কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে শিশু সহ নতুন ১১ ডেঙ্গু রোগী ভর্তি

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : গত ২৪ ঘণ্টায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে শিশুসহ আরও ১১ জন নতুন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে গতকাল দুপুরে দুইজন আর বিকেল থেকে গতকাল শুক্রবার সকাল আটটা পর্যন্ত নয়জন রোগী ভর্তি হন। এরই মধ্যে ১২ জন রোগী চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। এক শিশুসহ দুইজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এখন এই হাসপাতালে নয় শিশুসহ মোট ২৮ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ পর্যন্ত মোট ৮৮ জন ডেঙ্গু রোগী এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। অর্ধেকের বেশি রোগী ঢাকা থেকে আক্রান্ত হয়ে এসেছেন।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) তাপস কুমার সরকার বলেন, গত পরশু দিন বুধবার ১১ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছিল। মঙ্গলবার ভর্তি হয়েছিল ১৫ জন। প্রায় প্রতিদিনই ১০-১২ জন নতুন রোগী ভর্তি হচ্ছে। রোগীদের সামাল দিতে কিছুটা হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও সেবিকারা। হাসপাতালের পেইং ওয়ার্ডকে ডেঙ্গু ওয়ার্ড করা হয়েছে। ডেঙ্গু আক্রান্তদের চিকিৎসা প্রায় ফ্রি করা হচ্ছে। তবে এখানে ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসার ইকুপমেন্ট সংকট রয়েছে। দ্রুতই ঢাকা থেকে ইকুপমেন্ট আনা হবে। প্রসঙ্গত, কুষ্টিয়া ছাড়াও এর আশপাশ জেলার ডেঙ্গু আক্রান্তরা এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। গেল সাত জুলাই প্রথম একজন রোগীর ডেঙ্গু শনাক্ত হয়। কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন রওশন আরা জানিয়েছেন, কুষ্টিয়ায় এডিস মশার অস্তিত্ব রয়েছে এবং স্থানীয়ভাবে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে। আজ শুক্রবার সকালে তিনি এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন। রওশন আরা বলেন, জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তিদের ৯৫ ভাগই ঢাকা থেকে আসা।

বাকি ৫ ভাগ কুষ্টিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হয়েছেন চিকিৎসকেরা। বিশেষ করে ডেঙ্গু আক্রান্ত কয়েকজন শিশু রয়েছে, যাদের বয়স ৫ থেকে ৭ মাস। তারা কখনোই ঢাকাতে যায়নি। এতে চিকিৎসকেরা নিশ্চিত হন কুষ্টিয়ায় এডিস মশা আছে। সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, জেলায় এ পর্যন্ত ৯৭ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছে ৯ জন। বর্তমানে ৩০ জন কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি। আজ শুক্রবার সকাল ১০ টায় সরেজমিন যাওয়া হয় পৌরসভার মজমপুর এলাকায়। ওই এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক এ এস এম মুসা কবির বলেন, পাঁচ দিন আগে তাঁর আট বছরের ছেলে মঈন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিল। মঈন গত দুই মাসের মধ্যে ঢাকায় যায়নি। গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০ টায় বাসার সামনে তিনি এডিস মশার অস্তিত্ব পেয়েছেন। কুষ্টিয়া পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, মশা নিধনে পৌরসভা থেকে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ২১টি ওয়ার্ডে জন্য ২১টি স্প্রে যন্ত্র কেনা হয়েছে। ওষুধও কেনা হয়েছে। প্রতিদিনই ওষুধ ছিটানো হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *