছে? তবে এমন জায়গা যে পৃথিবীতে রয়েছে, তার সন্ধান দিল নাসা। তবে এই নদী কিন্তু বাস্তবে স্বর্ণের নদী নয়। এই ধারণার সঙ্গে অনেকটা ‘স্বর্ণের কেল্লা’র মিল রয়েছে। যা আদতে স্বর্ণের নয়, কিন্তু তার রং স্বর্ণের মতোই।

 

জানা গেছে, আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন সম্প্রতি একটি ছবি পাঠিয়েছে। নাসা সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছে। ছবিটি পৃথিবীর ফুসফুস আমাজন জঙ্গলের। সেখানেই ‘স্বর্ণের নদী’র খোঁজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। গত বছর ২৪ ডিসেম্বর এই ছবিটি তোলা হয়।

ছবিতে দেখা গেছে, আমাজনের রেইন ফরেস্টের মধ্যে স্বর্ণের রঙের কিছু রেখা। ঠিক যেন জঙ্গল ফুঁড়ে বয়ে গেছে কোনও ‘স্বর্ণের নদী’। যেখানে এই স্বর্ণের নদীর ছবি রয়েছে সেটি পেরু প্রদেশে। কিন্তু আসলে এগুলো কী? স্বর্ণের নদীর বাস্তবতা স্বর্ণের শহরের মতোই নেই। তাহলে ছবিতে যেগুলো দেখা যাচ্ছে সেগুলো কী?

 

উত্তর দিয়েছেন বিজ্ঞানীরাই। তারা বলেছেন, ওই ছবি আসলে জঙ্গল ধ্বংসের ফল। পেরুর পূর্ব দিকে স্বর্ণের অনুসন্ধান চলে। আর তার জন্য বেআইনিভাবে খননকার্য চালানো হয়। নাসার এক মহাকাশচারি নিকন D5 ক্যামেরার সাহায্যে এই ছবি তুলেছেন। অবৈধভাবে খোঁড়া ওই খনিগুলোর ছবিই উঠেছে ক্যামেরায়। তার উপর সূর্যের আলো পড়ে চকচক করছে। ওই গর্তগুলোকে একসঙ্গে থাকার কারণে ছবিতে তাকে স্বর্ণের নদীর মতোই দেখাচ্ছে। পেরুর দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের মাদ্রে দ্যা দিয়স এলাকা যে যথেচ্ছভাবে বনভূমি ধ্বংস করা হয়েছে, এই ছবিই তার প্রমাণ।

লাটিন আমেরিকায় পেরু সবচেয়ে বেশি স্বর্ণ রপ্তানি করে। এই দেশের মাদ্রে দ্যা দিয়স অঞ্চলে প্রচুর স্বর্ণখনি রয়েছে। আর এই অঞ্চলে অবৈধভাবে স্বর্ণের খনির জন্য খননকার্য চলায় ক্ষতি হচ্ছে জীববৈচিত্র্যের। কারণ স্বর্ণের জন্য পারদ ব্যবহৃত হচ্ছে আর সেই কারণে ছড়াচ্ছে বিষক্রিয়া।

 

বনভূমির এই অঞ্চলে বানরসহ একাধিক বন্য পশু দেখা যায়। এছাড়া হয়েছে হরেক রকমের প্রজাপতিও। কিন্তু পারদের ব্যবহারের ফলে আজ তারা বিপন্ন। ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে এনিয়ে একটি গবেষণা প্রকাশিত হয়েছি। সেখানে জানানো হয়েছিল ২০১৮ সালে পেরুর এলাকার আমাজন অরণ্যে ২২ হাজার ৯৩০ একর বনভূমি ধ্বংস করেছে স্বর্ণসন্ধানীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *