লকডাউনের সুফল পেতে হলে মানুষকে ঘরে থাকতে বাধ্য করতে হবে : এসপি খাইরুল আলম

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি :

 

 

 

 

 

 

 

লকডাউনের সুফল পেতে হলে মানুষকে ঘরে থাকতে বাধ্য করতে হবে এসপি খাইরুল আলম
রবিবার (৫ জুলাই) সকাল ১২ টায় কুষ্টিয়ায় সর্বাত্মক লকডাউনের ১৫ তম দিনে পুলিশ লাইন্স কুষ্টিয়া হতে মোটর গাড়ীতে লকডাউন বাস্তবায়ন ও করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধের ব্যানার ,স্টিকার লাগিয়ে এক বর্ণাঢ্য মোটর শোভাযাত্রার মাধ্যমে র্যালি বের হয়। পুলিশ সুপার মোঃ খাইরুল আলমের নের্তৃত্বে র্যালিটি কুষ্টিয়া মডেল থানা, কুমারখালী,ও খোকসা থানার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট প্রদক্ষিন করে।
পুলিশ সুপার কুষ্টিয়া কুমারখালী বাসস্ট্যান্ড ও খোকসা বাসস্ট্যান্ডে উপস্থিত সাংবাদিকদের চলমান লকডাউনে পুলিশের নেওয়া কর্মকান্ড বিষয়ে ব্রিফ করেন। এ সময় তিনি বলেন বাংলাদেশ পুলিশের সম্মানিত ইন্সপেক্টর জেনারেল মহোদয়ের নির্দেশনায় বাংলাদেশের সকল জেলা পুলিশ, মেট্রোপলিটন পুলিশসহ পুলিশের সকল ইউনিট করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সম্মুখ যোদ্ধা হিসেবে লকডাউন প্রতিপালন, স্বাস্থবিধি মেনে চলা , শারীরিক দূরত্ব মেনেচলা ও মাক্স পরা উদ্বুদ্ধকরনণের কাজ করে যাচ্ছে।পুলিশ সুপার খাইরুল আলম আরো বলেন, বর্তমানে করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ চলছে এবং ভারতের ডেল্টা ভেরিয়েন্ট বাংলাদেশে সনাক্ত হয়েছে যার সংক্রমণের মাত্রা উর্ধগতি ও মৃত্যুর হারও বেশী। এ কারণে দেশের মানুষের মঙ্গলের কথা চিন্তা করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশে সর্বাত্মক লকডাউন দিয়েছেন। কুষ্টিয়া জেলায় মটর শোভাযাত্রা র্যালির মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করা, লকডাউন বাস্তবায়নের মাধ্যমে মানুষকে ঘরে রাখতে বাধ্য করা ও সঠিক নিয়মে মাস্ক পরার অভ্যাস করানোই ছিল মূল উদ্দেশ্য। তিনি আরো বলেন, প্রত্যেকে ভ্যাক্সিনের আওতায় না আসা পর্যন্ত করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে আমাদের সঠিক নিয়মে মাক্স পরা যেতে হবে। এই মুহুর্তে স্বাস্থবিধি মেনে চলা ও মাস্কই করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে ভ্যাক্সিনের মত উপকারে আসবে।
বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে কুষ্টিয়ায় সর্বাত্নক লকডাউনের ১৫তম দিনে লকডাউন বাস্তবায়নে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোঃ খাইরুল আলমের নেতৃত্বে সাধারণ লোকদের ঘরে রাখতে জেলা পুলিশ কুষ্টিয়ার সকল সিনিয়র অফিসার ও ফোর্সের মধ্যে কঠোর ভাবে কড়া নজরদারি করার প্রবনতা লক্ষ্য করা গেছে।কুষ্টিয়া জেলার সাত থানার সীমান্তবর্তী ও পৌর এলাকার চেকপোস্টে কঠোর ভাবে পুলিশি নজরদারী থাকায় আন্তঃজেলা ও আভ্যন্তরীণ সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় শহরের ব্যস্ততম সড়ক গুলোতে দেখাগেছে শুনশান নিরবতা। এ সময়ে অকারনে কেউ বাইরে বের হলেও তাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে আবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কুষ্টিয়ায় সর্বাত্মক লকডাউন কার্যকর করতে জেলার সীমান্তবর্তী স্থানে চেকপোস্টে ডিউটি পালনের জন্য বাঁশ বেধে কড়া পুলিশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। কুষ্টিয়া – রাজবাড়ী মহাসড়কের খোকসা থানাধীন শিয়ালডাঙ্গী সীমান্তে চেকপোস্ট, কুষ্টিয়া – চুয়াডাঙ্গা মহাসড়কের পাটিকাবাড়ী তাহাজ মোড়ে চেকপোস্ট, কুষ্টিয়া -ঝিনাইদহ মহাসড়কের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার সামনে চেকপোস্ট, মিরপুর থানাধীন হালসা ক্যাম্পের অধীনে নান্দিয়া- পাইকপাড়া ফিডার রোডে চেকপোস্ট, মিরপুর থানাধীন মালিহাদ ক্যাম্পের অধীনে কুটিয়াডাঙ্গা হাট বোয়ালিয়া সড়কে চেকপোস্ট, ভেড়ামারা থানাধীন লালনশাহ সেতুর টোল প্লাজায় চেকপোস্ট, কুষ্টিয়া – মেহেরপুর সড়কের খলিশাকুন্ডি ব্রীজ চেকপোস্ট, দৌলতপুর সীমান্তে ধর্মদহ ব্রীজে চেকপোস্টে প্রতিদিন দুই শিফটে প্রতিটি চেকপোস্টে একজন এসআই,একজন এএসআই ও তিনজন কনস্টেবল সহ মোট পাঁচজন পুলিশ সদস্য চেকপোস্টে দায়িত্ব পালন করছে। একই সাথে কুষ্টিয়া জেলার সকল পৌর এলাকাগুলোর বিভিন্ন চেকপোস্টে পুলিশের কঠোর নজরদারী থাকায় আভ্যন্তরীণ সড়কে কোন প্রকার যানবাহন চলাচল করেনি। পুলিশ সদস্যদের কার্যক্রম পরিদর্শনের জন্য প্রায় প্রতিটি চেকপোস্টে পরিদর্শন করেছেন জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোঃ খাইরুল আলম।
কুষ্টিয়া জেলার সাত থানার সীমান্তবর্তী ও সকল পৌর এলাকার চেকপোস্ট পরিদর্শন কালে জেলা পুলিশ সুপার মোঃ খাইরুল আলম বলেন, মাস্ক পরার অভ্যেস, করোনা মুক্ত বাংলাদেশ। মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রকোপ থেকে রক্ষায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিজে মাস্ক পরুন, অন্যকে মাস্ক ব্যবহারে উদ্ধুদ্ধ করুন। অকারনে বাইরে ঘোরাফিরা না করে সবাই নিজ নিজ ঘরে অবস্থান করে মহামারি করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধ চালিয়ে যান।
এ সময় তিনি আরও বলেন, লকডাউন চলাকালীন সময়ে জরুরি পরিষেবা, চিকিৎসাসেবা, কৃষিপণ্য, খাদ্য সরবরাহ ও সংগ্রহ, বিদ্যুৎ, গ্যাস, ফায়ার সার্ভিস, টেলিফোন, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, ঔষধ শিল্প সংশ্লিষ্ট যানবাহন, কর্মী ইত্যাদি এবং সরকার কর্তৃক ঘোষিত অন্যান্য জরুরি পরিষেবা এর আওতা বহির্ভূত থাকবে।
কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ সুপার(এসপি) মোঃ খাইরুল আলম বলেন, করোনা কালে সারা বিশ্বের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি যখন টালমাটাল ঠিক সেই সময়েও আমাদের দেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে দেশ সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা অনেক ভাল এবং অর্থনৈতিক সূচকেও আমরা এগিয়ে রয়েছি। সুতরাং প্রধানমন্ত্রীর হাতকে আরো শক্তিশালী করতে হলে তার নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। তাই আসুন আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার দেশ গড়ার লক্ষ্যে পুলিশ জনতা এক হয়ে কাজ করে আমাদের দেশকে সামনে এগিয়ে নিতে যে যার অবস্থান থেকে কাজ করে যাই।
কুষ্টিয়ায় লকডাউনের ১৫তম দিনেও সরেজমিনে উপস্থিত থেকে কুষ্টিয়ায় লকডাউন প্রতিপালনে জনগণকে বাধ্য করতে মুক্ষ্য ভুমিকা পালন করেন মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ), মোঃ ফরহাদ হোসেন খাঁন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (জেলা বিশেষ শাখা), মোঃ রাজিবুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর), মোঃ আতিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সদর সার্কেল, ওসি কুষ্টিয়া মডেল থানা, ওসি কুমারখালী, ওসি খোকসা, ওসি ভেড়ামারা,ওসি দৌলতপুর, ওসি ইবি, ওসি মিরপুর, ওসি ডিবি, টি আই (এডমিন) কুষ্টিয়াসহ জেলা পুলিশ কুষ্টিয়ার সকল র্যাংকের অফিসার ও ফোর্স।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *