বিদেশি শ্রমিক নিয়োগ নীতি পরিবর্তন করল সৌদি আরব

অনলাইন ডেস্ক :

 

বিদেশি শ্রমিকদের নিয়োগ বিষয়ক ‘কাফালা’ ব্যবস্থায় পরিবর্তন এনেছে সৌদি আরব। এখন থেকে দেশটিতে অবস্থানরত বিদেশি শ্রমিকরা তাদের নিয়োগকর্তার অনুমতি ছাড়াই চাকরি পরিবর্তন করতে পারবেন। উপসাগরীয় অঞ্চলের সবচেয়ে জনবহুল এই দেশটিতে সংস্কার শ্রম আইন কার্যকর হওয়ায় শ্রমিকরা এই সুবিধা পাবেন বলে রবিবার আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

 

শ্রমিকদের অধিকার লঙ্ঘন নিয়ে বহু বছরের বিতর্কের জেরে কর্মীদের কাফালা বা স্পন্সরশিপ ব্যবস্থা বাতিল করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। গত বছরের নভেম্বরে সৌদি আরবের মানবসম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয় ব্যাপক বিতর্কিত কাফালা ব্যবস্থায় সংশোধন আনার পরিকল্পনার ব্যাপারে ঘোষণা দেয়। এই কাফালা ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রবাসী শ্রমিকদের একক নিয়োগকর্তার অধীনে চাকরি করতে হতো। শুধু তাই নয়, নিয়োগকর্তা চাইলে রেসিডেন্সি বাতিল অথবা পুনর্নবায়ন এবং শ্রমিকদের কাজের স্থিতিও নির্ধারণ করতেন। এমনকি তাদের অনুমতি ছাড়া সৌদি আরবে আসা-যাওয়া করা যায় না। এককথায়, নিয়োগকর্তা শ্রমিকদের ভিসা ও আইনি অবস্থান নিয়ন্ত্রণ করতেন।

 

কাফালা ব্যবস্থা বাতিলের যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তাতে করে শ্রমিকদের সৌদি আরবে যাওয়া ও সেখান থেকে চলে আসার স্বাধীনতা থাকবে। এতে তাদের নিয়োগকর্তা বা স্পন্সরের অনুমোদন লাগবে না। এছাড়া সরকারি অনুমোদন ছাড়াই কাজে যোগ দিতে পারবেন শ্রমিকরা।

 

এ উদ্যোগটি সৌদি যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্বে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক সংস্কার। যুবরাজের ভিশন ২০৩০ উদ্যোগে সৌদি অর্থনীতিতে তেলনির্ভরতা কমিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। উপসাগরীয় দেশগুলোতে কাফালা ব্যবস্থা বাতিল নিয়ে দীর্ঘদিনে ধরেই আলোচনা হচ্ছে। এর মধ্যে কাতার এ ব্যবস্থায় কিছুটা সংস্কার এনেছে। দেশটিতে কর্মরত বিদেশি শ্রমিকরা নিয়োগকর্তার অনুমোদন ছাড়াই দেশত্যাগ করতে পারেন।

 

কাফালা ব্যবস্থা কয়েক দশকের পুরনো ব্যবস্থা। বিদেশি শ্রমিকদের নিয়োগ দিতে এ ব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল। এসব শ্রমিকের বেশিরভাগই দক্ষিণ এশিয়ার বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের নাগরিক। এ ব্যবস্থায় সৌদি নিয়োগ কর্তাদের হাতে শ্রমিকদের পুরো দায়িত্ব ন্যস্ত থাকে। কিন্তু এর সুযোগ নিয়ে সৌদি আরবে শ্রমিকদের নির্যাতনের অভিযোগ আছে তাদের নিয়োগকর্তাদের বিরুদ্ধে।

 

তবে সৌদি আরবের সংস্কারকৃত নতুন শ্রম আইন কার্যকর হওয়ায় প্রবাসী শ্রমিকরা এখন থেকে মেয়াদ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অনায়াসে চাকরি পরিবর্তন করতে পারবেন। এছাড়া শ্রমিকরা তাদের চুক্তির মেয়াদকালে চাকরি স্থানান্তর করতে পারবেন। তবে এ জন্য তাদের নিয়োগকর্তাকে একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে অবগত করতে হবে। এ ছাড়া যেসব শ্রমিককে কাজের চুক্তি দেওয়া হয় না অথবা বেতন থেকে বঞ্চিত রয়েছেন; তাদের জন্যও আইন করছে সৌদি আরব।

সূত্র: আলজাজিরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *