রিফাত হত্যাকারীদের তালিকা সীমান্তে, বেনাপোলে সতর্কতা

এবিএস রনি,(যশোর) : বরগুনায় স্ত্রীর সামনে প্রকাশ্য দিবালোকে স্বামী রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা মামলার আসামিরা যাতে দেশ থেকে ভারতে পালিয়ে যেতে না পারে সেজন্য যশোরের বেনাপোল ও শার্শা উপজেলার বিভিন্ন সীমান্তে জারি করা হয়েছে সর্বোচ্চ সতর্কতা। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে শনিবার (২৯ জুন) বিকাল থেকে এই সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করে ইমিগ্রেশন পুলিশ, থানা পুলিশ ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

সতর্কতা জারির বিষয়টি বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ, থানা পুলিশ ও বিজিবি কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছেন।

শনিবার বিকালে বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনে গিয়ে দেখা যায়, সতর্কতার কারণে বহিরাগতদের ইমিগ্রেশন ভবনে প্রবেশ নিষেধ রয়েছে। পাসপোর্টের ছবির সঙ্গে যাত্রীর চেহারা ও ফিঙ্গার প্রিন্ট মিলিয়ে তবেই ভারতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে সীমান্ত এলাকা ঘুরেও বিজিবির বাড়তি সতর্কতা চোখে পড়ে। সন্দেহ হলেই বিজিবি সদস্যরা সীমান্তে বিভিন্ন প্রয়োজনে চলাচলকারী মানুষজনদের ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাশার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, পুলিশের এসবি (স্পেশাল ব্রাঞ্চ) থেকে একটি নির্দেশনায় রিফাত হত্যা মামলার আসামিরা যাতে বেনাপোল ইমিগ্রেশন হয়ে ভারতে যেতে না পারে সেজন্য সতর্ক থাকতে নির্দেশ দিয়েছে। সতর্কতার সঙ্গে প্রতিটি পাসপোর্টযাত্রীর পাসপোর্ট মেশিনে পরীক্ষা করা হচ্ছে। ফলে রিফাত হত্যার আসামিদের বেনাপোল চেকপোস্ট ব্যবহার করে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

পাসপোর্টধারী যাত্রীদের ছবি, নাম-ঠিকানাসহ যাবতীয় সবকিছু তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে ভারতে যাওয়ার অনুমতি প্রদান করা হচ্ছে।

যশোর ৪৯ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল সেলিম রেজা জানান, সীমান্ত পথে যাতে রিফাত হত্যাকারীরা কোনোভাবে ভারতে পালাতে না পারে, এজন্য ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষ তাদেরকে আসামিদের তথ্য পাঠিয়েছেন। বিজিবি সদস্যরা সতর্ক অবস্থায় আছে। সীমান্ত পথে পালাতে গেলেই তারা ধরা পড়বে।
খুলনা ২১ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল ইমরান উল্লাহ সরকার জানান, সিসি ক্যামেরার মাধ্যমেও সীমান্তে চলাচলকারী লোকজনের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। সন্ধ্যার পরপরই যাতে কেউ সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে বিজিবির টহল ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে।
গত বুধবার সকাল ১০টায় বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করে রিফাত শরীফকে। স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি শত বাধা দিয়েও রক্ষা করতে পারেনি স্বামীকে। এ ঘটনায় রিফাত শরীফের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনকে অভিযুক্ত করে ও আরো ৫-৬ জনকে আসামি করে বরগুনা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এদিকে রিফাত হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার পটুয়াখালী থেকে আরেক সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *