কুষ্টিয়ার সঙ্গে ট্রেন চলাচল ২৭ ঘণ্টা পর স্বাভাবিক

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি :

 

কুষ্টিয়া বড় রেল স্টেশনের কাছে মিলপাড়ায় দুর্ঘটনায় পড়া মালট্রেনটি পুরোপুরি উদ্ধার করা হয়েছে। সংস্কার হয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত লাইন। শনিবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

শুক্রবার দুপুর সোয়া ১টায় মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে রেলের নির্মাণ সরঞ্জাম বহনকারী চার চাকার পুশ ট্রলির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ট্রেনের ধাক্কায় ট্রলিটি ভেঙেচুড়ে মালবাহী ট্রেনের ইঞ্জিনের নিচে চলে যায়। আটকে যায় ষষ্ঠ বগিতে। ৬ থেকে ১০ নং পর্যন্ত ৫টি বগি দুমড়ে মুচড়ে লাইনচ্যুত হয়ে যায়।ইশ^রদি থেকে উদ্ধারকারী ট্রেন ঘটনাস্থলে আসে শুক্রবার বিকেল ৪টা ৫০মিনিটে। প্রথমে পেছনের দিকের ১২টি বগি টেনে এনে রাখা হয় কুষ্টিয়া কোর্ট স্টেশনে। এরপর শুরু হয় ক্ষতিগ্রস্ত ও লাইনচ্যুত বগি উদ্ধারের কাজ। পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক মো. শাহীদুল ইসলাম বলেছেন, একেকটি করে বগি উঁচু করে তার চাকাসহ অন্য ক্ষতি মেরামত করা হয়। একই সঙ্গে মেরামত করতে হয় নিচের রেল লাইনও। প্রথম বগিটা তোলার পর বোঝা যায় এর নিচের রেল লাইনও বাজেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

 

লাইনের রেল এবং স্লিপার বদলে নতুন করে স্থাপন করতে হয়েছে। এ কারণে এতোটা সময় লেগে গেছে। সারারাত লাইট জালিয়ে কাজ করেছেন রেলের প্রকৌশলী ও শ্রমিকরা। অসুস্থ হয়ে বিশ্রামে চলে গেছেন অনেকেই। তাদের জায়গায় নতুন প্রকৌশলী ও শ্রমিকরা কাজ করেছেন।

 

শনিবার সকালে শুরু হয় ৬ষ্ঠ ও ৭ম বগি উদ্ধারের কাজ। এ দুটি বগির চাকা ভেঙে একেবারে অকেজো হয়ে পড়ায় তা রেলের ওপর দিয়ে টেনে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না। এ কারণে এ দুটিকে রেল লাইনের পাশে রেখে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। একেকটি বগিতে ১১০০ বস্তা (৬০ কেজি প্রতি বস্তা) গম বোঝাই আছে। এই দুটি বগির গম সরিয়ে নেয়ার কথা বলা হলে এর মালিক যশোরের নওয়াপাড়ার মিন্টু দত্ত কুষ্টিয়ার ব্যবসায়ী চিত্ত বাবুর কাছে বিক্রি করে দেন। চিত্ত বাবুর সুপারভাইজার মো. আনসার আলী বলেন, তাদের শ্রমিকরা দুটি বগি থেকে গমের বস্তাগুলো নামিয়ে নিয়েছেন। পরে ৭ম বগিটি রেল লাইনের পাশে একজনের বাড়ির আঙিনার মধ্যে রাখলেও ৬ষ্ঠটি উঁচু করে নিয়ে যাওয়া হয় বড় রেল স্টেশনে। এরপরই রেল লাইন ছেড়ে যান উদ্ধারকারী ট্রেন। আর ঠিক সেসময়ই দুই প্রান্ত থেকে ট্রেন চলাচলও শুরু হয়।

কুষ্টিয়া কোর্ট স্টেশনের মাস্টার এম এ জামান বলেছেন, এই ২৭ ঘণ্টায় অনেকগুলো ট্রেন বন্ধ রয়েছে। শুধুমাত্র টুঙ্গীপাড়া এক্সপ্রেস টুঙ্গীপাড়া থেকে ছেড়ে এসে দুর্ঘটনা স্থলের কাছে এসে শনিবার পৌনে ১১টার দিকে যাত্রী নামিয়ে দিয়েছে। যাত্রীদের হেটে কুষ্টিয়া শহরের দিকে চলে যেতে দেখা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *