কুষ্টিয়া প্রতিনিধি :
কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী রেল লাইনে দুর্ঘটনায় পড়া মালট্রেন উদ্ধার কাজ তৎপরতা শুরু হয়েছে। রাত ১০টা/১১টার দিকে উদ্ধারকাজ সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন পাকসী বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক মো. শাহীদুল ইসলাম।
এ কারণে পোড়াদহ-গোয়ালন্দ এবং রাজশাহী-টুঙ্গীপাড়া রুটের চারটি ট্রেনের যাত্রা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে সোয়া ১টার দিকে কুষ্টিয়া বড় রেল স্টেশনের সন্নিকটে মিলপাড়ায় মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে রেলের নির্মাণ সরঞ্জাম বহনকারী চারচাকার পুশ ট্রলির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। কিছুদূর ঠেলে আনার পর ট্রলিটি মালবাহী ট্রেনের ইঞ্জিনের নিচে চলে যায়। আটকে যায় ষষ্ঠ বগিতে। ৬ থেকে ১০ নং পর্যন্ত ৫টি বগি দুমড়ে মুচড়ে লাইনচ্যূত হয়ে যায়।
ঘটনাস্থলে কথা হয় সাহেদা খাতুনের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমি শব্দ পাই, দৌড়ে বাইরে এসে দেখি ট্রেন টাল খেতে খেতে এসে থেমে গেল। আরেক প্রত্যক্ষদর্শী রফিকুল ইসলাম বলেন, ওই সময় খুব শব্দ হচ্ছিল, আর মাটি কাপছিল ভূমিকম্পের মতো।
ট্রেনটির চালক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এই জায়গাটিতে আশপাশে যেভাবে ঘরবাড়ি রয়েছে তাতে সামনে কী আছে ভালোমতো দেখা যায় না। তাছাড়া ট্রলি আসবে আমার কাছে এমন কোন তথ্য ছিলো না। ট্রলিটি প্রথমে ধাক্কা লাগে তারপর আর আমি কিছু বুঝতে পারিনি। এরপর আস্তে আস্তে থামিয়ে দিই। পরে বুঝলাম ট্রলিটি চাপা খেয়ে ইঞ্জিনের নিচ দিয়ে ঢুকে যায়। তিনি বলেন, ট্রেনটি চাপাইনবাবগঞ্জের সীমান্ত এলাকা রহনপুর থেকে আসছিল। বগিগুলোতে ভারতীয় গম বোঝাই করা। এটি ফরিদপুর যাওয়ার কথা।
এদিকে বিকেল ৪টা ৫০মিনিটে ইশ^রদি থেকে উদ্ধারকারী ট্রেন আসে। পাকসী বিভাগীয় রেল ব্যবস্থাপক মো. শাহীদুল ইসলাম বলেন, এরই মধ্যে শান্টিং এর কাজ শেষ হয়েছে। অর্থাৎ ভাল থাকা বগিগুলো টেনে এনে রাখা হয়েছে কুষ্টিয়া কোর্ট স্টেশনে। এখন চলছে রিরেল এর কাজ। সবমিলিয়ে রাত ১০টা থেকে ১১টা লাগতে পারে উদ্ধার কাজ শেষ হতে। শাহিদুল ইসলাম বলেন, উদ্ধার এবং দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করতে ৫ সদস্যের আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর প্রধান আছেন বিভাগীয় মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার আশীষ কুমার মণ্ডল। রেলওয়ের নিয়মানুযায়ী অন দ্যা স্পট তদন্ত রিপোর্ট নেয়া হবে।
তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পারি রেল বোঝাই পুশ ট্রলি মুল লাইনের ওপর তোলা হয়। এমনটি কথা ছিল না। এ কারণে পার্মানেন্ট ওয়ে ইন্সপেক্টর (পিডব্লিউআই) সাইফুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। রাজবাড়ীর দিকে রেলের সেকশনে কাজ করার জন্য এই রেল পুশ ট্রলিতে করে নেয়ার কথা ছিল।
পোড়াদহ-গোয়ালন্দ এবং রাজশাহী-টুঙ্গীপাড়া, টুঙ্গীপাড়া-খুলনা রুটে একটি এক্সপ্রেসসহ মোট ৪টি ট্রেন এই পথ দিয়ে দিনে ১০বার আসা যাওয়া করে।