আজ মহানবমী

অনলাইন ডেস্ক :

 

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে টানা দ্বিতীয়বারের মতো দুর্গাপূজার মহাঅষ্টমীতে রাজধানীর কোনো মণ্ডপে কুমারী পূজা হয়নি। তবে গতকাল সকাল থেকেই সকল মন্দিরে পূণ্যার্থীদের উপস্থিতিতে উৎসবের আমেজ লক্ষ্য করা যায়। সন্ধ্যায় মণ্ডপে মণ্ডপে ভক্ত-দর্শনার্থীদের ঢল নামে। আজ বৃহস্পতিবার মহানবমী পূজায় ভীড় আরো বাড়বে বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন। গতকাল বুধবার ছিল দুর্গাপূজার তৃতীয় দিন মহাঅষ্টমী। অষ্টমীর দিনে সকালে ষোড়শ উপাচারে অনুষ্ঠিত হয় দেবীর পূজা। ১০৮টি পদ্ম এবং প্রদীপ দিয়ে দেবী দুর্গার আরাধনা করা হয়। করোনা সতর্কতা মেনে পুস্পাঞ্জলি গ্রহণ এবং সন্ধিপূজা হয়। ভক্তদের অনেকেই অঞ্জলি ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে নিয়েছেন।

 

রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে সকাল ৮টা ৫৯ মিনিটে দেবীর মহাঅষ্টমী কল্পারম্ভ ও বিহিত পূজা শুরু হয়। অষ্টমীর রাত ১১টা ৫৪ মিনিটে সন্ধি পূজা শুরু ও রাত ১২টা ৪২ মিনিটে সমাপনী হয়। অষ্টমী ও নবমী তিথির সন্ধিক্ষণে এই সন্ধিপূজা অনুষ্ঠিত হয়। দুপুরে মহাপ্রসাদ বিতরণ করা হয়। ঢাকেশ্বরী মন্দিরের পুরোহিত ধর্মদাশ চট্টোপাধ্যায় বলেন, অষ্টমী তিথিতে মহামায়ার ষষ্টক অর্থাৎ ৬ বছরের কুমারী রূপ উমার পূজা করা হয়। পৃথিবীতে যেন নারীর সম্মান প্রতিষ্ঠিত হয় এ বার্তাটি দেওয়া হয়ে থাকে এ পূজার মাধ্যমে। তবে এবারও কুমারী পূজার আয়োজন হয়নি।

 

মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কিশোর রঞ্জন মণ্ডল বলেন, গত বছরের মতো এবারও রামকৃষ্ণ মিশনে কুমারী পূজার আয়োজন করা হয়নি। মহামারির কারণে মহাঅষ্টমীর দিন এবারও হচ্ছে না কুমারী পূজা। করোনা সংক্রমণ এড়াতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে ঢাকার বাইরে হবিগঞ্জে ও যশোর রামকৃষ্ণ মঠসহ কোথাও কোথাও এবার কুমারী পূজা হয়েছে বলে তিনি জানান।

 

রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে দেখা গেছে, সকাল থেকেই দেবী দর্শনে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। সকাল সাড়ে ৯টায় অষ্টমী পূজার পুষ্পাঞ্জলি শুরু হলে ভীড় বাড়তে থাকে। ফুলে-ফলে ভরে যায় মন্দির চত্বর। বাহারি সজ্জায় সাজানো হয়েছে পুরো ঢাকেশ্বরী মন্দির প্রাঙ্গণ। চলমান করোনা পরিস্থিতির দিকেও রাখা হয়েছে বিশেষ নজর। পুরো মন্দিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে পুলিশ-আনসারসহ একাধিক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
রাজধানীর টিকাটুলীর রামকৃষ্ণ মিশনের পূজাও বেশ নজর কেড়েছে দেশবাসীর। ধরা হয় সব থেকে জাঁকজমকপূর্ণ কুমারী পূজা হয় সেখানে। কিন্তু এখানেও এবার হয়নি কুমারী পূজা। তবে সেখানে নানা অনুষ্ঠানের কারণে সারাদিনই ভক্ত-দর্শনার্থীদের সমাগম ছিলো। সন্ধ্যা আরতিতে ভীড় ছিলো বেশী।

 

এদিকে আজ বৃহস্পতিবার মহানবমী। অনেকের বিশ্বাস মহানবমীর দিন হচ্ছে দেবী দুর্গাকে প্রাণ ভরে দেখে নেওয়ার ক্ষণ। এই দিন অগ্নিকে প্রতীক করে সব দেবদেবীকে আহুতি দেওয়া হয়। অগ্নি সব দেবতার যজ্ঞভাগ বহন করে যথাস্থানে পৌঁছে দিয়ে থাকেন। এই দিনই দুর্গাপুজার অন্তিম দিন। পরের দিন কেবল বিজয়া ও বিসর্জনের পর্ব। নবমী নিশিথে উৎসবের রাত শেষ হয়।

 

উল্লেখ্য, গত ১১ অক্টোবর শুরু হওয়া হিন্দু ধর্মবলম্বীদের এই উৎসব আগামীকাল শুক্রবার প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হবে। এবারো বিসর্জন শোভাযাত্রা থাকছে না বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *