আজ বৃহস্পতিবার জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা উৎসব শুরু

সজীব কুমার নন্দী : সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় অনুষ্ঠান শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা উৎসব আজ ৪ জুলাই ২০১৯ (বৃহস্পতিবার) থেকে শুরু হচ্ছে। আগামী ১২ জুলাই উল্টো  রথযাত্রার মধ্য দিয়ে এ উৎসব শেষ হবে।

এ উপলক্ষে বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন এবং মন্দিরে নানা মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। রাজধানী ঢাকায় আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) রথযাত্রা উপলক্ষে ৯ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। 

প্রধান রথযাত্রা আগামী ৪ জুলাই দুপুর ৩টায় রাজধানীর স্বামীবাগ ইসকন মন্দির থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে গিয়ে শেষ হবে। উল্টো রথযাত্রা আগামী ১২ জুলাই দুপুর তিনটায় ঢাকেশ্বরী মন্দির হতে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে স্বামীবাগ ইসকন মন্দিরে এসে শেষ হবে।

প্রধান রথযাত্রাটি যেসব রাস্তা প্রদক্ষিণ করবেঃ

স্বামীবাগ রোডস্থ স্বামীবাগ আশ্রম (ইস্কন, ঢাকা) হতে-জয়কালি মন্দির মোড়-ইত্তেফাক মোড়-শাপলা চত্ত্বর-পূবালী পেট্রোল পাম্প-বক চত্ত্বর–রাজউক ক্রসিং-গুলিস্তান-গোলাপশাহ মাজার-পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স-সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল-ফজলুল হক হল-হাই কোর্ট মাজার- দোয়েল চত্ত্বর-কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার-জগন্নাথ হল-পলাশী–ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে এসে শেষ হবে।

নিরপাত্তা নির্দেশনাঃ

১। রথযাত্রা শুরুর স্থানে প্রবেশের আগে সকলকে আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টর ও হাত দিয়ে দেহ তল্লাশী করে রথযাত্রায় ঢুকতে দেয়া হবে। তল্লাশী ব্যতিত কোন অবস্থায় কাউকে রথযাত্রায় ঢুকতে দেয়া হবে না।

২। রথযাত্রায় ব্যাগ/প্যাক/ট্রলি ব্যাগ/ধাতব বস্তু (যেমন-ছুরি,কাস্তে, চাকু, লোহার রড ইত্যাদি) আনা যাবে না।

৩। রাস্তার মাঝে বিভিন্ন অলি গলি থেকে রথযাত্রায় প্রবেশ করা যাবে না।

৪। রথযাত্রায় কোন প্রকার লাঠি, তরবারি/তলোয়ার, বর্শা এবং আতশবাজির ব্যবহার করা যাবে না।

৫। রথযাত্রায় আগত কারো আচরন সন্দেহজনক মনে হলে তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে দায়িত্বরত পুলিশকে জানাতে হবে।

 রথযাত্রা ও  উল্টো রথযাত্রা উপলক্ষে নিরাপত্তা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্তে গত ২৭ জুন ২০১৯ বেলা ১১:০০টায় ডিএমপি’র ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কমিশনার মোঃ মনিরুল ইসলাম বিপিএম (বার), পিপিএম(বার) এর সভাপতিত্বে ডিএমপি সদরদপ্তরের ৩য় তলার সম্মেলন কক্ষে একটি সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

উক্ত সভায় উপরোক্ত নির্দেশনার বিষয়ে আলোচনা হয়। এছাড়াও সভায় জানানো হয়, রথযাত্রা সুষ্ঠু ও নিরাপত্তার স্বার্থে ইউনিফর্ম পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে ফোর্স মোতায়েন থাকবে এবং  রথযাত্রার প্রবেশস্থল ও আশেপাশে তল্লাশি চৌকি স্থাপন করে সন্দেহভাজন গাড়ি তল্লাশি করা, নারীদের নারী স্বেচ্ছাসেবক ও নারী পুলিশ দ্বারা তল্লাশির ব্যবস্থা করা হবে। রথযাত্রার পাশেপাশে প্রস্তুত রাখা হবে ফায়ার টেন্ডার ও এ্যা্ম্বুলেন্স। বিশেষ প্রয়োজনে প্রস্তুত থাকবে সোয়াট, ক্রাইম সিন ইউনিট ও বোম্ব ডিসপোসাল ইউনিট।

সভায় রথযাত্রা উপলক্ষে ধর্মপ্রাণ সনাতন ধর্মাবলম্বীরা যাতে ধর্মীয় সহমর্মিতা ও আনন্দঘন পরিবেশে এবং ধর্মীয় ভাব-গাম্ভীর্যের সাথে অনুষ্ঠান উদযাপন করতে পারে সেজন্য নিরাপত্তা সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সভাপতি সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

সভায় বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি মিলন কান্তি দত্ত, মহানগর সার্বজনিন পূজা কমিটির সভাপতি শৈলেন্দ্রনাথ মজুমদার, ইসকন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক চারুচন্দ্রদাস ব্রহ্মচারী ও হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃত্বৃন্দ এবং ডিএমপি’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ ও বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *